ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানের ‘গর্বাচেভের’ বিদায় দাবি আজাদি মার্চে

প্রকাশিত: ০৮:৫৭, ৩ নভেম্বর ২০১৯

 পাকিস্তানের ‘গর্বাচেভের’ বিদায় দাবি আজাদি মার্চে

পাকিস্তানের কট্টর ইসলামী নেতা মাওলানা ফজলুর রেহমান দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পদত্যাগের জন্য দুই দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন। শুক্রবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত আজাদি মার্চে ইমরান খানকে পাকিস্তানের গর্বাচেভ আখ্যা দিয়ে মাওলানা ফজলুর রেহমান বলেন, ইমরান খানকে অবশ্যই গদি ছাড়তে হবে। কারণ পাকিস্তানের মানুষের এদেশ শাসন করার অধিকার রয়েছে কোন প্রতিষ্ঠানের নয়। পাকিস্তানের ডানপন্থী রাজনৈতিক দল জমিয়াত উলেমা-ই-ইসলামের ডাকে এই আজাদি মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। ফজলুর রেহমানের দল জমিয়াত উলেমা-ই-ইসলামের পাশাপাশি শুক্রবারের আজাদি মার্চে পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ), পাকিস্তান পিপল্্স পার্টি (পিপিপি) ও আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি) যোগ দেয়। গত ১৮ মাস আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন ইমরান। ওই নির্বাচনে ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ বিপুল ব্যবধানে জয় পায়। এদিকে শুক্রবারের আজাদি মার্চে কোন নারীকে অংশ নিতে দেয়া হয়নি। খবর বিবিসি, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন ও এনডিটিভি অনলাইনের। গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই আজাদি মার্চ আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, শুক্রবারের সমাবেশে কোন নারী প্রতিনিধি অংশ নিতে পারবেন না। নারীরা ঘরে অবস্থান করে রোজা ও নামাজের মাধ্যমে সমাবেশের সফলতা কামনা করবেন। একই সঙ্গে কোন নারী সাংবাদিকের শুক্রবারের সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি ছিল না। অনেক নারী এসব উপেক্ষা করে আজাদি মার্চে অংশ নিতে চাইলেও তাদের বাধা দেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানী নারী সাংবাদিক শিফা জেড ইউসুফজাই বলেন, সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আমাকে বলা হয়, এখানে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। আপনি এখনই চলে যান। এরপর একদল লোক এসে আমাকে ঘিরে স্লোগান দিতে থাকে। আমরা বিক্ষোভস্থল ত্যাগ করি। পরে মাওলানা ফজলুর রেহমানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তিনি বলেন, নারীদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান রয়েছে। কোন নারী সাংবাদিক পূর্ণ ড্রেস কোড মানলে তাকে সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি দেয়া হবে। শুক্রবারের আজাদি মার্চে নারীদের অংশ নিতে না দেয়ায় দেশটির সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। বেনজির শাহ নামের এক সাংবাদিক টুইটারে বলেন, এই বিক্ষোভে আমরা সমাজ পরিবর্তনের কোন বার্তা পেলাম না। কারণ লেবাননে চলমান বিক্ষোভে পুরুষের পাশাপাশি সমানসংখ্যক নারী অংশ নিয়েছেন। অথচ পাকিস্তানে ঘটছে এর উল্টো। এদিকে এই আজাদি মার্চকে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। কারণ মাওলানা ফজলুর রেহমান পাকিস্তানের অপর বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে ইমরানের পদত্যাগের জন্য আগামী ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন। ফজলুর রেহমান বলেন, অস্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন ইমরান খান। অবশ্য পাকিস্তানের ২০১৮ সালের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক মিশন বলেছিল নির্বাচনে ভোট কারচুপির কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমস্যা উত্তোরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন ইমরান খান। অবশ্য এই ১৮ মাসে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমস্যা কাটানোর তেমন কোন আলামত পাওয়া যায়নি। ফজলুর রেহমান সমর্থকদের উদ্দেশে শুক্রবার বলেন, ইমরান জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসেননি। কোন প্রতিষ্ঠানের ইশারায় ক্ষমতায় এসেছেন। ইমরান তাই সেই প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছা পূরণে ব্যস্ত। তিনি বলেন, ইমরান খান পাকিস্তানের অর্থনীতিকে একেবারে শেষ করে ফেলেছেন। তাই পাকিস্তানের গর্বাচেভ ইমরান খানকে এখনই বিদায় নিতে হবে। পাকিস্তানের জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। কারণ গত এক বছরে ইমরান দেশের জন্য কিছুই করেননি।
×