ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

মূল আসামিসহ বাকিরা এখনও অধরা

তিন্নির মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার চারজনের রিমান্ডের আবেদন

প্রকাশিত: ২২:০০, ৫ অক্টোবর ২০২০

তিন্নির মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার চারজনের রিমান্ডের আবেদন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ, ৪ অক্টোবর ॥ শৈলকুপায় ইবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী উলফাত আরা তিন্নির (২৪) মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার চারজনকে আদালতে সোপর্দ করে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। এখনও রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। এছাড়া মূল আসামি তিন্নির বোন মিন্নির প্রাক্তন স্বামী জামিরুলকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শৈলকুপা থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্রী উলফাত আরা তিন্নির মৃত্যুর ঘটনায় শৈলকুপা থানায় ধর্ষণ ও আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিন্নির মা হালিমা বেগম শুক্রবার রাতে আটজনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ৫-৬ জনের নামে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় জামিরুলসহ তার চার ভাই ও চার মামাত ভাইসহ ১৫/১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শেখপাড়া গ্রামের পুনুরুদ্দিনের ছেলে জামিরুলের ভাই আমিরুল ও নজরুল এবং খলিল শেখের ছেলে জামিরুলের মামাত ভাই লাবিব ও তন্ময় নামে চারজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার আদালতে সোপর্দ করে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। এখনও মামলার শুনানি হয়নি। রিমান্ড মঞ্জুর হলে আসামিদের কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে। বাকিদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি। উল্লেখ্য, শৈলকুপার শেখপাড়া গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলীর তিন মেয়ে। উলফাত আরা তিন্নি ছোট, মিন্নি মেঝো ও ইসমত আরা বড়। তিন্নি ইবি থেকে সদ্য লেখাপড়া শেষ করেছেন। বড় বোনের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে। মিন্নির বিয়ে হয় পুনুরুদ্দীন ওরফে পুনের ছেলে শেখপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী জামিরুলের সঙ্গে। বনিবনা না হওয়ায় ৬/৭ বছর আগেই মিন্নির সঙ্গে জামিরুলের বিচ্ছেদ ঘটে। মিন্নিকে সে আবার ঘরে নিতে চায়। কিন্তু মিন্নি রাজি না হলে দীর্ঘদিন ধরেই লম্পট জামিরুল পরিবারটির ওপর নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। বাড়িটিতে কোন পুরুষ সদস্য না থাকায় পরিবারটি এক রকম জামিরুলের নির্যাতনে অসহায় হয়ে পড়ে। ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মামলার প্রধান আসামি জামিরুলসহ তার চার ভাই ও তার চার মামাত ভাইসহ অজ্ঞাত আরও ৬/৭ জন তিন্নিদের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। সে সময় বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে জামিরুল ও তার লোকজন পালিয়ে যায়। ঘটনার কিছুক্ষণ পর তিন্নির কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে দ্বিতীয় তলায় গিয়ে তার রুমের ভেতর থেকে দরজা লাগানো দেখে তা ভেঙ্গে তারা ভেতরে ঢুকে তিন্নিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, জামিরুলের অমানুষিক নির্যাতনের কারণে তিন্নি নিজের এবং পরিবারের মানসম্মান ও লোকলজ্জার ভয়ে নিজ ঘরে ফানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
×