ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খাগড়াছড়িতে ২৮ বস্তা ত্রাণের চাল উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ১৩ এপ্রিল ২০২০

খাগড়াছড়িতে ২৮ বস্তা ত্রাণের চাল উদ্ধার

পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি ॥ মাটিরাঙায় ১০ টাকা মূল্যের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ২৮ বস্তা চালসহ ক্রেতা আবুল হাসেমকে আটক করেছে পুলিশ। তবে পলাতক রয়েছে ডিলার আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মুমিন। রবিবার দুপুরে মাটিরাঙা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববির নেতৃত্বে পুলিশ গোমতি থেকে এ চাল আটক করে। মাটিরাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামসুউদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববির নেতৃত্বে পুলিশ গোমতি বলিচন্দ্র পাড়া এলাকায় আবুল হাসেমের বাসায় অভিযান চালিয়ে বিক্রি নিষিদ্ধ খাদ্যবা›দ্ধব কর্মসূচীর ১০ মূল্যের ২৮ বস্তা চাল উদ্বার করা হয়। তবে ডিলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মুমিনকে আটক করা যায়নি। আব্দুল মুমিন গোমতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেনের ছোট ভাই। মাদারীপুরে ১১ বস্তা নিজস্ব সংবাদদাতা মাদারীপুর থেকে জানান, রাজৈর উপজেলার পশ্চিম সীমান্তে নয়াকান্দি স্লুইসগেট এলাকা থেকে রবিবার বেলা ১১টার দিকে হায়দার শেখ, বিদ্যুত শেখ ও ভ্যানচালক সাইদুল শেখকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ভিজিডির ১১ বস্তা চালসহ আটক করে রাজৈর থানা পুলিশ। আটক তিনজনের বাড়ি উপজেলার পশ্চিম সরমঙ্গল গ্রামে। পুলিশ জানায়, ১১ বস্তা ভ্যানগাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় চেকপোস্ট পুলিশের হাতে ওই চালসহ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ভ্যানগাড়ী চালক সাইদুল জানায়, খালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১১ বস্তা চাল নিয়ে পাশর্^বর্তী মুকসুদপুর উপজেলার শান্তিপুরে হায়দার শেখের চাতালে যাচ্ছিলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯শ’ কেজি স্টাফ রিপোর্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জানান, আশুগঞ্জে দুস্থ, অসহায় ও গরিব মহিলাদের জন্য দেয়া খাদ্য সহাতার ৯শ’ কেজি চালসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এসব চাল কার্ডধারীরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানা যায়। রবিবার দুপুরে উপজেলার আড়াইসিধা ইউনিয়নের সামসু মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে আল আমিন মিয়ার গরুর খামার ও আলমনগর এলাকার নাজমুল মিয়ার চাতালকল থেকে এই চালসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজিমুল হায়দার তাদের আটক করেন। এ সময় আড়াইসিধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তার সঙ্গে ছিলেন। আটককৃতরা হলো, চাতাল মালিক নাজমুল হক, আড়াইসিধা ভবানীপুর এলাকার শাহজাহান, শাহাবুদ্দিন, খামার মালিক আল আমিন ও ফারুক মিয়া। তাদের আশুগঞ্জ থানায় হস্থান্তর করা হয়েছে। জানা যায়, সরকারী খাদ্য সহায়তার চাল রবিবার সকালেই আড়াইসিধা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১শ’ ৪১ পরিবারের মাঝে চার হাজার ২শ’ ৩০ কেজি চাল বিতরণ করা হয়। এসব চাল দুস্থ, অসহায় ও গরিব মহিলা ভিজিডি কার্ডধারীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এসব চাল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করে বাড়িতে নেয়ার আগেই পরিষদ থেকে কিছু দূরে গিয়ে ৩১ কার্ডধারী বিক্রি করে দেয়। চালগুলো কিনে নেয় আড়াইসিধা ভবানীপুর এলাকার শাহজাহান, শাহাবুদ্দিন ফারুক ও মোশারফ মিয়া। এই চাল সংগ্রহ করে আর এন অটো রাইস মিলের মালিক নাজমুল হকের কাছে পাঠানোর জন্য মজুদ করছিল তারা। এমন সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজিমুল হায়দার গিয়ে আড়াইসিধা সামসু মিয়ার বাড়ির আল আমিনের গরুর খামারে অভিযান চালায়। সেখান থেকে ১১টি বস্তায় ৫শ’ ৯৭ কেজি চাল উদ্ধার করে। এ সময় ৪ জনকে আটক করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উপজেলার আলমনগরে অভিযান চালিয়ে নাজমুল মিয়ার আর এন অটো রাইস মিল থেকে ৩শ’ কেজি চাল উদ্ধার করেন। তখন চাতাল মালিক নাজমুল হককে আটক করা হয়। বগুড়ায় ১৬৮ বস্তা স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া অফিস থেকে জানান, নন্দীগ্রাম উপজেলা হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্যবন্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজির চাল কালোবাজারে মজুদ করায় র‌্যাব ১৬৮ বস্তা চালসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- আনিছুর রহমান (৫০) ও আলসার আলী (৪৩)। দরিদ্র ও দুস্থদের এই চাল একটি চক্র ডিলারের যোগসাজশে কালোবাজারে মজুদ করেছিল। র‌্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্প জানায়, একটি চক্র অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার জন্য দরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজির সরকারী চাল দরিদ্রদের নিকট বিক্রি না করে উপজেলার ভাগশিমলা গ্রামের আনিছুর রহমানের বাড়িতে মজুদ করেছিল। র‌্যাব গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে আনিছুরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কালোবাজারের চালসহ ২ জনকে গ্রেফতার করে। এ সময় ওই স্থান থেকে কালোবাজারী চক্রের অপর সদস্য মিলন সরদার (৩৫) কৌশলে পালিয়ে যায় বলে র‌্যাব জানায়। ভোলায় চালসহ ইউপি সদস্য গ্রেফতার নিজস্ব সংবাদদাতা ভোলা থেকে জানান, লালমোহনে দুদিন ধরে বিভিন্ন স্থান থেকে জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী চাল পুলিশ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করছে। এ পর্যন্ত মোট দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে লালমোহনের নাজিরপুর ইউনিয়নের চর টিটিয়া গ্রাম থেকে ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জুয়েলের ঘরের মাটি খুঁড়ে ও লাকড়ি রাখার ঘর থেকে ৭ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। লালমোহন থানার ওসি মীর খায়রুল কবির জানান, তারা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সরকারী খাদ্য বিভাগের সিল মারা ৭ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। তবে এ সময় ইউপি সদস্য জুয়েলকে পাওয়া যায়নি। অপরদিকে শনিবার লালমোহনের বদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশ থেকে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ও স’ মিলের কাঠের গুঁড়োর মধ্যে লুকিয়ে রাখা সরকারী ১৫ বস্তা চাল অভিযান চালিয়ে ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ উদ্ধার করে। সরকারী চাল উদ্ধার করার ঘটনায় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ভাতিজা ইউপি সদস্য মোঃ ওমর ফারুককে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। কালকিনিতে চালসহ ইউপি সদস্য আটক নিজস্ব সংবাদদাতা কালকিনি, মাদারীপুর থেকে জানান, ১০ টাকা দরের ১৫ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এসব চাল আত্মসাতে জড়িত থাকায় উত্তম বিশ্বাস নামের এক ইউপি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য উত্তম বিশ্বাস সরকারী ১০ টাকা দরের ১৫ বস্তা চাল আত্মসাতের জন্য তার নিজের লোকজনের বাড়িতে নিয়ে রাখে। এ ঘটানা এলাকায় জানাজানি হলে উপজেলার ডাসার থানা পুলিশকে খবর দেন এলাকাবাসী। পরে ডাসার থানার ওসি মুহাম্মদ আবদুল ওহাবের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ইউপি সদস্য উত্তম বিশ্বাসকে আটক করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে একই এলাকার উত্তর শশিকর গ্রামের স্বপন বাড়ৈর বাড়ি থেকে ৮ বস্তা, উত্তর চলবল গ্রামের প্রকাশ বাড়ৈর বাড়ি থেকে ৩ বস্তা ও উত্তম সরকারের বাড়ি থেকে ৪ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। সোনারগাঁয়ে ইউপি সদস্য বরখাস্ত নিজস্ব সংবাদদাতা সোনারগাঁ থেকে জানান, ত্রাণ আত্মসাত, স্বজনপ্রীতি ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কবির হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বরখাস্তের তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে জানানো হয় সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য কবির হোসেন করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ত্রাণ বিতরণ না করে আত্মসাত এবং গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। হাটহাজারী ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানা, ত্রাণ দিয়ে ছবি তোলার পর ওই ত্রাণ কেড়ে নেয়া এবং ত্রাণ বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগে হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছারকে রবিবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষে রবিবার দুপুরে এ আদেশ প্রদান করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল এ চেয়ারম্যান ইউপি কার্যালয়ে ত্রাণ নিতে ইচ্ছুকদের ডেকে এনে ছবি তোলেন এবং পরবর্তীতে দেয়া ত্রাণ পুনরায় কেড়ে নেন। এছাড়া মির্জাপুর ইউনিয়নের সদস্যদের বাদ দিয়ে তিনি নিজে ইচ্ছেমতো ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের ঘটনায় লিপ্ত হন। ঘটনাটি প্রচার হওয়ার পর বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। এসব ঘটনা নিয়ে ইউপি সদস্যগণ লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন। এ অভিযোগ তদন্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক বরাবর রিপোর্ট দেন। তদন্ত রিপোর্ট জেলা প্রশাসক এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। এরপর রবিবার তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিসও দেয়া হয়েছে।
×