ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

কিউই বধে কোহলির হুঙ্কার

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  কিউই বধে কোহলির হুঙ্কার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাদা চোখে দেখলে ৫-০তে জয়ের পথে টি২০ সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। কিন্তু ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যা ভিন্ন ইঙ্গিত দেয়। সিরিজের দুটি ম্যাচে বিরাট কোহলির দল জিতেছিল সুপার ওভারে, একটিতে ৭ রানে। সেখানে ফলটা যে উল্টো হতে পারত ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে জয়ের পথেই কিউইরা সেটি দেখিয়ে দিয়েছে। এবার আভিজাত্যের টেস্ট দ্বৈরথ। প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রী এবং অধিনায়ক কোহলি দু’জনই বলেছেন, টেস্টের ভারত অন্য এক দল, যে দলটা বিশ্বের যে কোন স্থানে যে কোন প্রতিপক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দিতে সক্ষম। বিশ্বকাপের পর থেকে নতুন প্রবর্তিত আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এ পর্যন্ত সাত ম্যাচের সবকটি জিতে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ভারত। পাঁচ ম্যাচে চার হারের বিপরীতে একটি মাত্র জয়ে ছয় নম্বরে নিউজিল্যান্ড। সর্বশেষ প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়া থেকে বিধ্বস্ত হয়ে ফেরা কেন উইলিয়ামসনের দল এবার ঘরের মাটিতে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া। শুক্রবার ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে শুরু হতে যাওয়া দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে অবশ্য আলোচনায় শততম টেস্ট খেলতে নামা রস টেইলর। ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর কোচ রবি শাস্ত্রী বলেছিলেন, টি২০ বিশ্বকাপের বছর আর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ের পথে সেটিকে খুব একটা বড় করে দেখছে না তার দল। সাদা পোশাকে উড়তে থাকা অধিনায়ক কোহলির কণ্ঠেও একই সুর, ‘প্রতিপক্ষ যে দলই হোক না কেন, তাদের টেক্কা দেয়ার মতো ফিটনেস ও মনোসংযোগের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি আমরা। টেস্টে ধারাবাহিক সাফল্যের আত্মবিশ্বাসই আমাদের সঙ্গী। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের একটা বড় ভূমিকা থাকে। তাই এমন মানসিক অবস্থায় থাকতে হয় যেখানে এসব পাত্তা পায় না। আর নিউজিল্যান্ডে শ্ঙ্খৃলাপরায়ণ থাকা জরুরী। সারাদিন ধরে ওরা ধৈর্যের পরীক্ষা নেয়। ওরা দারুণ ফিটও। বোলার-ব্যাটসম্যানরা সবাই। ফিল্ডিংও অসাধারণ। তাই সুযোগের সদ্ব্যবহার করা জরুরী। এ জন্য ফোকাসড থাকতে হয়। সম্প্রতি টেস্টে আমরা সেটাই করে এসেছি। এমনকি বিদেশের মাটিতেও। আমরা ব্যাটে-বলে সমান আগ্রাসী থাকতে চাই, তবে আচরণে নয়। কারণ আগেই বলেছি প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউজিল্যান্ডের কোন তুলনা হয় না।’ সফরে কোহলির নিজের পারফর্মেন্স অবশ্য মোটেই সন্তোষজনক নয়। ওয়ানডে, টি২০ ও প্রস্তুতি ম্যাচ মিলিয়ে সাত ইনিংসে একটি মাত্র হাফ সেঞ্চুরিÑ ৪৫, ১১, ৩৮, ১১, ৫১, ১৫ ও ৯। সুতরাং কেবল অধিনায়ক হিসেবে নয়, দুই টেস্টের সিরজটা ব্যাটসম্যান কোহলির জন্য চেনা ছন্দে ফেরার চ্যালেঞ্জ। তবে বড় মাছ শিকারের হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন ট্রেন্ট বোল্টও। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা কিউই তারকা পেসার বলেন, ‘কোহলির মতো ব্যাটসম্যানের উইকেট নেয়ার জন্যই আমি খেলতে নামি। বেসিন রিজার্ভ টেস্টে নামার অপেক্ষায় মুখিয়ে আছি। কোহলি কেমন খেলে, সেটি সবাই জানে। ও সবার চেয়ে আলাদা। আর আমি জানি, ওকে দ্রুত ফেরাতে পারলে দলের জন্য তা কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। জানি কাজটা সহজ নয়, তবে আমি প্রস্তুত।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘ভারত দুর্দান্ত দল। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষে রয়েছে। কোহলিরা যেভাবে খেলতে চায় সেভাবেই খেলে চলেছে। অস্ট্রেলিয়া সফরে আমাদের জন্য কাজটা খুবই কঠিন ছিল। নিজেদের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে চাই। অধিনায়ক কেনও (উইলিয়ামসন) পুরোপুরি ফিট।’ একজনের কথা আলাদা করে না বললেই নয়। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে, টি২০ ও টেস্টের প্রতিটি ভার্সনে ১০০টি করে ম্যাচ খেলার অনন্য কীর্তির সামনে দাঁড়িয়ে সাবেক নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। শুক্রবার বেসিন রিজার্ভে নিজের শততম টেস্টে পা রেখেই অনন্য এই অর্জনে নাম লেখাবেন ৩৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। টেইলর বলেন, ‘সত্যি বলতে কখনই ভবিনি প্রতিটি ভার্সনে ১০০টি করে ম্যাচ খেলতে পারব। টেস্টে তো নয়ই। এ জন্য সতীর্থদের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে রেকর্ড বা ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দেশের হয়ে খেলাটাই আমার কাছে বেশি গর্বের। প্রতিপক্ষ শিবিরে জাসপ্রিত বুমরাহর মতো দুর্ধর্ষ পেসার থাকলেও অভিজ্ঞ টেইলর ইশান্ত শর্মা সম্পর্কে সতীর্থদের সতর্ক করে দিয়েছেন। বলেছেন লাল বলে ইশান্ত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। ২০১৩-২০১৪ মৌসুমে সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্টে ১-০তে হেরেছিল ভারত, ২০১৬-২০১৭ মৌসুমে ঘরের মাটিতে জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানে। ১৯৫৫ থেকে এ পর্যন্ত মুখোমুখি ৫৭ টেস্টের ২১টিতে জিতে এগিয়ে ভারত, নিউজিল্যান্ডের জয় ১০ ম্যাচে। ড্র হয় ২৬টি টেস্ট।
×