ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চলে গেলেন বীরাঙ্গনা আফিয়া খাতুন খঞ্জনী

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

চলে গেলেন বীরাঙ্গনা আফিয়া খাতুন খঞ্জনী

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা, ২৪ ডিসেম্বর ॥ বিজয়ের মাসেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন একাত্তর সালে পাকি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত বীরাঙ্গনা আফিয়া খাতুন খঞ্জনী। সোমবার রাত ৯টায় তার মেয়ের বাসা কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। মঙ্গলবার দুপুরে জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাপুর গ্রামে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার লাশ দাফন করা হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে নগরীর বাগিচাগাঁও মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আফিয়া খাতুন খঞ্জনী ১৯৩৯ সালে ফেনী জেলার বরইয়া চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাসমত আলী চৌধুরী ও মাতা মাসুদা খাতুন। ১৯৬৩ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ দিঘী ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের রুহুল আমিন মানিকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ১৯৬৪ সালে রোকসানা ও ১৯৬৫ সালে আবদুল মতিন নামে এক মেয়ে ও এক ছেলের মা হন তিনি। অল্প বয়সে হঠাৎ স্বামী মারা যাওয়ায় দুই শিশু সন্তান নিয়ে বিধবা আফিয়া খাতুন খঞ্জনী পড়েন অথৈ সাগরে। ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে কোনরকম দিন কাটছিল তাঁর। ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনীর দোসর-রাজাকারদের দেয়া তথ্যে তাতেই কপাল পোড়ে সুন্দরী এ খঞ্জনীর। জুন মাসের কোন একসময় পাকিস্তানি সেনাদলের এক হাবিলদারের নেতৃত্বে সোনাপুর থেকে আফিয়া খাতুনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় জগন্নাথ দিঘী ক্যাম্পে। এরপর তাঁর ওপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে গত চার মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর উপহার পেয়েছিলেন তিনি।
×