ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভাল কাজ করেছি বলেই আবারও জয়ী হয়েছি

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ৫ অক্টোবর ২০২০

ভাল কাজ করেছি বলেই আবারও জয়ী হয়েছি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা চারবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ভোটারদের ধন্যবাদ জানালেন কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। প্রতিশ্রুতি দিলেন সবাইকে নিয়ে ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করার। শনিবার বাফুফের নির্বাচনে ১৩৯ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৩৫ জন ভোট দেন। ৯৪ ভোট পেয়ে পুনরায় সভাপতি পদে নির্বাচিত হন সাবেক তারকা ফুটবলার সালাউদ্দিন। সালাউদ্দিনের ‘সম্মিলিত পরিষদ’ থেকে সবমিলিয়ে পাস করেছেন ১৪ জন। ‘সমন্বয় পরিষদ’ থেকে ছয়জন সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তাবিথ আউয়াল ও মহিউদ্দিন আহমেদ সমান ভোট পাওয়ায় সহ-সভাপতি পদের একটিতে পুনরায় নির্বাচন হবে। সালাউদ্দিন বলেন, আমাদের বিজয়টা ভোটারদের বিজয়। অনেকে অনেক কথা বলেছে নির্বাচনের আগে। যার উত্তরটা ভোটাররা দিয়েছেন। ভোটারদের আমার প্যানেলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। ১২ বছরে কোন লীগ খেলা মিস হয়নি। নিয়মিত আয়োজন করে আসছি বলেই খেলোয়াড়রা ও কাউন্সিলররা যারা ফুটবলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত তারাই আমাকে সাপোর্ট করেন। এটাই একমাত্র কারণ। বর্তমান ফুটবলাররা আমাকে উইস করতে আসছে। অতীতের খেলোয়াড়রা না। এ সময়ের খেলোয়াড়রা যখন আমাকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছে তখনই আমি বুঝতে পেরেছি দেশের ফুটবলের জন্য আমি ঠিক কাজ করেছি। এ জন্য তারা আমার কাছে আসছে। যারা নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তারা আমার প্যানেল থেকে আসুক বা অন্য প্যানেল থেকে। তাদের তো ভোটাররা জয়ী করেছেন। ফলে তাদের নিয়েই কাজ করতে চাই। আমি তো ফুটবলের উন্নতি করতে আসছি। এটা রাজনীতি না যে এক দলের সঙ্গে আরেক দলের মিল থাকবে না। শেখ মোহাম্মদ আসলামকে হারিয়ে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদে পুনরায় নির্বাচিত হওয়া আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি এই জয় উৎসর্গ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্দেশে। ডেলিগেটরা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। টিমে যারা জয়ী হয়েছেন সবার পক্ষ থেকে ডেলিগেটদের ধন্যবাদ। সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে। এই জয় আমরা বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করলাম। এমন পরিস্থিতি হয়েছিল চার বছর আগেও। যখন তৃতীয়বার নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই যে বিজয়ের পরের আনন্দ-বিড়ম্বনা, এমনটি নিজেও আশা করেছিলেন বাংলাদেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা সালাউদ্দিন। তাই তো তার মুখে ক্লান্তি ছাপিয়ে হাসি লেগে ছিল এত রাতে। চতুর্থবার বাংলাদেশের ফুটবলের ভবিষ্যত যার হাতে কাউন্সিলররা অর্পণ করেছেন সেই সালাউদ্দিন এই বিজয়কে ভোটারদের বিজয় হিসেবেই দেখছেন। ভোটের আগে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেলেও ভোটের লড়াইয়ে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অন্য দুই প্রার্থী খড়কুটোর মতো উড়ে গেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাদল রায় পেয়েছেন ৪০ ও শফিকুল ইসলাম মানিক পেয়েছেন এক ভোট। ভোট গণনা শেষ হওয়ার পরই কেন্দ্রের ভেতরে তাৎক্ষণিকভাবে সালাউদ্দিনসহ অন্যরা ফুলের শুভেচ্ছায় সিক্ত হন। এরপর জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে ৬৬ বছর বয়সী সাবেক তারকা বলেছেন, ‘মিডিয়াতে অনেক কথা শুনেছি। অনেকে বলেছে আমার ১০ ভোট নাই, ১২ ভোট নাই। যতো বছরই যাচ্ছে আমি ৮০ ভোটের বেশি পেয়ে পাস করেছি। ২০১৬ সালে ৮৪ ভোট পেয়েছি। আমার ভোট কিন্তু বাড়ছে। ফুটবল যারা করে তাদের কাছে তো আমি অনেক জনপ্রিয়। প্রমাণ পাওয়া গেল এবারের নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরও। প্রথমবার বাফুফের সহ-সভাপতি হয়ে আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিকের প্রতিক্রিয়া- এই বিজয়ে প্রমাণ হয়েছে কাজী সালাউদ্দিন ১২ বছর ধরে ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করেছেন। যার পুরস্কার ভোটাররা তাকে দিয়েছেন পুনরায় নির্বাচিত করে। এই বিজয়ে আমি ডেলিগেটদের ধন্যবাদ জানাই। তারা সুচিন্তিত মতামত ও বিচক্ষণতা দিয়ে প্রমাণ করেছেন সালাউদ্দিনের বিকল্প নেই। আমি আমাদের পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। টানা দ্বিতীয়বার বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়ে মাহফুজা আক্তার কিরণ খুব আনন্দিত। তিনি বলেন, আমি কাউন্সিলর ভাই-বোনদের ধন্যবাদ জানাই, যারা আমাদের বিজয়ী করেছেন। ফিফা-এএফসিতে আমি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। কিন্তু বাফুফেতে এমন জয়ে আনন্দ বেশি। এরজন্য অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সবাইকে বলতে চাই দেশের মহিলা ফুটবলের অগ্রগতিতে এই নতুন কমিটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে। পুরুষ-মহিলা দুই বিভাগেই আগামীতে আমরা আরও উন্নতি করতে চাই। এ লক্ষ্যে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। এক নজরে বিজয়ীরা সভাপতি : কাজী মোঃ সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি : আবদুস সালাম মুর্শেদী, সহ-সভাপতি : কাজী নাবিল আহমেদ, ইমরুল হাসান, আতাউর রহমান মানিক; সদস্য : জাকির হোসেন চৌধুরী, আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, বিজন বড়ুয়া, আরিফ হোসেন মুন, নুরুল ইসলাম নুরু, মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, টিপু সুলতান, সত্যজিৎ দাশ রুপু, ইলিয়াস হোসেন, ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ, মাহফুজা আক্তার কিরণ, হারুনুর রশিদ, আমের খান, সাইফুল ইসলাম ও মহিদুর রহমান মিরাজ।
×