ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

রায়হানের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান মা

প্রকাশিত: ২১:৫০, ২ নভেম্বর ২০২০

রায়হানের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান মা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জিকে শামীমের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে জামিন করানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলব আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রীমকোর্টের ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপা। অন্যদিকে সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম। এদিকে হাইকোর্টের আদেশের বিষয় গোপন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত থেকে ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদের জামিন বাতিলের আবেদন করা হয়েছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বালিশকাণ্ডে আসিফ হোসেনের জামিন ৮ নবেম্বর রবিবার পর্যন্ত স্থগিত করেছে আপীল বিভাগ। রবিবার আপীল বিভাগ ও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছে। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপা রবিবার হাইকোর্টে এই রিট করেন। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন আমি কপি পেয়েছি। আইনী মোকাবেলার জন্য আমি প্রস্তুত। বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে। আকবরের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্ন ॥ সিলেট অফিস জানায়, রায়হান হত্যা মামলায় কনস্টেবল হারুনুর রশিদকে রিমান্ড শেষে রবিবার আদালতে হাজির করা হলে তিনি কোন জবানবন্দী দেননি। রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দ্বিতীয় দফায় তিনদিনের রিমান্ডসহ মোট আটদিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হলে সিলেট অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াদুর রহমান তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আদালতে স্বীকারোক্তি না দেয়ায় তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। রায়হান হত্যার ঘটনায় আটক দুজন পুলিশ সদস্যই ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেননি। গত ২৩ অক্টোবর রাতে বরখাস্ত কনস্টেবল হারুনুর রশিদকে পুলিশ লাইন্স থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পরে ২৪ অক্টোবর সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নীলা প্রথম দফায় তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর বৃহস্পতিবার ২৯ অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় আরও তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিলেট অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াদুর রহমান। দুদফায় আটদিনের রিমান্ড শেষে কনস্টেবল হারুনকে আদালতে হাজির করা হলে আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ নিহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন এএসআই আশেক এলাহী ও কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস। বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে যুবক রায়হান নিহত হওয়ার ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত ফাঁড়ির বহিষ্কৃত ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়ার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি কদিন যাবত প্রচার হয়ে আসছিল। ঘটনার পরপরই আকবর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানতে পেরেছে। এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, আকবরকে সীমান্তে পালাতে সহায়তাকারী হেলাল নামে এক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তাকে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে আকবর ও নোমান কোন্ জায়গায় রয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রায়হান হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবরের সন্ধানে দেশব্যাপী যখন অভিযান চলছে তখনই আকবরের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ঘটনার পরদিন ১৩ অক্টোবর বিকেলে আকবর এসএমপির তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়ে বক্তব্য দেন।
×