ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভুল স্বীকার করে রোগীকে টাকা ফেরত দিল আনোয়ার খান হাসপাতাল

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ৪ জুন ২০২০

ভুল স্বীকার করে রোগীকে টাকা ফেরত দিল আনোয়ার খান হাসপাতাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে নিজেদের ভুল স্বীকার করে রোগীকে টাকা ফেরত দিয়েছে রাজধানীর ধানম-িতে গড়ে উঠা আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। বুধবার রোগীর ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম সুমনের হাতে ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৯৫ টাকা টাকা তুলে দেয়া হয়। ঘটনাটির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘সরি’ বলে দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে ওই রোগীর কাছ থেকে ১ ও ২ জুনের বিল কেটে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যকার চুক্তি গত ৩১ মে বাতিল হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে আনোয়ার খান মডার্ন কর্তৃপক্ষ। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রোগী সাইদুর রহমান। মাত্র ১৫ দিন টিকেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও মডার্ন হাসপাতালের চুক্তি। টাকা ফেরত দেয়া আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ ইহতেশামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা টাকা ফেরত দিয়েছি। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সরকারের সঙ্গে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে আমাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল, তা গত ৩১ মে থেকে বাতিল করেছি। সরকারের সঙ্গে কোভিড প্রজেক্টে আমরা আর নেই। আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলবে হাসপাতাল। এ কারণে রোগীকে নিজেই চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে হবে। তাই ওই রোগীর কাছ থেকে দুই দিনের বিল রাখতে বাধ্য হয়েছি আমরা। রোগীর ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম সুমন জানান, বুধবার সকালে বড় ভাইকে (সাইফুর রহমান) ফোন করে হাসপাতালে যেতে বলা হয়। বড় ভাইয়ের পরিবর্তে আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করি। গত ৩১ মে সরকার নির্ধারিত ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল’ তালিকা থেকে সরে আসায় ওই রোগীর কাছ থেকে ১ ও ২ জুনের বিল কেটে রাখা হয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে আনোয়ার খান মডার্ন কর্তৃপক্ষ। মাঝখানে আমরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছি বলে জানান আরিফুল ইসলাম সুমন। এদিকে, গত ২৩ মে করোনা ধরা পড়ার পর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন সাইফুর রহমান। গত ২ জুন ছাড়া পান তিনি। ১১ দিনে চিকিৎসার ব্যয় ধরা হয় ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা। বিল দেখে তার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থা। টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় হাসপাতাল থেকে বের হতে পারছিলেন না। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হাসপাতালে আটকে রাখা হয় তাকে। শেষমেশ অনেক অনুরোধ করে দেড় লাখ টাকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি। সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার কোন অপারেশন হয়নি। আইসিইউতে ছিলাম না। অক্সিজেন নেয়া লাগেনি। দুটি এক্সরে ও দুটি রক্ত পরীক্ষা করিয়েছে। কেবল নাপা ও গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট দেয়া হয়েছে। বাকি ওষুধ বাইরে থেকে কিনেছি। অথচ বিল এসেছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা! বুধবার রোগীর পরিবারকে টাকা ফেরত দিয়ে আনোয়ার খান মডার্ন কর্তৃপক্ষ বলে, সবাইকে জানাবেন, আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিলটি এমন হওয়ার কথা ছিল না। এছাড়া পরিবারটিকে ‘সরি’ বলে দুই দিনের বিল রেখেছে তারা। সাইফুর রহমানের বিলের কাগজে দেখা গেছে, ২ জুন পর্যন্ত চিকিৎসকের খরচ ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৭০০ টাকা, হাসপাতাল বিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৭০ টাকা, ইনভেস্টিগেশন বিল ১৯ হাজার ৪৭৫ টাকা, ওষুধের বিল ৫ হাজার ২২৬ টাকা ৮৫ পয়সা, এর সঙ্গে সার্ভিস চার্জ ১২ হাজার ৯০৩ টাকা। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ টাকা ৮৫ পয়সা। মোট বিল আসে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা।
×