ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে নারীর তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ১১ জানুয়ারি ২০২০

 রাজশাহীতে নারীর  তিন লাখ  টাকা হাতিয়ে নিয়েছে  প্রতারক

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এক নারীকে ভুল বুঝিয়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে এখন চরম প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে রাজশাহীর শেখ ফরিদ নামের এক ‘প্রতারক’। এখন টাকা তো দূরের কথা ওই নারীকে অব্যাহত হুমকি-ধমকি দিচ্ছে ওই প্রতারক। কখনও স্থানীয় এমপির লোক তো কখনও উপজেলা চেয়ারম্যানের লোক পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করে চলেছে ফরিদ হোসেন নামের ওই ব্যক্তি। এ নিয়ে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন ও পবা উপজেলা চেয়ারম্যান মনসুর রহমানও শেখ ফরিদের ওপর চরম ক্ষিপ্ত। তারাও চেষ্টা করে আদায়ে ব্যর্থ হয়ে আইনের মাধ্যমে টাকা আদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন প্রতারণার শিকার নারীকে। প্রতারণার শিকার নারীর নাম ফাহমিদা মাহবুব কেয়া। তিনি রাজশাহী নগরীর রানীবাজার বাটারগলি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম এমএম ওয়ালিউল মাহবুব। আর প্রতারক শেখ ফরিদের বাড়ি নগরীর রাজপাড়া থানাধীন ভেড়িপাড়া এলাকায়। পবা উপজেলায় তার একটি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। প্রায় তেলশূন্য এ ফিলিং স্টেশনের মালিক সেজে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে চলেছে এই শেখ ফরিদ। এ নিয়ে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক ডায়েরি করা হলেও অদৃশ্য খুঁটির জোরে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তার প্রতারণা ও মিথ্যা ষড়যন্ত্রে ক্ষিপ্ত নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র। তিনি জানান, বিষয়টি সুরাহা করার জন্য তাকে একাধিকবার থানায় তলব করা হলেও শুধু কালক্ষেপণ করে চলেছে। অবশেষে থানার ওসিও ওই নারীকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অবশেষে বাধ্য হয়ে প্রতারণার শিকার ফাহমিদা মাহবুব কেয়া টাকা ফেরত পেতে প্রতারক শেখ ফরিদের (৪০) বিরুদ্ধে প্রথমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও পরে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছেন। কেয়া জানান, গত বছরের ৬ জুলাই পূর্ব পরিচিত শেখ ফরিদকে ব্যবসায়িক কাজের জন্য প্রথমে ২ লাখ টাকা প্রদান করেন কেয়া। এর দুই মাস পরে ১ আগস্ট আরও ১ লাখ টাকা ফরিদকে প্রদান করেন তিনি। এ সময় শেখ ফরিদ তাকে দুইটি চেক প্রদান করেন। চেক দুইটির নম্বর যথাক্রমে ০৯৮৭৪২৬ ও ০৯৮৪৯১৭। এদিকে দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরে শেখ ফরিদের কাছে টাকা ফেরত চান কেয়া। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকে সে। একসময় যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে শেখ ফরিদের দেয়া চেক দুইটি নিয়ে উত্তরা ব্যাংকে নগদায়ন করতে যান কেয়া। কিন্তু ফরিদের এ্যাকাউন্টে কোন টাকা নেই বলে সর্টিফিকেট দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এতে বিপাকে পড়েন কেয়া। তিনি বলেন, চেক ডিজঅনারের মামলার প্রক্রিয়া হিসেবে তার নামে জিডি করা হলে চতুর শেখ ফরিদ তা বুঝতে পেরে তার দুটি চেক হারিয়ে গেছে বলে উল্টো আদালতে মামলা দায়ের করেন কেয়ার বিরুদ্ধে। অথচ সেখানেই গরমিল পাকায় শেখ ফরিদ। তার আগেও যে কেয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করে রেখেছিলেন তা না জেনেই নিজে বাঁচতে মামলা করে কেয়াকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন। যদিও আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার শুনানির তারিখ নির্ধারিত রয়েছে। এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগযোগ করা হলে শেখ ফরিদ প্রথমে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যাবে বলে জানান। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর বলেন, এটি আদালতের মাধ্যমে সুরাহা হবে বলেই ফোন কেটে দেন। পরে আর ফোন রিসিভ করেননি।
×