ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

হতে চান নিকাহ্ রেজিস্ট্রার

নারী দিবসে অন্যরকম চাওয়া-একাই লড়ে যাচ্ছেন আয়েশা

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ৯ মার্চ ২০২১

নারী দিবসে অন্যরকম চাওয়া-একাই লড়ে যাচ্ছেন আয়েশা

সাজেদুর রহমান শিলু ॥ আয়েশা সিদ্দিকা। অদম্য নারী। লড়ে যাচ্ছেন নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায়। বলা চলে একাই লড়ছেন। তার চাওয়াটা একটু ভিন্ন ধরনের। হতে চান নারী নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী)। হাইকোর্টের রায় তার বিরুদ্ধে গেছে। কিন্তু হাল ছাড়েননি। লড়ে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আয়েশার দৃঢ় বিশ্বাস তিনি বিজয়ী হবেন। কোন নারী নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) পদে আসীন হতে পারবেন না- হাইকোর্টের এমন রায় প্রকাশের পরও হাল ছাড়তে নারাজ তিনি। ওই পদে চাকরির জন্য তিনি ফের সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে রিট করেছেন। আগামী ৪ এপ্রিল শুনানি। আয়েশা সিদ্দিকার বিশ্বাস, তার পক্ষেই রায় দেবেন বিচারক। আয়েশা সিদ্দিকার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে উম্মে হাবিবা মায়ের লড়াইয়ে একাত্মতা প্রকাশ করে বলে, ‘বেগম রোকেয়ার মতো আমার মা’ও লড়াই করে নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) হওয়ার দাবি আদায় করে, নারীদের জন্য নিকাহ রেজিস্ট্রারের পদটি উন্মুক্ত করবেন।’ আয়েশা সিদ্দিকার বাড়ি দিনাজপুরের ফুলবাড়ি পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের কাটাবাড়ি এলাকায়। স্বামী সোলায়মান মণ্ডল। তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন। বাবার রেখে যাওয়া ‘সিদ্দিকীয় হোমিও হল’ চালান তিনি। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে (৮ মার্চ) কথা হয় আয়েশা সিদ্দিকাসহ তার পরিবারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে দারুস সুন্নাহ সিদ্দিকীয় ফাজিল (ডিগ্রী) কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা থেকে দাখিল, ১৯৯৮ সালে আলিম এবং ২০০০ সালে ফাযিল পাস করেন। দাখিল পাস করার পর বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে বাবা মারা যান। সেই থেকে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে সিদ্দিকীয় হোমিও হল চিকিৎসালয়ে সময় দেন। আয়েশা বলেন, ২০০৯ সালে ফুলবাড়ি পৌরসভা দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত হলে প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) প্রয়োজন হয়। এর আগে পৌরসভাটি তৃতীয় শ্রেণীর থাকায় একজন নিকাহ রেজিস্ট্রার দিয়েই কাজ চলছিল। সেই সময় নিয়ম পরিবর্তন হওয়ায় ৪, ৫ ও ৬ এবং ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড নিকাহ রেজিস্ট্রার লাইসেন্স দিতে বিধি-৬ (২) ধারা মোতাবেক দরখাস্ত আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ পাঁচ সদস্যের একটি সুপারিশ কমিটি করা হয়। কমিটিতে ছিলেন সাবেক গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এমপি, তৎকালীন ফুলবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার এবং পৌর মেয়র। সেই বিজ্ঞপ্তি দেখে ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের জন্য আয়েশা সিদ্দিকা, আলেয়া খাতুন এবং নাজমুন নাহার নামে তিনজন নারী নিকাহ রেজিস্ট্রার হওয়ার আবেদন করেন। সুপারিশ কমিটি তাদের মধ্যে আয়েশা সিদ্দিকাকে প্রথম করে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠায়। একই সময় ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের জন্য সাকোয়াত হোসেন নামে একজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকেও ওই সুপারিশ কমিটি অনুমোদন দেয়।
×