ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা আতঙ্ক

ঢাবি বন্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ১৫ মার্চ ২০২০

ঢাবি বন্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বিশ্বব্যাপী এক নতুন মহামারীর নাম করোনাভাইরাস। সারাবিশ্ব উদ্বিগ্ন এই ভাইরাস নিয়ে। এই ভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রথম সারির অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস পরীক্ষা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এই ভাইরাস সুরক্ষায় প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হয়নি কোন উল্লেখযোগ্য প্রস্তুতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলেই গণরুম রয়েছে যেখানে চার জনের একটি কক্ষে ২০-৩০ শিক্ষার্থী অবস্থান করে। তাদের বেশিরভাগই প্রথম কিংবা দ্বিতীয় শিক্ষার্থী। এছাড়া প্রতিটি কক্ষে সাধারণত আটজন করে শিক্ষার্থী বসবাস করে। সে অনুযায়ী হলগুলোতে নেই কোন সচেতনতামূলক কর্মসূচী। তাই উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আগেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পক্ষে দাবি জানিয়েছেন। এদিকে একাডেমিক কার্যক্রম ছাড়াও ছাত্ররাজনীতির কার্যক্রমেও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিলিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে প্রচলিত করমর্দন, কোলাকুলি ও মিছিল-মিটিং বহাল আছে আগের মতোই। ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে এ ধরনের রীতি বন্ধ করতে সাংগঠনিক নির্দেশনা দিয়েছে। তবে মধুর ক্যান্টিনে স্বাভাবিক সময়ের মতো বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা গণজমায়েত হচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের সুমন ইসলাম বলেন, এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা উচিত। অন্যথায় ঢাবির মতো জনবহুল এলাকায় নিয়ন্ত্রণ করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না। শিক্ষার্থীরা বলছেন, হলগুলো একপ্রকার ঘনবসতির মতো কারণ এক রুমে আট জন করে থাকে। ফলে হলগুলোতে একবার করোনাভাইরাস ছড়ালে অবস্থা খুবই শোচনীয় হবে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির মিটিং শেষে গত বৃহস্পতিবার জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থীর বা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের কোন সদস্যের সর্দি-কাশি, জ্বর, গলাব্যথাসহ কোন উপসর্গ দেখা দিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ভাইরাস মোকাবেলায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জনসমাগমস্থল এড়িয়ে চলা, করমর্দন ও কোলাকুলি থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়। হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করছে ঢাবি শিক্ষার্থীরা ॥ করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নিজস্ব অর্থায়নে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। তৈরিকৃত এসব স্যানিটাইজার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারে প্রাথমিকভাবে এই স্যানিটাইজার তৈরি করা হয়েছে। ফার্মেসী অনুষদের শিক্ষকদের সহায়তায় ওই অনুষদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এটা তৈরি করছেন। ঢাবিতে করোনা প্রাদুর্ভাব বিষয়ক সেমিনার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে “করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব: চ্যালেঞ্জেস ও কনসার্নস ফর বাংলাদেশ” শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। আজ রবিবার সকাল ১১টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে সেমিনারে উপস্থিত থাকবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য সেবা অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বেনজীর আহমেদ। এতে জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ ইমদাদুল হক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
×