ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

জবি ক্যাম্পাসে ২০টির অধিক মাদক সেবনের স্পট

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ৭ মার্চ ২০২০

 জবি ক্যাম্পাসে ২০টির অধিক মাদক সেবনের স্পট

জবি সংবাদদাতা ॥ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) আয়তনে ছোট হলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে রয়েছে অসংখ্য মাদক সেবনের জায়গা। একমাত্র অনাবাসিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে প্রায় ২০টির অধিক মাদক সেবনের স্পট। সকাল থেকে রাত যে কোন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় চলে হরেক রকমের মাদক সেবন। প্রশাসনের তেমন কোন বাধা ধরা না থাকায় দিন-রাত এসকল স্পটে চলে অবাধে মাদকসেবী শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট কিছু স্থানসহ সদরঘাট ফুটওভার ব্রিজ ও জবি টিএসসিতে সন্ধ্যার সময় চলে মাদকসেবীদের আড্ডা। ক্লাস চলাকালীন সময় থেকে শুরু করে সারারাত ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে মাদকসেবীদের আনাগোনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে মাদকসেবনের স্পটগুলোর মধ্যে সুনির্দিষ্ট কিছু স্পটের মধ্যে শুধুমাত্র বিবিএ বিল্ডিং এ রয়েছে প্রায় ৬ থেকে ৭টি স্পট। এর মধ্যে অডিটোরিয়ামের দ্বিতীয় গেটের পাশে, বিবিএ বিল্ডিং এ প্রবেশ করতে একদম ডান পাশের কর্নারে, বিবিএ বিল্ডিংয়ের নিচতলার টয়লেট, ক্লাস চলাকালীন সময়ে মার্কেটিং ও ফিন্যান্স এর ওয়াশরুম, বিবিএ বিল্ডিংয়ের ছাদে। আন্ডারগ্রাউন্ডে সন্ধ্যা বেলায় চলে ফেনসিডিল সেবন। এছাড়াও ক্যাম্পাস চলাকালীন সময়ে গেটের বাইরে রাখা দোতলা বাসের উপরের তলায় চলে অবাধে গাঁজা সেবন। কলা ভবনের আশপাশেও রয়েছে কয়েকটি মাদক স্পট। এর মধ্যে সমাজকর্ম বিভাগের পিছনে, রেভেনাস ক্যান্টিনের পিছনে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের কর্নারে সন্ধ্যা হলেই মাদকের পসরা বসে। এছাড়াও বিজ্ঞান অনুষদেও রয়েছে কয়েকটি নির্দিষ্ট স্পট। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতে পার্ক করা জবির বাসগুলোর চিপায়, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আশপাশে, বিজ্ঞান অনুষদের নিচতলায়। সন্ধ্যার সময় এই জায়গাগুলো তুলনামূলক অন্ধকারাচ্ছন হওয়ায় মাদকসেবীদের জন্য খুবই নিরাপদ জায়গা হয়। দিনের বেলায় চারুকলা বিভাগের ছাদেও অবাধে চলে মাদক সেবন ও আড্ডা। শুধুমাত্র যে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরেই চলে মাদক সেবন তা কিন্তু নয়। নির্মাণাধীন ছাত্রী হলে চলে অবাধে ইয়াবা, গাঁজা, মদ ও ফেনসিডিল সেবন। সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায় নির্মাণাধীন কয়েকটি ফ্লোরে পড়ে রয়েছে গাঁজা সেবনের উপকরণ, মদের বোতল, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম ও ফেনসিডিলের খালি বোতল। এছাড়াও ক্যাম্পাসের বিপরীতে জবি টিএসসির হোটেলগুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে ফলে অনেক মাদকসেবী সেখানেও মাদক সেবন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসকল মাদকের জোগানদাতা পুরান ঢাকা ও এর আশপাশের কিছু মাদকব্যবসায়ী। এসকল মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মাদকসেবী শিক্ষার্থীদের মধ্যস্ততা করে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু শিক্ষার্থীরা। ফলে অনেকেই জড়িয়ে পড়ছে এসকল মাদক বিক্রিতে। তাঁতীবাজার, কলতাবাজার, লক্ষ্মীবাজার, মুরগীটোলা মোড়, সদরঘাটসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা জোগাড় করেন এসকল মাদকদ্রব্য। এ ব্যাপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়ে প্রক্টোরিয়াল বডি অবগত আছেন। আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান অব্যাহত রেখেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গাগুলোতে দ্রুতই আলোর ব্যবস্থা করা হবে। কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, মাদক বিক্রেতাদের ব্যাপারে আমরা সব সময়ই সজাগ রয়েছি। এছাড়াও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা এদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনছি।
×