ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে এবার স্থাপন হচ্ছে অপরাধ তদন্ত বিভাগের ল্যাব

প্রকাশিত: ০৭:৫৭, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

  রাজশাহীতে এবার স্থাপন  হচ্ছে অপরাধ তদন্ত বিভাগের ল্যাব

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ঢাকা ও চট্টগ্রামের পর এবার রাজশাহীতে চালু হচ্ছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ল্যাব। ইতোমধ্যে ল্যাব স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজশাহী পুলিশ লাইন্সে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি আইজিপি ড. মোঃ জাবেদ পাটোয়ারী ফরেনসিক ল্যাবটি উদ্বোধন করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সূত্র জানায়, এই ল্যাব চালু হলে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলার সব মামলার আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আর ঢাকায় যেতে হবে না। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি শনাক্ত ও মামলা তদন্তে গতি আসবে বলে মনে করছেন সিআইডির কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ক্লুলেস বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটন ও বিভিন্ন আলামত, ডিএনএ ও সাইবার টেস্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ আলামত পরীক্ষার জন্য সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব বর্তমানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা রহস্য উদঘাটনে ঢাকার ফরেনসিক ল্যাবে যোগাযোগ করতে হয়। এতে সময় বেশি প্রয়োজন হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট দিতেও দেরি হয়। ফলে মামলার তদন্ত কাজ আটকে থাকে। এ জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে ফরেনসিক ল্যাব বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে রাজশাহী পুলিশ লাইন্সে এ ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। রাজশাহী সিআইডির ফরেনসিক শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আব্দুর রহিম বলেন, ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনের সব ধরনের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি আইজিপি ড. মোঃ জাবেদ পাটোয়ারী ফরেনসিক ল্যাবটির উদ্বোধন করার পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে। এর ফলে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর সকল পরীক্ষা এখানে করতে পারবে। কাউকে আর ঢাকায় যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। এর ফলে সময় বাঁচবে এবং তদন্ত কাজও দ্রুত এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। সিআইডির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষাগারটিতে রাসায়নিক, ব্যালিস্টিকস, হস্তলিপি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, অণু বিশ্লেষণ, ফুটপ্রিন্ট ও জালনোট শনাক্ত করার ব্যবস্থা রয়েছে। এরমধ্যে রাসায়নিক পরীক্ষাগারে ভিসেরা, নারকোটিক ও এসিড টেস্টসহ আরও কয়েকটি আইটেম পরীক্ষা করা হবে। রাসায়নিক পরীক্ষাগারের মধ্যে রয়েছে সব ধরনের মাদকদ্রব্য, মৃত মানুষ ও পশু-পাখির ভিসেরা, কবর থেকে উত্তোলিত হাড়, চুল, মাটি ও সফট টিস্যু, বিষাক্ত বা চেতনানাশক পদার্থের উপস্থিতি, রক্ত মিশ্রিত আলামতে রক্তের উপস্থিতি, এসিড মিশ্রিত আলামতে রক্তের উপস্থিতি, বিস্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য পদার্থ, জাল টাকা তৈরিতে ব্যবহৃত কেমিক্যাল, জিএসআরসহ বিভিন্ন আলামতের রাসায়নিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মতামত দেয়া। ফিঙ্গারপ্রিন্ট শাখার মধ্যে রয়েছে ক্রাইমসিন থেকে সংগৃহীত দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে সন্দেহভাজনদের আঙ্গুলের ছাপের তুলনামূলক পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞ মতামত দেয়া এবং সংগৃহীত ফিঙ্গারপ্রিন্ট ল্যাটেস্ট প্রিন্ট এএফআইএস ডাটাবেজে সংরক্ষিত ফিঙ্গারপ্রিন্টের সঙ্গে তল্লাশি করে মিল বা অমিল সম্পর্কে মতামত দেয়া। এছাড়া হস্তলিপি শাখার কাজ হচ্ছে বিচারাধীন দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলায় বিবাদমান দলিলের লেখা বা স্বাক্ষর জাল, নম্বর ঘষামাজা করে বা রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার করে অবমোচন করা হলে তা পরীক্ষা করে মতামত দেয়া।
×