ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাইফের ডাবল, ইমরুলের আক্ষেপ

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

 সাইফের ডাবল, ইমরুলের আক্ষেপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সেঞ্চুরি প্রথমদিনেই করেছিলেন। ১২০ রান করে অসুস্থতায় স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছিলেন। জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয়দিনে আবার ব্যাট হাতে নেমে সেঞ্চুরিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে পরিণত করেন ঢাকা বিভাগের সাইফ। তার অপরাজিত ২২০ রানের ইনিংসে রংপুরের বিরুদ্ধে ঢাকা বিভাগও ৫৫৬ রানের পাহাড় গড়ে। খুলনার ইমরুল কায়েস আবারও সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে চলে যান। প্রথম রাউন্ডে ডাবল সেঞ্চুরি করার পর দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরির একেবারে কাছে গিয়েও হলো না। ৭ রানের আক্ষেপ রয়ে গেল ইমরুলের। ৯৩ রানেই রান আউট হয়ে যান। প্রথম স্তর চট্টগ্রামে ঢাকা ও রংপুরের ম্যাচটি ঢাকার নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তা প্রথমদিন সাইফের ১৭৩ বলে ১৩ চার ও ৩ ছক্কায় করা অপরাজিত ১২০ রানের দাপুটে ইনিংসেই বোঝা যাচ্ছিল। এই রান করার পর অসুস্থতায় স্বেচ্ছা অবসর নিয়েছিলেন সাইফ। দ্বিতীয়দিন যখন ‘নাইটওয়াচম্যান’ হিসেবে প্রথমদিন নামা সুমন খান আউট হন তখন আবার সাইফ ব্যাট হাতে নামেন। শেষ পর্যন্ত ৩১৬ বলে ২০০ রান করা সাইফ ৩২৯ বলে ১৯ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ২২০ রান করেন। দলের রানও ৮ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ রানে চলে যায়। প্রথমদিন ৪ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করে ফেলে ঢাকা। দ্বিতীয়দিন এর সঙ্গে আরও ২৪২ রান যোগ করে। শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের হয়ে সর্বশেষ ম্যাচটিতে সেঞ্চুরি করা সাইফ একাই দ্বিতীয়দিন আরও ১০০ রান যোগ করেন। রানের পাহাড় গড়ে ইনিংসও ঘোষণা করে দেয় ঢাকা বিভাগ। জবাব দিতে নেমে লিটন কুমার দাসের অপরাজিত ৫১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ৭১ রান করে রংপুর। দ্বিতীয়দিন তখন শেষ হয়। এখনও রংপুর ৪৮৫ রানে পিছিয়ে আছে। খুলনায় খুলনার দাপটে প্রথম ইনিংসেই বিপদে পড়ে রাজশাহী। মিরাজ (৪/৩৮) দুর্দান্ত বোলিং করে রাজশাহীকে (২৬১ রানেই অলআউট) বিপদে ফেলেন। দ্বিতীয়দিন খুলনা প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমেও যে অনেক ভাল করেছে তা নয়। তবে খুলনার হয়ে ইমরুল কায়েস আলো ছড়িয়েই চলেছেন। যদিও ৭ রানের আক্ষেপ তার রয়ে গেছে। ৯৩ রান করে ফেলেন। কিন্তু আর ৭ রানের জন্য টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা পেলেন না। প্রথম রাউন্ডে অপরাজিত ২০২ রানের ইনিংস খেলার পর দ্বিতীয় রাউন্ডেও সেঞ্চুরির কাছে চলে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্য। রান আউট হয়ে যান ইমরুল। ১৯০ বলে ১০ চারে ৯৩ রান করেন। ইমরুলের এ ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান করে খুলনা। এখনও ৩৪ রানে পিছিয়ে রয়েছে খুলনা। আজ নুরুল হাসান সোহান (৩৫*) আব্দুর রাজ্জাককে (৭*) নিয়ে তৃতীয়দিনের খেলা শুরু করবেন। ইমরুল পরীক্ষিত হয়ে গেছেন। তবে ম্যাচটিতে সৌম্য সরকারের দিকে নজর ছিল। ভারত সফরের টি২০ দলে সুযোগ পাওয়ার পরদিনই রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে যান সৌম্য। প্রথম রাউন্ডেও এক ইনিংস ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ৩৬ রানের বেশি করতে পারেননি। খুলনাতেই খেলছেন ইমরুল ও সৌম্য। ভারত সফরে টেস্ট সিরিজের আগে এ দুইজনের একটা পরীক্ষাও চলছে। যাতে পাস মার্ক শুধু ইমরুলের ঝুলিতেই জমা হচ্ছে। দ্বিতীয় স্তর ফতুল্লায় প্রথমদিনেই তিন হাফ সেঞ্চুরিতে বরিশালের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম দুর্দান্ত করেছে। ৪ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ২৬১ রান করেছিল। মাহিদুল ইসলাম অংকন অপরাজিত ৬৯ ও ইয়াসির আলী অপরাজিত ৬৮ রান করেছিলেন। দ্বিতীয়দিন অংকন অনেকদূর এগিয়ে গেলেও ইয়াসির ২ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি। অংকন ৯১ রান পর্যন্ত যান। ৯ রানের জন্য প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি করতে পারেননি অংকন। তার এই বড় ইনিংসের সঙ্গে মাসুম খানের অপরাজিত ৫০ রানে ৩৫৬ রান করে অলআউট হয় চট্টগ্রাম। প্রথমদিনের সঙ্গে দ্বিতীয়দিন আরও ৯৫ রান স্কোরবোর্ডে যোগ হয়। বড় সংগ্রহই গড়ে চট্টগ্রাম। বরিশালও বিপদে পড়ে যাচ্ছে। প্রথম রাউন্ডে একমাত্র দল হিসেবে জেতা বরিশাল দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান করেছে। দ্বিতীয়দিন শেষ হয়েছে। রাফসানের ৪৯ রানে এই রান করতে পেরেছে বরিশাল। মোহাম্মদ আশরাফুল ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৪ রান করে করেছেন। ব্যাট হাতে অপরাজিতও আছেন। আজ তৃতীয়দিনের খেলাও শুরু করবেন। বরিশাল এখনও ২৫২ রানে পিছিয়ে রয়েছে। বগুড়ায় ঢাকা মেট্রোকে শুরুতেই বিপদে ফেলেছে সিলেট। প্রথম ইনিংসে ২৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি ঢাকা মেট্রো। জবাব দিতে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে সিলেট ৫ রান করতেই প্রথমদিন শেষ হয়। দ্বিতীয়দিন ঝলক দেখান সিলেট ব্যাটসম্যানরা। পেসার আবু হায়দার রনি ৫ উইকেট শিকার করেন। কিন্তু সিলেটের ৩১৯ রানের বড় সংগ্রহ হয়ে যায়। জাকির হাসান (৭১) ও জাকের আলীর (৭১) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বড় স্কোর হয়। তৌফিক খান (৬১) ও অলক কাপালীও (৫৪) ব্যাট হাতে ঝলক দেখান। রনি ৫৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করে নেন। এরপর ঢাকা মেট্রো দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমে ৯ রান করে। দ্বিতীয়দিন শেষ হয়। নাঈম শেখ (৮*) ও রাকিন আহমেদ (১*) আজ তৃতীয়দিনের খেলা শুরু করবেন। ঢাকা মেট্রো ৬৪ রানে পিছিয়ে আছে। স্কোর ॥ দ্বিতীয়দিন শেষে ঢাকা-রংপুর প্রথম স্তরের ম্যাচ- চট্টগ্রামে ঢাকা প্রথম ইনিংস ॥ প্রথমদিন ৩১৪/৪; সাইফ ১২০ আহত অবসর, রনি ৬৫, রকিবুল ৫৭, শুভাগত ৮*, সুমন ২*; সোহরাওয়ার্দী ২/৮০ ও দ্বিতীয়দিন ৫৫৬/৮ (ইনিংস ঘোষণা); ১৬০ ওভার; সাইফ ২২০*, শুভাগত ১৭, সুমন ২৪, নাদিফ ৬১; সোহরাওয়ার্দী ৩/১৩৪, সঞ্জিত শাহা ৩/৮৯। রংপুর প্রথম ইনিংস ॥ ৭১/২; ১৮ ওভার; লিটন ৫১*, নাঈম ৮*; সাকিল ২/১৬। খুলনা-রাজশাহী প্রথম স্তরের ম্যাচ- খুলনায় রাজশাহী প্রথম ইনিংস ॥ ২৬১/১০; ৮৫.৩ ওভার; জুনায়েদ ৫১, ফরহাদ ৪৫, ফরহাদ রেজা ৪১; মিরাজ ৪/৩৮, মুস্তাফিজ ২/৬৪, রুবেল ২/৫১। খুলনা প্রথম ইনিংস ॥ ২২৭/৬; ৯০ ওভার; ইমরুল ৯৩, তুষার ৪৩, সোহান ৩৫*, বিজয় ৩৪; শফিউল ২/৫৫, তাইজুল ২/৭৫)। চট্টগ্রাম-বরিশাল দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচ- ফতুল্লায় চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস ॥ প্রথম দিন ২৬১/৪; ৯০ ওভার; অংকন ৬৯*, ইয়াসির ৬৮*, ইরফান ৫৭; মনির ২/৭০ ও দ্বিতীয়দিন অংকন ৯১, মাসুম ৫০*; মনির ৪/৯৯। বরিশাল প্রথম ইনিংস ॥ ১০৪/৪; ৪৩ ওভার; রাফসান ৪৯, আশরাফুল ৪*, মোসাদ্দেক ৪*; নাঈম ২/২৩। ঢাকা মেট্রো-সিলেট দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচ- বগুড়ায় ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস ॥ ২৪৬/১০; ৮৩.৪ ওভার; মাহমুদুল্লাহ ৬৩, শহিদুল ৫৪; রেজাউর ৪/৭৫ ও দ্বিতীয় ইনিংস ৯/০; নাঈম ৮*, রাকিন ১*। সিলেট প্রথম ইনিংস ॥ প্রথমদিন ৫/১; ৪ ওভার; এনামুল জুনিয়র ৪* ও দ্বিতীয়দিন ৩১৯/১০; ৮৪.৫ ওভার; জাকির ৭১, জাকের ৭১, তৌফিক ৬১, কাপালী ৫৪; রনি ৫/৫৫।
×