ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্ন বাস্তবায়নে সঙ্গী ॥ উন্নয়নে চীন জাপানের অগ্রণী ভূমিকা

প্রকাশিত: ২১:৪৮, ৬ মার্চ ২০২১

স্বপ্ন বাস্তবায়নে সঙ্গী ॥ উন্নয়নে চীন জাপানের অগ্রণী ভূমিকা

রহিম শেখ ॥ স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণে ঠিকাদারির কাজ করছে চীনা প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে সেতুর ওপর ট্রেন চলাচলের আলাদা প্রকল্পে সরাসরি অর্থলগ্নি করছে চীন। এছাড়া কর্ণফুলী টানেল, ঘুমধুম রেল প্রকল্পসহ দেশে চলমান বেশিরভাগ মেগা প্রকল্পে আছে দেশটির অংশগ্রহণ। এছাড়া প্রস্তাবিত দেশের দীর্ঘতম ভোলা সেতু ও তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পে অর্থায়নে আসছে চীন। দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতেও চীনা বিনিয়োগ বাড়ছে। চীনের মতোই আরেক বন্ধু দেশ জাপানেরও বিপুল বিনিয়োগ আসছে বাংলাদেশে। সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্বের (প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ-পিপিপি) ভিত্তিতে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৫৪ হাজার ১৭৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা (৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করবে জাপানি প্রতিষ্ঠান। কাজিমা, সোজিৎজ ও মারুবেণীর মতো প্রতিষ্ঠান এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করতে ঢাকায় আসবে আগামী মাসে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদেশী বিনিয়োগ ও রফতনি বাণিজ্যে চীন এবং জাপান নতুন সম্ভাবনার নাম। দেশের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি আগামী দিনের নতুন স্বপ্নেও সারথি হবে দেশ দুটি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রস্তাবের আলোকে বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে চীন। এর মধ্যে বরিশাল ও ভোলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের একটি সেতু নির্মাণ অন্যতম। সেতুটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। চীনের নেতৃত্বাধীন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) সেতুটি নির্মাণে ঋণ সহায়তা হিসেবে সিংহভাগ দিতে পারে। গত মাসে এই বিষয়ে এআইআইবির সঙ্গে বৈঠকও করেছে ইআরডি। পরিকল্পনা কমিশন বলছে, এটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় এবং দীর্ঘ সেতু। এটি পদ্মা সেতু সংযোগের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলকে সরাসরি রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এর ফলে রাজধানীর সঙ্গে ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ২২টি জেলা সরাসরি সড়ক সংযোগের আওতায় আসবে। সেতুটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করেছে চারটি বিদেশী ফার্মের যৌথ দল। তারা বলেছে, এ সেতু নির্মাণে প্রযুক্তিগত কোন সমস্যা নেই। এই সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে বড় ধরনের অবদান রাখবে। দ্রুতই সেতু নির্মাণকাজ শুরুর সুপারিশ করেছে তারা। ইআরডির এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, করোনার সময় দেশের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প থমকে যাওয়ার পেছনে চীনা পরামর্শকের অনুপস্থিতি একটি অন্যতম কারণ ছিল। তবে এখন সে সমস্যা কেটে গেছে, উন্নয়নে চীনা প্রতিশ্রুত ঋণের ছাড় আরও বাড়বে। এ ছাড়া পাইপলাইনে থাকা বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়েও আলোচনা চলছে। অন্যদিকে তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে নদীটির বিস্তৃত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুজ্জীবনে একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। ‘তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ড রেস্টোরেশন’ নামে এই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পটি চীনের ঋণ সহায়তায় বাস্তবায়ন করা হবে। এরই মধ্যে চীন তিস্তা নদীতে কী ধরনের প্রকল্প হতে পারে সে বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ধারণা নেয়ার জন্য জরিপ বা সম্ভাব্যতা যাচাই করছে বলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। ইআরডি সূত্র আরও জানায়, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেইচিং সফরের সময় রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি আরও কয়েকটি বিষয়ে চীনের সহায়তা চেয়েছিলেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০, ক্লাইমেট এ্যাডাপটেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রজেক্ট। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশ কখনও উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধে দেরি করেনি। তারা জানে আমরা কতটা সক্ষম। এ জন্য বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) পাশাপাশি নতুন প্রতিষ্ঠিত এআইআইবিও বড় অঙ্কের ঋণ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, চীন প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সক্ষমতায় অনেক এগিয়ে গেছে। চলমান উন্নয়নে ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে চীন পাশে থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়নে অনেক এগিয়েছে তবে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে এক্ষেত্রে আরও কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, করোনার মধ্যে বিদেশী কোম্পানিগুলো যেভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে, আমরা অবশ্যই তাদের সাধুবাদ জানাই। মহামারীর মধ্যে বিনিয়োগ করতে আসার মানে হলো, তাদের আমরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে পারছি। চীনে বিনিয়োগ সামিট ও রোড শো করার পরিকল্পনা বিডার ॥ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা চীনা বিনিয়োগ পেতে শুরু করেছি। কিন্তু করোনার কারণে সেই বিনিয়োগ প্রাপ্তিতে গতি কমেছে। এখন আমরা একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আলোকে এগিয়ে যেতে চাই। করোনার পর যাতায়াত স্বাভাবিক হলে আমরা চীনে ইনভেস্টমেন্ট সামিট ও রোড শো করব। এ ছাড়া দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যৌথভাবে বিনিয়োগ করতে পারে এমন সুযোগও তৈরি করা হবে। তিনি বলেন, চীনের বিনিয়োগ প্রাপ্তি সম্ভাব্য সব কিছু করা হবে। আমরা সফলও হব বলে আশাবাদী। তাদের জন্য আলাদা ইকোনমিক জোনও প্রতিষ্ঠা করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, বর্তমানে চীনা অর্থায়নে ১২টি মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পের অধীনে প্রতিশ্রুতির পরিমাণ প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার। এ ছাড়া টেকনিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স বা টিএ প্রকল্প রয়েছে। প্রতি বছর উন্নয়ন প্রকল্পে চীন থেকে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ ঋণ সহায়তা হিসেবে পায় বাংলাদেশ। চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত পণ্য সুবিধায় রফতনি আয়ের বড় সুযোগ ॥ বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তথ্যানুসারে, ২০১৯ সালে দেশে মোট বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে ৩৮৮ কোটি মার্কিন ডলার। এর প্রায় অর্ধেকই এসেছে চীন থেকে। ওই বছর চীনের বিনিয়োগ ছিল প্রায় ১১৬ কোটি ডলার। অন্যদিকে ক্রমেই রফতানি বাণিজ্য বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৯ কোটি ডলার সমপরিমাণ রফতানি হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৮১ কোটি ডলারে। পরের বছর করোনার কারণে রফতানি কিছুটা কমেছে। তারপরও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬০ কোটি ডলারের রফতানি আয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি চীনের বাজারে ৫ হাজার পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে চীন। এটি হতে পারে আগামী রফতানি আয়ের বড় সুযোগ। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যুগ্ম সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, সরকারী-বেসরকারী বিনিয়োগে একক দেশ হিসেবে চীন এখন সবার শীর্ষে। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নে বেশিরভাগ মেগা প্রকল্পে চীন কোন না কোনভাবে অংশীদার। এসব প্রকল্পে হয়তো সরাসরি অর্থলগ্নি করেছে, নয়ত কন্ট্রাক্টর বা সাব-কন্ট্রাক্টর অথবা পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে। এ ছাড়া দেশে আসন্ন সব বড় প্রকল্পেই চীনের অংশগ্রহণ বাড়বে। বেশ কয়েকটিতে অর্থায়নের পাশাপাশি চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন প্রকল্পের টেন্ডারেও অংশ নেবে। তিনি বলেন, সরকারী ছাড়াও বেসরকারী খাতে তাদের বিনিয়োগ বেশ আশাব্যঞ্জক। ২০১৯ সালে দেশে যে পরিমাণ বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে তার প্রায় অর্ধেকই চীনের। এ ছাড়া দুই দেশের বাণিজ্যও বাড়ছে। ৫ হাজার পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের ফলে বহু চীনা প্রতিষ্ঠান এদেশে কারখানা করে চীনে রফতানি করতে চায়। কারণ বাংলাদেশের শ্রমবাজার সস্তা ও ব্যবসা করা সহজ। অবকাঠামো প্রকল্পে জাপানি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করবে ৫৪ হাজার কোটি টাকা ॥ সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্বের (প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ-পিপিপি) ভিত্তিতে বাংলাদেশে অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ৫৪ হাজার ১৭৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা (৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করবে জাপানি প্রতিষ্ঠান। কাজিমা, সোজিৎজ ও মারুবেণীর মতো প্রতিষ্ঠান এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করতে ঢাকায় আসবে আগামী মাসে। গত বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ বাংলাদেশ-জাপান যৌথ পিপিপি প্ল্যাটফর্ম বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। বৈঠক শেষে পিপিপি কর্তৃপক্ষের সচিব এবং প্রধান নির্বাহী সুলতানা আফরোজ সাংবাদিকদের বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণেও সহায়তা দেয়ার বিষয়ে নীতিগত সম্মতি জানিয়েছে জাপান। এতে দেশটির মিতসুবিশি কর্পোরেশন এ প্রকল্পটি উন্নয়ন করবে। এছাড়া সাভারের নবীনগর থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত সড়কটি এক্সপ্রেসওয়ে আকারে উন্নীত করতে আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা দেবে জাপান সরকার। সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্ব (পিপিপি) পদ্ধতিতে চার লেনের এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করা হবে। জানা গেছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সরকার ১৮টি প্রকল্পের তালিকা পাঠায় জাপান সরকারের কাছে। শিনজো আবের প্রশাসনের মধ্যে থেকে ছয়টি প্রকল্প বেছে নেয়। তাদের মতে সেগুলোই জাপানের বেসরকারী বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত। জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় (এমএলআইটি) প্রতিটি প্রকল্পের জন্য বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কনসোর্টিয়াম তৈরি করে দিয়েছে, যার নেতৃত্বে থাকছে একটি বড় প্রতিষ্ঠান। কনসোর্টিয়ামগুলো সাব ওয়ার্কিং গ্রুপ (এসডাব্লিউজি) নামে পরিচিত। প্রকল্পের কাজ শুরু করতে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকায় তাদের অফিস খুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো কোন টেন্ডার পদ্ধতিতে এসব প্রকল্পের কাজ করছে না। তারা বিনিয়োগ করছে সরকার টু সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে। আগামী মাসের বৈঠকে ঢাকা আরও চারটি প্রকল্পে বিনিয়োগ প্রস্তাব দেবে। যার মধ্যে আছে ভোলা-বরিশাল সেতু এবং পায়রা বন্দরে ডিপ ওয়াটার কনটেইনার টার্মিনাল তৈরি। দ্বিতীয় মেট্রোরেল ॥ এমআরটি লাইন-২ এর প্রস্তাবিত রুটটি হচ্ছে গাবতলী-মোহাম্মদপুর-জিগাতলা-সাইন্স ল্যাব-নিউ মার্কেট-আজিমপুর-পলাশী-শহীদ মিনার-পুলিশ সদর দপ্তর-মতিঝিল-কমলাপুর-ডেমরা-চিটাগাং রোড। যার দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৪০ কিলোমিটার। মন্ত্রিসভার অর্থনীতিবিষয়ক কমিটি ইতিমধ্যে প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছে। এই মেট্রোরেলটি ২০৩০ সালের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের প্রধান প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে মারুবেনী কর্পোরেশন। অংশীদারি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্স গ্লোবাল, কাটাহিরা এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্টারন্যাশনাল, সোজিৎজ এবং সুমিটোমো মিতসুই কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন। আউটার রিং রোড ॥ আউটার রিং রোডের রুট হবে হেমায়েতপুর-কালাকান্দি-তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু-মদনপুর-ভুলতা-গাজীপুর-বাইপাইল-হেমায়েতপুর। এই প্রকল্পের সংশোধিত প্রস্তাবিত দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩০ কিলোমিটার। যার মধ্যে ৪৬ কিলোমিটার নতুন এবং ৮৪ কিলোমিটার বিদ্যমান রাস্তার উন্নয়ন কাজ। এ প্রকল্পের প্রধান বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মারুবেণী কর্পোরেশন। অন্যান্য অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে আইএইচআই কর্পোরেশন, ওবায়েশি কর্পোরেশন, শিমিজু কর্পোরেশন এবং তাইসেই কর্পোরেশন। মাল্টিমোডাল হাবস ॥ কমলাপুর রেলস্টেশন এবং ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশনে দুটি মাল্টিমোডাল হাব তৈরি করা হবে। এই স্টেশনগুলোতে যাত্রীদের চলাচল সহজ করার জন্য সড়ক ও রেল যোগাযোগের পাশাপাশি ফ্লাইওভার থাকবে। কমলাপুর হাব প্রকল্পের প্রধান প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে কাজিমা এবং বিমানবন্দর রেলওয়ে হাব প্রকল্পের নেতৃত্ব দেবে সোজিৎজ। ধীরাশ্রমের কাছে কনটেনার ডিপো ॥ ঢাকার পূর্ব বাইপাস সড়ক সংলগ্ন ধীরাশ্রম রেলস্টেশনের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ অভ্যন্তরীণ কনটেনার ডিপো তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এটা তৈরি হলে কমলাপুর অভ্যন্তরীণ কনটেনার ডিপোর ওপর চাপ কমবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা পিপিপি অফিস জানিয়েছে, কমলাপুর ডিপোর যে ধারণক্ষমতা তা বাংলাদেশ রেলওয়ের বাড়তে থাকা কনটেনার হ্যান্ডলিংয়ের চাপ অদূর ভবিষ্যতে সামলাতে পারবে না। চারপাশে অনেক স্থাপনা থাকায় কমলাপুর ডিপোর সম্প্রসারণও সম্ভব না। ধারণক্ষমতা ছাড়াও দিনের বেলায় বাণিজ্যিক যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাও কঠিন কাজ বলে জানায় পিপিপি অফিস। প্রস্তাবিত অভ্যন্তরীণ কন্টেনার ডিপোর পরিচালনা ক্ষমতা হবে বিশ ফুট কন্টেনারের তিন লাখ ৫৪ হাজার ইউনিট। এর প্রধান বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান হিসেবে আছে সোজিৎজ।
×