স্টাফ রিপোর্টার ॥ অসচেতনতার অভাবে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য চিহ্নিতকরণে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। একটি জাতির গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। ইউনেস্কো সাংস্কৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্ভাব্য তালিকা হালনাগাদকরণে এক মতবিনিময় সভা হয় ঢাকার আগারগাঁওয়ের প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের সেমিনার কক্ষে সোমবার বিকেলে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হান্নান মিয়া। সভায় একক বক্তা ছিলেন আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ ও সাংস্কৃতিক পর্যটন বিশেষজ্ঞ ড. শরীফ শামস ইমন।
শরীফ শামস জানান, গত ২০ বছর আগে বাংলাদেশের বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল। সেখানে স্থান পেয়েছে মাত্র পাঁচটি স্থাপনা। এই দিক থেকে এগিয়ে আছে ভারত, পাকিস্তান ও নেপাল। সাম্প্রতিক সময়ে দেশগুলোর ঐতিহ্যের সংখ্যা পৌঁছেছে যথাক্রমে ৪২, ২৬ ও ১৫টিতে।
ড. শরীফ শামস ইমন বলেন, যে পাঁচটা সাইট দেয়া আছে এর মধ্যে কোন কোন জিনিসগুলোকে আমরা সিলেক্ট করতে পারি। আমাদের পুরনো ধারণার যে আইডোলজিক্যাল সায়েন্স, মনুমেন্টস এগুলোই শুধু লিস্টে আনা যেতে পারে। কিন্তু সে ধারণা এখন পাল্টে গেছে। শুধু ওয়ার্ল্ড এরিটেজের ক্ষেত্রে নয়, পঞ্চাশের দশক থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বিশ্বে কনজারভেশন নিয়ে যেসব আলোচনা হচ্ছে সেখানে এ মনুমেন্টসগুলো এখন আর একমাত্র যোগ্যতা নয়। এর বাইরেও অনেক কিছু আছে যেটা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজে যেতে পারে। বাংলাদেশে এই লিস্টে ইতোমধ্যে যে পাঁচটি সাইট আছে যা ১৯৯৯ সালে সাবমিট করা আছে এর মধ্যে দেখতে হবে এগুলো এখন কি অবস্থায় আছে। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হওয়ার মতো পসেবিলিটি তার কতটুকু আছে। এগুলো বলার জন্যই আপনাদের সবাইকে এখানে ডাকা হয়েছে। আমি জানি আপনারা অনেকেই ইনডিভিজুয়ালি কাজ করছেন কিন্তু হয়তো কালেকটিভিলি কাজ করছেন না। একসঙ্গে বসে কাজটা করা হচ্ছে না। আমাদের বর্তমান ডিজি মহোদয় চাচ্ছেন যে আপনারা সব সময়ই আসুন একসঙ্গে কাজ করুন। একজন দুজন এক্সপার্ট এসে এসব কাজগুলো করা সম্ভব না। আমাদের দেশের ঐতিহ্য কিন্তু আমরা জানি অনেক পুরনো কিন্তু সেরকম কিছুই করা হয়নি। এটা নিয়ে এগিয়ে আসা খুবই দরকার। যদি আমরা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের কথা বলি যেমন সিডনি অপেরা হাউস বা তাজমহল সেখানে কিন্তু দেখি চারশ বছর পুরনো বয়স কোন ফ্যাক্টর হয়নি।
বিশেষজ্ঞ ও আগ্রহীদের এ ঐতিহ্যের তালিকা হালনাগাদকরণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শরীফ শামস বলেন, এ কাজটি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সম্মিলিতভাবে সচেতন ও এ বিষয়ে আগ্রহীরা এ কাজে এগিয়ে এলে দেশ উপকৃত হবে।
তিনি জানান, আমরা অনেকেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন নই। অথচ যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে অনেক প্রাচীন স্থাপনা, দর্শনীয় স্থান, দালানগুচ্ছ ও দৃশ্যকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে। এর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত সচিব প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হান্নান মিয়া। তিনি বলেন, আজ আমরা সকলে আন্তর্জাতিক পরামর্শক বিশেষজ্ঞ বক্তা ড. শরীফ শামস ইমন সাহেবের ছাত্র।