ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অপরাধ নির্মূলের বুলি দিয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোটভিক্ষা

প্রকাশিত: ২৩:২০, ২১ জানুয়ারি ২০২১

অপরাধ নির্মূলের বুলি দিয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোটভিক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ ও অপরাধ নির্মূলের বুলি দিয়ে অপরাধী সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলররাই পুনরায় ক্ষমতায় আসার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। ভোট ভিক্ষার নামে আগামী ২৭ জানুয়ারির চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অভিযুক্ত এসব প্রার্থী। এ মুহূর্তে এসব কাউন্সিলর ভোটারদের ভুলিয়ে রাখতে চায় অপরাধের কথা। অথচ উন্নয়নের ছিটেফোঁটা না দেখিয়ে কিভাবে সম্ভব বুলি আওড়ানো সাবেক কাউন্সিলরদের ভোট ভিক্ষায় সাড়া পাওয়া। অভিযোগ রয়েছে, প্রতারণা করে বিএনপি জামায়াতের আশীর্বাদপুষ্ট সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুস সাত্তার সেলিম সরকারের অর্থ লুটে নিয়ে পকেট পুরেছে। আত্মসাৎ করেছে জনগণের অধিকারসহ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বাজেটের অর্থ। এমনকি ৯নং ওয়ার্ডের শহীদ স্মরণী আবাসিক এলাকার ২নং সড়কটি ইট সলিং থেকে সিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে সড়ক উন্নয়নের ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ষষ্ঠ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে লাটিম মার্কায় এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুস সাত্তার সেলিম। ওয়ান ইলেভেনের সময় তার বিরুদ্ধে নানা অপরাধে ৯টি মামলা হয়েছিল নগরীর খুলশী থানায়। অপরদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট ভিক্ষা চাওয়া বর্তমান নির্বাচনে মোঃ জহুরুল আলম জসিম একচেটিয়াভাবে তার আবাসস্থল এলাকা ও বিএনপি অধ্যুষিত এলাকায় উন্নয়ন দেখিয়েছে। দফায় দফায় উন্নয়নের নামে রাস্তা তৈরি করে পাহাড় কেটে দ্রুত অপসারণের জন্য ফিরোজশাহ ঝিল এলাকাগুলোসহ টাঙ্কির পাহাড় এলাকায় সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছেন। এছাড়াও, ওই এলাকার সড়কবাতিগুলো পর্যন্ত মেরামত বন্ধ রেখে অপরাধীদের উস্কে দিয়েছে অন্ধকারে অপরাধ ঘটাতে। সম্প্রতি আকবর শাহ থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী নুরু ও তার ১২ সহযোগী গ্রেফতারের পর আবারও উঠে এসেছে সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের নাম। পাহাড়ের ধাপে ধাপে ও পাদদেশে এসব সন্ত্রাসীরা ওয়ার্ড কাউন্সিলের দোহাই দিয়ে কয়েক সন্ত্রাসী দলও গড়ে তুলেছিল। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৫ম নির্বাচনে সাবেক মেয়র মোঃ মনজুর আলমের পক্ষ থেকে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় চট্টগ্রাম উন্নয়নের আন্দোলন গড়ার নামে ভোট চাওয়া হয়। কিন্তু ভোটাররা পুনরায় উন্নয়নের এ বুলিতে আকৃষ্ট হয়নি। এর অন্যতম কারণ হলো কর্পোরেশন এলাকায় উন্নয়নের জোয়ারের নামে জামায়াত-বিএনপি অধ্যুষিত এলাকাকেই উন্নয়ন করা হয়েছিল। উন্নয়নের এ গতিধারার ইশতেহারে দেখা গেছে, ২০১০-২১ সাল পর্যন্ত মোট ৭০ প্রকল্পে ১৫ কোটি ৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা উন্নয়নের পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছিল। পুরনো রাস্তা ইট সলিয়ের জায়গা কাপের্টিং আবার কোথাও সিসিঢালাই দেয়ার মধ্য দিয়ে স্বল্প সময়ের উন্নয়ন করা হয়েছিল। ৯নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলরের হিসাব অনুযায়ী এ ৭০টি উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল অর্থ আত্মসাতের নামে বিভিন্ন কার্যাদেশ। এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ফিরোজশাহ ১, ২, ৩, ৪, ৫নং লেন এর সঙ্গে একই কার্যাদেশে ফলেজ লেক এলাকার আবদুল হামিদ সড়ক বাইলেনটিকে কার্পেটিং সড়কে রূপান্তর করা হয়েছে ৮৭ লাখ টাকা। মূলত এমন উন্নয়নে সড়কের নালাটি পর্যন্ত ঠিকভাবে সম্পন্ন করা হয়নি। বাকি উন্নয়ন প্রশ্নবিদ্ধ।
×