ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

গ্যালারি কায়ায় শাহানুর মামুনের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ১০:১৮, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

 গ্যালারি কায়ায় শাহানুর মামুনের চিত্রকর্ম  প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চিত্রপটে ছুঁয়ে গেছে কোমল রং। সেই রঙের শিল্পিত আঁচড়ে ভেসে উঠেছে মেঘের ভেলা। তারই মাঝে ক্যানভাসের উপরের অংশজুড়ে বিস্তৃতি ছড়িয়েছে নীল আকাশ। জলছবিটির জমিনে উঁকি দিচ্ছে শ্বেতশুভ্র কাশফুল। শরতের প্রতীকী দীর্ঘকায় পুষ্পগুচ্ছে লেগেছে বাতাসের দোলা। নিসর্গ আশ্রিত চিত্রকর্মটির পাশের ছবিতেই যান্ত্রিক জীবনের আভাস মেলে। চারকোলে আঁকা ছবিতে ধরা দিয়েছে সরু গলির ব্যস্ত জীবনচিত্র। আঁটসাঁট সড়কের দুই পাশের ঘরবাড়ি ঢেকে দিয়েছে আকাশ। অপ্রশস্ত সড়কে সমান্তরালে ছুটছে মানুষ ও মোটরযান। এভাবেই নিসর্গের সঙ্গে মানবিক জীবনের আখ্যান উদ্ভাসিত হয়েছে শাহানুর মামুনের চিত্রকর্মে। প্রকৃতি ও মানুষের সহাবস্থানের গল্পময় সেসব ছবি নিয়ে সাজানো প্রদর্শনীটির শিরোনাম ‘স্টোরিজ’। রাজধানীর উত্তরার গ্যালারি কায়ায় চলছে এই শিল্পায়োজন। অনেকটা গল্প বলার ধাঁচে চিত্রিত হয়েছে মামুনের চিত্রকর্ম। সেসব ছবিতে দেখা মেলে চায়ের দোকানে আড্ডা দেয়া মানুষের জমায়েত। কোন চিত্রকর্মে উঠে এসেছে গ্রামীণ জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ; হাটে যাওয়া প্রান্তিকজনের মুখচ্ছবি। রোমান্টিক আবহে আঁকা হয়েছে ঝুমবৃষ্টিতে হুডতোলা রিকশার ভিড়ে সারি সারি মানুষের মুখ। চমৎকারভাবে চিত্রিত হয়েছে শিল্পীর প্রিয় বিষয় পুরনো ঢাকার যাপিত জীবন। প্রতিটি ছবিই যেন দর্শনার্থীকে স্মরণ করিয়ে দেয় তার জীবনেরই কোন না কোন গল্পের কথা। স্পর্শ করে যায় জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতিকে। করে তোলে স্মৃতি স্মৃতিকাতর। শিল্পরসিকের নয়নে ছড়িয়ে দেয় ভাললাগার অনুভব। শাহানুর মামুনের ক্যানভাসে উঠে এসেছে প্রকৃতির মায়াবি সাঙ্গু নদী থেকে নগর জীবনের অবসরের সঙ্গী টং দোকান। জলরং ও চারকোলে আঁকা ছবিগুলোতে ঘটেছে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির সম্মিলন। বিশেষ করে পুরনো ঢাকার গলি, মানুষ এবং সেখানকার কর্মচাঞ্চল্য ভিন্নমাত্রা পেয়েছে মামুনের চিত্রপটে। সময়ের প্রতিভাবান চিত্রকর শাহানুর মামুনের ছবিতে মেলে রং ও বিষয়ের ঐকতান। মানুষের জীবন, প্রকৃতি, আলোছায়া ভিন্ন দ্যোতনা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে ক্যানভাসে। প্রদর্শনী প্রসঙ্গে শিল্পী শাহানুর মামুন বললেন, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক খুব নিবিড়। প্রকৃতির কথা বললে যেমন মানুষের কথাও চলে আসে তেমনি প্রকৃতির কথা বললে বাদ দেয়া যায় না মানুষকে। আর মানুষ ও প্রকৃতির গল্পে মিশে থাকে আলোছায়ার খেলা । সেই আলোছায়ার খেলাও যেন এক নতুন গল্প। শুক্রবার সূচনা হওয়া এ প্রদর্শনী প্রসঙ্গে শিল্পী চন্দ্র শেখর দে বলেন, শাহানুর মামুনের ছবি আঁকার সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পচর্চা থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছেন। সে গল্প বলেও খুব সহজ করে। জটিলতা কিংবা রহস্য সৃষ্টি করে না। এটা মানুষকে তার ছবির প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে অর্ধশতাধিক চিত্রকর্ম। ২২ নবেম্বর শুরু হওয়া প্রদর্শনী শেষ হবে ৭ ডিসেম্বর । প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। নাট্যোৎসব বটতলা রঙ্গমেলার নবম দিন রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে চলছে বটতলা রঙ্গমেলা শীর্ষক আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব। ‘নৃশংস নৈঃশব্দ ভেঙে সুনন্দ সাহস জাগুক প্রাণে প্রাণে’ শীর্ষক এ উৎসবের আয়োজক নাট্যদল বটতলা। ১১ দিনব্যাপী এ নাট্যায়োজোনের নবম দিন ছিল রবিবার। এদিন বিকেল ৫টায় তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন। অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদকে নিয়ে কাজী রোকসানা রুমা নির্মিত তথ্যচিত্রটি প্রদর্শিত হয় জাদুঘরের সেমিনার কক্ষের সুমন মঞ্চে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় জেগে উঠুক মানবতার জয়গান শীর্ষক সঙ্গীতানুষ্ঠানে পরিবেশনা করে ব্যান্ডদল মাদল। এর পর সন্ধ্যা ৭টায় বটতলা বিভাগীয় সম্মাননা তুলে দেয়া হয় খুলনা বিভাগের গুণী নাট্যজন রোহানী বেগম মেরীকে। অন্তরালের সম্মাননা তুলে দেয়া হয় মঞ্চ সহকারী মোঃ কামাল হোসেনকে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুখচর পঞ্চম রেপার্টরি থিয়েটার দলের নাটক ‘আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র’। রচনার পাশাপাশি প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন মলয় মিত্র। প্রদর্শনী শেষে নাটকের অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের হাতে স্মারক তুলে দেয়ার পর নির্দেশকের মুখোমুখি পর্বে শুরু হয় রঙ্গ আড্ডা।
×