ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিনিয়োগ, উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়বে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.২০ শতাংশ অর্জন নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসেই রফতানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ কোটি মার্কিন ডলার বেশি

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি ॥ শক্তিশালী হয়ে উঠছে সূচকগুলো

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ১০ আগস্ট ২০২০

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি ॥ শক্তিশালী হয়ে উঠছে সূচকগুলো

কাওসার রহমান ॥ করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস মিলছে। অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর অন্যতম আমদানি, রফতানি ও রেমিটেন্স সময়ের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠার মাধ্যমে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রফতানি ও রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ার সুফল মিলবে পুরো অর্থনীতিতেই। গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি খাত শক্তিশালী হলে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে টেনে তুলতে সাহায্য করবে। রেমিটেন্স দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করবে। আর রফতানি আয় বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়তা করবে। আর আমদানি বাড়তে থাকায় আশা করা হচ্ছে দেশে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান দুই-ই বাড়বে। জানা যায়, গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে চলতি বছরের জুলাইয়ে রেমিটেন্স বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। আর গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয়ও বেশি হয়েছে তিন কোটি মার্কিন ডলার। আর গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধিও আশানুরূপ অর্জিত হয়েছে। বিশেষ করে, রফতানি ও রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় অর্থনীতির অন্যান্য সূচকও ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস-এর গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, ‘রফতানি ও রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ার সুফল মিলবে পুরো অর্থনীতিতে। গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি খাত শক্তিশালী হলে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে টেনে তুলতে সাহায্য করবে। রেমিটেন্স দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করবে। ছোট ছোট উদ্যোক্তা তৈরি করবে। আর রফতানি আয় বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়তা করবে। এছাড়া কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যে বিরূপ প্রভাব পড়ার কথা ছিল রফতানি বাড়ার কারণে সেটা হবে না।’ একমাত্র রাজস্ব আয় ছাড়া অর্থনীতির সবগুলো সূচকই এখন উর্ধমুখী। আমদানি, রফতানি, রেমিটেন্স, রিজার্ভ, প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির এই পাঁচটি সূচক অর্থবছরের শুরু থেকেই ভালভাবে কার্যকর রয়েছে। তবে করোনার কারণে সরকারের রাজস্ব আদায়ও মন্থর হয়ে পড়েছে। ফলে গত মে মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় কমে প্রায় ৩৫ শতাংশ। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র বিক্রিও কমে গেছে। ফলে ব্যাংক ঋণমুখী হয়ে পড়েছে সরকার। এখন সরকারের উচিত যে কোন উপায়ে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা। এক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধে বিশেষ নজর দিতে হবে। করোনার কারণে যে পরিমাণ রাজস্ব আয় সরকারের হওয়া উচিত তা যেন দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তাদের পকেটে না গিয়ে সরকারের ঘরে যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সরকারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে আসবে এবং ব্যাংকনির্ভরতা কমে যাবে। করোনার ধাক্কায় সব দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে জানাই ছিল। কিন্তু মাত্রা কতটা হবে, তা নিয়ে নানা ধরনের পূর্বাভাস ছিল। ছিল নানা আলোচনা। সম্প্রতি বিভিন্ন দেশ নিজেদের এপ্রিল-জুনের জিডিপির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সংকোচন হয়েছে ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ইতিহাসে সর্বাধিক। আবার ইতালির ক্ষেত্রে মুছে গেছে প্রায় ৩০ বছরের প্রবৃদ্ধিই। সেই তুলনায় বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। করোনা মোকাবেলায় জানুয়ারি থেকেই চীনে কঠোর লকডাউন শুরু হয়। একসময় সেই সংক্রমণ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে মার্চের মাঝামাঝি থেকে প্রায় সব দেশেই মোটামুটি বন্ধ ছিল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। বিশেষত স্পেন, ইতালি, ফ্রান্সের মতো ইউরোপীয় দেশে সংক্রমণ যত ছড়িয়েছে, ততই ঘরবন্দী হয়েছে মানুষ। সব মিলিয়ে প্রায় তিন মাস। সে কারণে এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিক প্রান্তিকে আমদানি-রফতানি ও কলকারখানার উৎপাদন ধাক্কা খেয়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে পর্যটননির্ভর দেশগুলোর হোটেল, পর্যটন, বিমান ও রেস্তরাঁ পরিষেবা। যার জেরে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ফ্রান্সের জিডিপি কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ, ইতালির ১২ দশমিক ৪ শতাংশ, স্পেনের ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ ও ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি জার্মানির ১০ দশমিক ১ শতাংশ। আর ১৯টি দেশের ইউরোপীয় অঞ্চল (যাদের মুদ্রা ইউরো) ধরলে সেই অঙ্ক ১১ দশমিক ৯ শতাংশ। ২৭ দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতি কমেছে ১২ শতাংশের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে জানুয়ারি-মার্চেই ধাক্কা খেয়েছিল অর্থনীতি। তখন জিডিপি কমেছিল ৫ শতাংশ। তার পরেই করোনার হানায় গত বছরের এপ্রিল থেকে জুনের তুলনায় এ বছর ওই তিন মাসে মার্কিন জিডিপি কমেছে ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ। এর আগে ১৯৫৮ সালে জিডিপি কমেছিল ১০ শতাংশের বেশি। সেটাই ছিল রেকর্ড। বিশ্ব অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর। তবে আশার কথা হচ্ছে, জুন মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি শুরু হয়েছে। এ মাসে (জুন) সর্বোচ্চ ৪৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আর জুলাইয়ে হয়েছে ১৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান। অথচ এপ্রিলে বেকারের হার স্বাভাবিক সময়ের সাড়ে তিন শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১৪.৭০ শতাংশে বেড়ে দাঁড়িয়েছিল। বর্তমানে এই হার ১০.২০ শতাংশে নেমে এসেছে। যদিও এ কারণে আবারও যুক্তরাষ্ট্রে প্রণোদনা ঘোষণার চিন্তাভাবনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি গতিশীল হতে শুরু করায় বাংলাদেশের রফতানি আয়ও বাড়তে শুরু করেছে। এই করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ অবস্থান থেকে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। চীন ও ভিয়েতনামের পরই এখন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ তৈরি পোশাক রফতানি করছে বাংলাদেশ। পোশাক রফতানিতে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। এর আগে ২০১৮ ও ২০১৬ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫ম এবং ২০১৭ সালে ছিল ৭ম। ইউএস ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি এ্যাসোসিয়েশন (ইউএসএফএ) এবং ইউনিভার্সিটি অব দিলওয়ারের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। অতি সম্প্রতি এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়, প্রতিযোগী মূল্যের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বাড়ছে। ফলে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ অবস্থান থেকে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। সস্তার মধ্যে মানসম্পন্ন পণ্য তৈরির কারণে বিশ্বজুড়েই বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। আর করোনার কারণে বৈশ্বিক মন্দার সময়ে এই সস্তা পণ্যের চাহিদাই বেড়ে যায়। ২০০৭-২০০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দার সময় এই চিত্রটিই দেখা গেছে। যে কারণে ওই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পোশাক রফতানি কমে গেলেও বাংলাদেশের বেড়েছে। এবারও করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট মন্দায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের রফতানি বাড়ছে। আমদানি ॥ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর অনেক আগ থেকেই প্রবাসী আয় ছাড়া অর্থনীতির সব সূচক খারাপ অবস্থায় ছিল। এখন করোনার মধ্যেও হঠাৎ করে আমদানিতে ইতিবাচক ধারা শুরু হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় গত জুন মাসে আমদানিতে প্রায় ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যদিও ২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ে আমদানি কমেছে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ। এর ফলে অর্থনীতির ভাল সূচকে প্রবাসী আয়ের সঙ্গে যুক্ত হলো আমদানিও। করোনাভাইরাসের কারণে ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে অনেক দেশের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বিশেষ করে চীনের বাজার। এর ফলে ঋণপত্র খোলা হলেও পণ্য আসেনি। এসব পণ্য জুন মাসে এসেছে। আবার করোনাভাইরাসের কারণে সুরক্ষাসামগ্রী আমদানিও বেড়েছে। জুন মাসে আমদানি বাড়ায় মনে হচ্ছে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তবে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর তেমনটি মনে করেন না। তিনি বলেন, করোনা শুরুর পর অনেক দেশ থেকে পণ্য আসেনি। আবার বন্দরে এসেও পড়ে ছিল। চীনসহ অনেক দেশের বাজার খুলে যাওয়ায় জুন মাসে এসব পণ্য এসেছে। এর ফলে আমদানি বেড়েছে। আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, পোশাক কারখানাগুলো চালু আছে, অর্ডারও আসছে। তাই আমদানি বাড়বে। তবে আগের মতো চাহিদা এখন হবে না, ফলে আমদানিতে তেমন প্রবৃদ্ধি হবে না। এ জন্য নতুন বাজার নতুন পণ্য রফতানির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তাহলে আমদানিও বাড়বে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে বিভিন্ন দেশ থেকে ৪৮০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে, যা গত বছরের জুন মাসের চেয়ে ২৪ শতাংশ বেশি। গত বছরের জুন মাসে ৩৮৮ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল। আর গত মে মাসে এসেছিল ৩৫৩ কোটি ডলারের পণ্য। ফলে মে মাসের চেয়ে প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে জুন মাসে। আর এপ্রিলে এসেছিল মাত্র ২৮৫ কোটি ডলারের পণ্য, যা এক মাসের হিসাবে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। জানা গেছে, গত অর্থবছরে বিভিন্ন দেশ থেকে ৫ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ কম। ওই অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছিল ৫ হাজার ৯৯১ কোটি ডলারের। যদিও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য আমদানিতে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় ২৫ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকাররা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে অনেক দেশে রফতানি বন্ধ ছিল, যা এখন খুলে দেয়া হয়েছে। এ কারণে কাঁচামাল আমদানি বাড়ছে, রফতানিও বাড়বে। এ ছাড়া সুরক্ষাসামগ্রী তৈরির বিভিন্ন কাঁচামালও আমদানি হচ্ছে। এ কারণে আমদানি বেড়ে গেছে। তবে আগের মতো মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি হচ্ছে না। রফতানি ॥ করোনা মহামারীর মধ্যে শুরু হওয়া নতুন অর্থবছরের (২০২০-২০২১) প্রথম মাস জুলাইয়ে আগের বছরের (২০১৯ সালের স্বাভাবিক সময়ে) একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয় বেশি হয়েছে অন্তত তিন কোটি মার্কিন ডলার। শুধু তাই নয়, করোনার বাস্তবতা সামনে রেখে রফতানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল তার চেয়েও ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বলছে, অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৪৪ কেটি ৯০ লাখ ডলার। অথচ এই খাতে আয় হয়েছে ৩৯১ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রথম মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। একই সঙ্গে অর্জিত রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে রফতানি থেকে আয় হয়েছিল ৩৮৮ কোটি মার্কিন ডলার। জুলাই মাসে রফতানি আয় বাড়ার মধ্য দিয়ে নেতিবাচক ধারা থেকে বেড়িয়ে এলো এই খাত। অর্থাৎ সাত মাস পর বাংলাদেশ রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধিতে ফিরে এসেছে। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল রফতানি আয়ে। এরপর ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি কমছিল। গত মার্চ থেকে করোনা মহামারীর ধাক্কা বাংলাদেশে লাগতে শুরু করে। এপ্রিলে রফতানি কমে ৫২ কোটি ডলারে নেমে আসে। এপ্রিল মাসে আগের বছরের এপ্রিলের চেয়ে রফতানি আয় কমেছিল ৮৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অবশ্য মে মাসে রফতানি বেড়ে ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। তবে প্রবৃদ্ধি কমে ৬১ দশমিক ৫৭ শতাংশ নেমে আসে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রফতানি আয় বেড়ে ২৭১ কোটি ৪৯ লাখ ডলারে উঠলেও প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসে। এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘স্রোতের বিপরীতে সাধারণ ছুটির মধ্যেও কারখানা খুলে দেয়ার মতো চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত নেয়ার সুফল এখন রফতানি খাত পাচ্ছে। রফতানি খাত অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। এই খাতের সঙ্গে আরও অনেকগুলো খাত সম্পৃক্ত। রফতানি খাত শক্তিশালী হলে অর্থনীতির অন্যান্য খাতও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এ কারণে রফতানি খাতে যেসব সমস্যা এখনও বিদ্যামান রয়েছে, তা দূর করা সম্ভব হলে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাড়বে। একইভাবে রফতানির পরিমাণও বাড়বে।’ এ প্রসঙ্গে বিকেএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘রফতানি আয় বেড়ে যাওয়ার খবর খুবই আশাব্যঞ্জক এবং ভাল খবর। তবে সঙ্কট কেটে যাচ্ছে এর মানে তা নয় কিন্তু। জুলাই মাসে যে রফতানি আয় দেশে এসেছে তা মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের অর্ডারের। বাস্তবতা হলো আমাদের হাতে নতুন অর্ডার কম আসছে। ফলে আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বরে রফতানির চিত্র খুব ভাল হবে বলে মনে হচ্ছে না।’ করোনায় একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হওয়ায় গত এপ্রিলে তৈরি পোশাকের রফতানি মাত্র ৩৭ কোটি ডলারে নেমে গিয়েছিল। পরের মাসে তা বেড়ে ১২৩ কোটি ডলার হয়। জুনে রফতানির প্রধান পণ্য পোশাক খাত বেশ ঘুরে দাঁড়ায়, ওই মাসে রফতানি হয় ২২৫ কোটি ডলারের পোশাক। সর্বশেষ গত জুলাইয়ে ৩২৪ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ শতাংশের মতো কম। এপ্রিলে কারখানা বন্ধের সময় শ্রমিকরা মজুরি পেয়েছেন ৬৫ শতাংশ। যদিও এপ্রিল, মে ও জুনের মজুরি দেয়ার জন্য মার্চে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল করেছিল সরকার। সেই তহবিল থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কারখানা তিন মাসের মজুরি দিয়েছে। গত জুলাইয়ের মজুরি দেয়ার জন্য নতুন করে তহবিলের অর্থ পাচ্ছেন পোশাক মালিকরা। আবার করোনায় অন্য বড় খাতের রফতানি কমলেও ওষুধ এবং পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি বেড়েছে। জুলাইয়ে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। এই আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি। আর জুলাই মাসে ওষুধ রফতানি বেড়েছে ৪৯ শতাংশ। আগের বছরের জুলাই ১ কোটি ১৪ লাখ ডলার থেকে এ বছর জুলাই রফতানি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৭০ লাখ ডলারে। এ ছাড়া জুলাইয়ে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলারের প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ৪ কোটি ২৫ লাখ ডলারের হিমায়িত খাদ্য রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ২১ শতাংশ। যা রফতানি আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘তিন মাসের ভেতরে আমাদের প্রধান রফতানি খাত নেতিবাচক থেকে ইতিবাচক ধারায় ফিরছে, এটা অবশ্যই ভাল খবর। এতে বিদেশী ক্রেতাদের কাছেও ইতিবাচক বার্তা যাবে। আশা করি, পরের মাসগুলোতেও এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।’ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, কয়েক মাস ধরে শ্রমিকদের সীমিত মজুরি ও কর্মঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। আশা করছি পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সরকারী সহযোগিতা ছাড়াই ধীরে ধীরে কারখানার মালিকরা শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি দিতে পারবেন। ইপিবি’র তথ্য বলছে, জুলাইয়ে তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। সেখানে আয় হয়েছে ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রফতানি আয়ের বড় অংশ (৮৫ শতাংশ) জোগায় তৈরি পোশাক। আর এই খাতে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। রেমিটেন্স ॥ করোনার এই সময়ে প্রতিদিনই প্রবাসীরা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন। গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে এ বছরের জুলাইয়ে রেমিটেন্স বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। আর গত জুন মাসের চেয়ে বেড়েছে ৪২ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে প্রবাসীরা ২৬০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। গত বছরের জুলাইতে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন ১৫৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। এই হিসেবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিটেন্স বেড়েছে এক বিলিয়ন ডলারের মতো। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, একক মাস হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনও এত পরিমাণ রেমিটেন্স আসেনি। গত জুন মাসে প্রবাসীরা ১৮৩ কোটি মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন। জুন মাসে এটি ছিল রেকর্ড। তবে সেই রেকর্ড ভেঙ্গে জুলাইতে ২৬০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রেমিটেন্স প্রবাহ অব্যাহতভাবে বাড়ার ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারের সর্বোচ্চ রেকর্ড অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন হুণ্ডি, স্বর্ণ চোরাচালান কমে গেছে। এর ফলে বৈধ পথে আয় আসা বেড়েছে। এর মানে এটা না যে, অভিবাসীরা ভাল আছেন। কিছুদিন পরে আর এত আয়ও আসবে না। ফলে এসব বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। এ প্রসঙ্গে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘দুই কারণে করোনাকালে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। একটি হলো- মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে যারা বেশি বেশি রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন, তারা মূলত দেশে ফিরে আসার জন্য দিন গুনছেন। এই দিন গোনা প্রবাসীরা সেখানে যে টাকা সঞ্চয় করেছিলেন তার সবই দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। ফলে রেমিটেন্স আসার ক্ষেত্রে রেকর্ড হয়েছে।’ তিনি মনে করেন দ্বিতীয় আরেকটি কারণে রেমিটেন্স প্রবাহে রেকর্ড হয়েছে, তা হলো- এই করোনাকালে ইউরোপ ও আমেরিকা থেকেও আগের চেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে। এটা দীর্ঘমেয়াদের জন্য ভাল লক্ষণ। ইউরোপ-আমেরিকা থেকে রেমিটেন্স বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, দেশগুলোর প্রবাসীরা ওইসব দেশে টাকা রেখে এখন কোন মুনাফা পাচ্ছেন না। অথচ বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে এই করোনাকালেও ৬ শতাংশ মুনাফা দিচ্ছে। আবার জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে ১১ শতাংশের বেশি মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ইউরোপ আমেরিকার অনেকেই লাভের আশায় বাংলাদেশে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এর সঙ্গে ২ শতাংশ প্রণোদনা সুবিধা তো আছেই। তিনি বলেন, ‘ইউরোপ আমেরিকার প্রবাসীরা বাংলাদেশে বেশি বেশি টাকা পাঠানোর পেছনে আরেকটি কারণ হলো, বাংলাদেশে এখন সস্তায় ফ্ল্যাট পাওয়া যাচ্ছে। এর সঙ্গে কালো টাকা বিনিয়োগ করারও সুযোগ রয়েছে। ফলে বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেদার ফ্ল্যাট কিনছেন।’ তিনি মনে করেন দীর্ঘদিন বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় হুণ্ডি কমে যাওয়ার কারণেও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স বেড়ে গেছে। রিজার্ভ ॥ রফতানি আয় ও রেমিটেন্স বৃদ্ধির ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও নতুন নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে। গত অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে প্রায় ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। আর পুরো অর্থবছরে আয় আসে ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার। আবার জুলাই মাসে রেকর্ড প্রায় ২৬০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় (রেমিটেন্স) দেশে পাঠায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা। এর আগে একক মাসে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছিল ঠিক আগের মাসেই ১৮৩ কোটি ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রফতানি আয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৭১ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। আবার অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আয় হয়েছে ৩৯১ কোটি ডলার। সেই সঙ্গে করোনার সঙ্কটের সময় উন্নয়ন সহযোগীরাও জরুরী ভিত্তিতে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে গত ২৯ জুলাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭১৮ কোটি ডলার, যা দিয়ে প্রায় ৭ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। এত আয় আসায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কিনে দাম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে ডলারের বিপরীতে টাকা কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে। দীর্ঘদিন ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সায় প্রতি ডলারের দাম আটকে রেখেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এখন কমে হয়েছে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ॥ শেষ পর্যন্ত সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ীই জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশে। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে যখন অর্থনীতিতে ধস নেমেছে, তখনও বাংলাদেশে এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছরে জন্য প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। যদিও করোনার কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতেও ধস নামার আশঙ্কা করেছিল উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো। তবে সরকার দৃঢ় মনোবল দেখিয়ে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২০ শতাংশই পুনর্নির্ধারণ করে। অথচ বাংলাদেশের বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ২.৫ শতাংশের বেশি হবে না। বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতো সংস্থাগুলোও জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত নেমে আসার আভাস দিয়েছিল। অবশ্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছিল। যদিও তাদের আশঙ্কাকে মিথ্যা প্রমাণ করে বাংলাদেশ এই করোনা পরিস্থিতিতেও সন্তোষজনক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২০ শতাংশ হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ, করোনার মধ্যেও কৃষিতে উৎপাদন ভাল হয়েছে। রফতানিও মন্দের ভাল ছিল। রেমিটেন্সও ভাল ছিল। অবশ্য জিডিপিতে সরাসরি রেমিটেন্সের প্রভাব খুব বেশি না থাকলেও এই রেমিটেন্স বিভিন্নভাবে প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। সূত্র জানায়, ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছর ধরে গত অর্থবছরের বাজেটে টাকার অঙ্কে প্রবৃদ্ধির আকারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯শ’ কোটি টাকা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সেই লক্ষ্য থেকে কিছুটা সরে আসে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই প্রাক্কলন অনুযায়ী, অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধির আকার দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।
×