ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নবেম্বরের মধ্যেই বাদশাহ হতে চান যুবরাজ !

প্রকাশিত: ০৯:০২, ১০ মার্চ ২০২০

নবেম্বরের মধ্যেই বাদশাহ হতে চান যুবরাজ !

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান পিতা বাদশাহ সালমান বেঁচে থাকতেই বাদশাহ হতে চান। নবেম্বরে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনের পূর্বেই তিনি বাদশাহ হিসেবে আসীন হতে চান। কিন্তু তার চাচা প্রিন্স আহমেদ বিন আবদেল আজিজ এতে সায় দেননি। সে কারণেই চাচাকে গ্রেফতার করেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি লিখেছেন, পিতার মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান না মোহাম্মদ বিন সালমান। কেননা, পিতা যতদিন বেঁচে আছেন, ততদিন ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে তার বাদশাহীর দাবির গোড়া শক্ত থাকবে। এ কারণেই নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনের আগে আগেই সিংহাসনে বসতে চান এমবিএস হিসেবে পরিচিত এই ক্রাউন প্রিন্স। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, বাদশাহর স্মৃতিভ্রম বা ডিমনেশিয়া রোগ আছে। এছাড়া তিনি সুস্থ। ক্রাউন প্রিন্স তার পিতাকে সিংহাসন ছেড়ে দিতে বাধ্য করবেন। হার্স্ট লিখেছেন, নিজের চাচাত ভাই প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফকে ক্রাউন প্রিন্স পদ থেকে অপসারণ করে যে কাজ শুরু করেছিলেন এমবিএস, পিতাকে অপসারণ করে সিংহাসনে বসে সেই কাজ শেষ করবেন তিনি। একটি সূত্র তাকে বলেছে, ‘এমবিএস নিশ্চিত হতে চান যে, তিনি যখন বাদশাহ হবেন তখন তার পিতা জীবিত থাকবেন।’ শুক্রবার বাদশাহ সালমানের একমাত্র জীবিত ভাই প্রিন্স আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পূর্বে তাকে শেষবারের মতো এমবিএস’র পক্ষাবলম্বন করার প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। মূলত, নতুন বাদশাহ নিয়োগ দেয়ার জন্য যে এ্যালিজিয়েন্স কাউন্সিল রয়েছে, তার সদস্য প্রিন্স আহমেদ। এ কারণেই তার সমর্থন অত্যন্ত জরুরী এমবিএস’র। দ্বিতীয় একটি সূত্র জানায়, এমবিএসকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার জন্য প্রিন্স আহমেদের ওপর চাপ ছিল। তিনি সম্প্রতি নিজের বড় ভাই অর্থাৎ বাদশাহর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তবে সালমান ও অন্যরা ভদ্রোচিতভাবে তাকে বলেন এমবিএসকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার জন্য। কিন্তু আহমেদ স্পষ্টভাবে বলেন, তিনি এ প্রকল্পে সায় দেবেন না। তিনি কোন প্রতিশ্রুতি দেননি। তিনি বাদশাহকে বলেন, তিনি নিজে বাদশাহ হতে চান না। কিন্তু কেউ এগিয়ে এলে তাকে সমর্থন দেবেন। এদিকে প্রিন্স আহমেদের গ্রেফতার নিয়ে বিস্তারিত তথ্য আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, প্রিন্স আহমেদের বিরুদ্ধে যে অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। শুক্রবার সকালে গ্রেফতার হওয়ার আগে তিনি এ ধরনের কোন কর্মকা-ে সম্পৃক্ত ছিলেন না। কেননা, তার এই ধরনের ক্ষমতাই ছিল না। তারা জানান, ‘বাদশাহ সালমান মারা গেলে প্রিন্স আহমেদ এ্যালিজিয়েন্স কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে প্রকাশ্যেই এমবিএস’র সিংহাসনে আরোহণের বিরোধিতা করতেন। তিনি প্রকাশ্যেই না বলতেন। অভ্যুত্থান চেষ্টার কিছু ছিল না এখানে।’ বিদেশ থেকে বাজপাখি শিকার করে মাত্রই দেশে ফিরেছিলেন প্রিন্স আহমেদ। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নিজের ঘনিষ্ঠজনদের জন্য বিশেষ আয়োজন করেছিলেন। তখনই তার কাছে বার্তা যায় যে, শুক্রবার সকালে তাকে ডেকেছেন বাদশাহ সালমান। তখন বলা হয়েছিল, বাদশাহ আগেই গ্রেফতার হওয়া আরেক প্রিন্স ফয়সাল বিন আবদেল রহমানের বিষয়ে কথা বলতে তাকে ডেকেছেন। প্রিন্স ফয়সালের বিষয়টি কয়েক সপ্তাহ আগে বাদশাহকে বলেছিলেন তিনি। সে অনুযায়ী, শুক্রবার সকালে প্রিন্স আহমেদ রাজ প্রাসাদে নিজের নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে প্রবেশ করেন। কিন্তু বাদশাহর কক্ষে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সূত্রগুলো জানায়, ‘তিনি বাদশাহকে দেখতেই পাননি। তার সঙ্গে পুরোপুরি বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।’ ওই সূত্র জানিয়েছে, এ্যালিজিয়েন্স কাউন্সিলের আরেক সদস্যও একই সঙ্গে আটক হয়েছেন। -মিডল ইস্ট আইয়
×