বাংলাদেশ থেকে আম নেবে জাপান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাপান বাংলাদেশ থেকে আম আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ রয়েছে। একটি আদর্শ শিল্পপ্রতিষ্ঠান করার জন্য যা যা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করবে সরকার, তার এক শ’ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে। রবিবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে নিজ দফতরে কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো সাক্ষাত করতে এলে এ আগ্রহের কথা জানান তিনি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের দুর্দিনে যেসব দেশ বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে এগিয়ে এসেছে জাপানের স্থান সবার ওপরে। জাপান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে, অংশীদারিত্ব গড়ে তুলছে, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিবিড় করেছে। দেশের সব ধরনের সার কারখানায় জাপানের সহযোগিতা রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ জাপানের সরকার ও জনগণকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে সবসময়। কৃষিবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কৃষি উৎপাদন খরচ কমানোর লক্ষ্যে ডিএপি সারের মূল্য হ্রাস করেছে। বাণিজ্যিক ফুল চাষের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে যশোর জেলায় কৃষি মন্ত্রণালয় অধীন চাষকৃত ফুলবাগান পরিদর্শনের আহ্বান জানালে জাপানের রাষ্ট্রদূত তাতে সম্মতি জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করেছে। দারিদ্র্যের হার কমেছে, শিশু মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। কৃষিক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য খাদ্য ঘাটতির দেশটি আজ খাদ্য রফতানির মর্যাদা অর্জন করেছে। আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে কৃষিকে শতভাগ যান্ত্রিকীকরণ ও বহুমুখীকরণ করা হবে। কৃষি বাণিজ্যিকিকরণে, পোল্ট্রি বাণিজ্যিকিকরণে এবং ডেইরি বাণিজ্যিকিকরণে যেতে চায় বাংলাদেশ এ খাতে জাপানের সহযোগিতা প্রয়োজন। কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে রফতানি করা হবে এ নিয়ে কাজ চলছে। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে পাশে থাকা জাপান এবার কৃষি উন্নয়নেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের সহযোগিতার জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। এটি জাপান বাংলাদেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন। এ সময় মন্ত্রী কৃষিযন্ত্রে প্রণোদনার কথা উল্লেখ করেন। জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। এ টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সরকারী কোষাগার থেকে আসবে ৫ হাজার কোটি টাকা। আর বাকি অর্থ আসবে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) থেকে। জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং কোরিয়ার স্যামসং একটি কনসোর্টিয়াম হিসেবে টার্মিনালের নির্মাণ কাজ করবে। বাংলাদেশে এ মুহূর্তে প্রয়োজন দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ। ১৯৭৩ সালে কৃষিখাতে আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম কাজ করে জাইকা। অতীতের মতো বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে জাপানের সহযোগিতা থাকবে বলেন রাষ্ট্রদূত।