ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

চীনফেরতদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:০৫, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

চীনফেরতদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চীনে করোনা ভাইরাস নিয়ে চলমান সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে থাকা আগ্রহী বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চীনফেরত ওই বাংলাদেশীদের কেউ করোনা ভাইরাসের বাহক কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা-সিলেট চার লেন রোড তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে সিলেটের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। খবর বাংলানিউজের। আব্দুল মোমেন বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে চীন থেকে প্রবাসীরা বাংলাদেশে ফিরলে এখানেও তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। আমরা চাই না, আমাদের এখানেও এটা ছড়িয়ে পড়ুক। তবে চীন এ বিষয়ে খুবই কড়া। ১৪ দিন না হলে তাদের ফিরতে দেবে না। আমরা আগ্রহীদের ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত। তবে বাংলাদেশীরা ওখানে থাকলে ভাল সেবা পাবেন।’ ঢাকা-সিলেট চার লেন রোড প্রকল্প প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকা-সিলেট চার লেন রোডের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। আগামী ৫০ বছরে যেন এ রুটে যাতায়াতের সমস্যা না হয়, সেই পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকা-সিলেট রোড তৈরি করা হবে।’ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ, বেসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, মৌলভীবাজার-২ আসনের সুলতান মোঃ মনসুর আহমদ প্রমুখ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে মেডিক্যাল ক্যাম্প স্টাফ রিপোর্টার জানান, চীনে প্রাণঘাতী ‘করোনা ভাইরাস’ ছড়িয়ে পড়ায় পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন দিয়ে পারাপার হওয়া মানুষদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বসানো হয়েছে মেডিক্যাল ক্যাম্প। এক স্বাস্থ্য সহকারী ও একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার দ্বারা পরিচালিত এই ক্যাম্পে প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে গিয়ে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে ভারত, ভুটান ও নেপাল থেকে আসা পাসপোর্টধারী যাত্রীদের। মেডিক্যাল ক্যাম্পে দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলছেন, স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ভারত, নেপাল, ভুটান থেকে বাংলাদেশে আগত প্রতিটি পাসপোর্টধারী যাত্রীর পাসপোর্ট রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করে তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তাদের কাছে করোনা ভাইরাস শনাক্তের কোন যন্ত্র নেই। প্রতিটি যাত্রীর পাসপোর্ট রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করার কারণে কিছুটা সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বলে সেখানে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীরা স্বীকার করেন। তবে তাদের এই স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছেন ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে আসা পণ্যবাহী গাড়ির চালকরা। প্রতিদিন কয়েক শ’ চালক পণ্যবাহী গাড়ি নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকছে এবং বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর এলাকায় অবাধে চলাফেরা করছে। অথচ বাংলাবান্ধার ওপারে ভারতের ফুলবাড়ি। সেখান থেকে কাছেই ভারতের সিকিম, নেপাল ও ভুটানে রয়েছে চীন সীমান্ত। তাই স্বাভাবিকভাবে পণ্য নিয়ে আসা গাড়ির চালকদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ গত মঙ্গলবার থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের একটি কক্ষে মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করে। চীনা নাগরিকদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক না থাকলেও উৎকণ্ঠা রয়েছে করোনা ভাইরাসের খবরে। বিশেষ করে ধানখালীর পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রসহ তার আশেপাশের এলাকায় কর্মরত আড়াই হাজার চীনা নাগরিকের পদচারণায় এমন উৎকণ্ঠায় রয়েছেন মানুষ। পাবলিক প্লেসে চীনা নাগরিকরা বের হলেই মানুষের মনে পড়ে করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত আলোচনা। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডাঃ জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে একটি টিম ধানখালীর বিদ্যুত প্লান্ট অভ্যন্তরের মিলনায়তনে বিসিপিসিএলের কর্মকর্তা এবং চীনা প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত করণীয় সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ভাইরাসের কবল থেকে নিরাপদে থাকতে করণীয় বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য বিভাগ ও বিসিপিসিএলের কর্মকর্তাবৃন্দ। সভায় কোন চীনা নাগরিককে তাদের দেশে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। অতি সম্প্রতি যারা চীনে গেছেন, তাদেরকে এ মুহূর্তে না ফেরার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া চীনা নাগরিকসহ এই বিদ্যুত প্লান্টে কর্মরত প্রায় ছয় হাজার বাঙালী শ্রমিকের প্রত্যেককে মাস্ক ব্যবহার করে কর্মক্ষেত্রে অংশ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
×