ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আর বাকি মাত্র ৩ ভাগ

মুজিববর্ষেই শতভাগ বিদ্যুত

প্রকাশিত: ২২:৪৮, ২৬ জুলাই ২০২০

মুজিববর্ষেই শতভাগ বিদ্যুত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুজিববর্ষেই দেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুতায়নের আওতায় আসবে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন হতে আর মাত্র তিন ভাগ বাকি রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের আগেই যা শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন দেশের ৯৭ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুত সুবিধা রয়েছে। শনিবার অনলাইনে কেরানীগঞ্জে আট ইউনিয়নে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ কথা বলেন। ইনফো সরকার তৃতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিয়ন-গুলোতে ব্রডব্যন্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিচ্ছে সরকার। প্রথমিক পর্যায়ে দুই হাজার ৬০০ ইউনিয়নে এই সেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৪০০ ইউনিয়নে গেছে ব্রডব্যন্ড ইন্টারনেট সেবা। ইউনিয়ন অফিস ছাড়াও ইউনিয়নের সরকারী-বেসরকারী নানা রকম অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি মানুষের বাড়িতেও এর আওতায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দেয়া হবে। প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ বিদ্যমান ও আগত সকল ই-সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে। ইন্টারনেট আজ বিশ্বকে একটি গ্রামে পরিণত করেছে। বাংলাদেশেও গ্রাম পর্যায় ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ব্যাংকিং সেবায় পেমেন্ট সিস্টেম সচল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে সকল অর্থনৈতিক কার্যক্রম ইন্টারনেট কেন্দ্রিক হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ও ঢাকা -২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেরানীগঞ্জে হাইটেক পার্ক নির্মাণ এখানের তরুণ-তরুণীদের আরও ডিজিটালাইজড করে সম্মানজনক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এখন আটটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হলেও বাকি চারটি ইউনিয়নে দ্রুত সংযোগের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের পূর্বেই কেরানীগঞ্জের সকল প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহক পর্যায়ে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করে কেরানীগঞ্জবাসীদের জন্য অনলাইন সেবা উন্মুক্ত করতে চাই। স্বল্প দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করে এবং গ্রাম-শহরের বৈষম্য সমতা বিধান করে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃজন করবে। যা ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ সময় তিনি বাংলাদেশে অনলাইন সেবার বিস্তারে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবদান স্মরণ করে বলেন, তার পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানেই বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায়ের প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ প্রান্তিক এলাকায় ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। ফলে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার অর্থনৈতিক কার্যক্রমের অন্যতম হাবে পরিণিত হচ্ছে। সকলের জন্য ইন্টারনেট সেবা, দক্ষ জনবল গঠন, ডিজিটাল সেবা বৃদ্ধি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে কাজ করছি। পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে বিগত ১১ বছর দেশে ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে গত ৫ মাসে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন এমনকি কোরবানির গরুর হাট পর্যন্ত ডিজিটাল প্লাটফর্মে চলে এসেছে। তাই এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ আর স্বপ্ন বা কল্পনা নয়, বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে হবে। প্রসঙ্গত ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক গ্রামীণ জনপদে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সংযোগ প্রদানের জন্য ২ হাজার ৬০০টি ইউনিয়নে পয়েন্ট অব প্রেজেন্স (পিওপি) স্থাপন এবং ১৯ হাজার ৫০০ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে উচ্চগতির নেটওয়ার্ক অবকাঠামো স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়াও ২ হাজার ৬০০ ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট অবকাঠামো স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে ২৬ হাজার সরকারী অফিসে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে পুলিশের এক হাজার টি অফিসের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। দেশের ৬০ শতাংশ জনগণের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিতকরা সম্ভব হবে। জাতীয় আইসিটি নীতি ২০১৫ এর লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের গ্রামীণ সম্প্রদায়ের জন্য ই-সেবা গ্রহণ সম্ভব হবে, শহর এবং গ্রামের ডিজিটাল বৈষম্য দূরীকরার পাশাপাশি এবং নারী-পুরুষের সমতা রক্ষা হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে (ইউডিসি) হাইস্পিড ইন্টারনেট সংযোগপ্রদান, কারিগরি জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে যোগ্যতা বৃদ্ধি এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ২০২১ সালে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক ২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ এ উন্নীত হবে। ফলে জিডিপি এক শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যের আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব অনলাইনে যোগ দেন।
×