ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

দুই বাংলার শিল্পীদের যুগলবন্দী

প্রকাশিত: ১১:৩১, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

দুই বাংলার শিল্পীদের যুগলবন্দী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গান ও কবিতার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য ও মধুময়। গান ও কবিতার এ সম্পর্কে একমঞ্চে ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করলেন বাংলাদেশের রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী তানজীনা তমা ও ভারতের আবৃত্তি শিল্পী শোভনসুন্দর বসু। শিল্পী তানজীনা তমা শোনালেন কবিগুরুর নানা আঙ্গিকের ১০ গান। ফাঁকে ফাঁকে ১০ কবির দশ কবিতা আবৃত্তি শোনালেন শিল্পী শোভনসুন্দর বসু। একইমঞ্চে শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা ও কলকাতার দুই শিল্পীর শৈল্পিক যুগলবন্দী। গান ও কবিতার এ মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের শিরোনাম ‘গান কবিতার ছায়াতলে’। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সুরে সুরে ও কবিতার শাণিত উচ্চারণে দুই দেশের শিল্পীদ্বয় শোনালেন প্রেম ও মানবতার কথা। রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে গান ও কবিতা নিয়ে জমজমাট এ অনুষ্ঠানের আয়োজক আমরা সূর্যমুখী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতীয় দুতাবাসের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক ড. নীপা চৌধুরী। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, তানজীনা তমা ও শোভনসুন্দর বসু নিজ ক্ষেত্রে প্রথিতযশা শিল্পী। দুই দেশের মৈত্রীর বন্ধনে গান ও কবিতা এ আসর আমাদের শেখাবে দানবের বিরুদ্ধে শৈল্পিক প্রতিবাদের ভাষা। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে গান ও কবিতার বাণী নিয়ে আমরা মানবপ্রেমের কথা বলব, মানবতার কথা বলব। সংস্কৃতিই পারে অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে। নীপা চৌধুরী, সংস্কৃতিজগতে বাংলাদেশ ও ভারতের দারুণ মেলবন্ধন রয়েছে। কেননা আমরা একই সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী। দুই দেশের সংস্কৃতি গান ও কবিতা নিয়ে এ আয়োজন সত্যিই সম্প্রীতির বন্ধনে আমাদের জড়িয়ে রাখবে। অনুপ্রেরণা জোগাবে অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি দুই গুণী শিল্পীর গান ও আবৃত্তি উপভোগ করে মিলনায়তন পূর্ণ দর্শকশ্রোতারা। জমজমাট যুগলবন্দীর শুরুতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান গেয়ে শোনান তানজীনা তমা। শুরুতেই তিনি গেয়ে শোনান ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’। গান শেষ হতেই বাদ্যযন্ত্রের মিশেলে বাংলাদেশকে নিয়ে লেখা কবীর সুমনের কবিতা আবৃত্তি করেন শোভনসুন্দর বসু। কবিতার শিরোনাম ছিল ‘বাংলার ধনুকের ছিলায় ছিলাম’। গান ও কবিতার মেলবন্ধনে গোটা মিলনায়তনে বয়ে যায় সুর ও বাণীর অপূর্ব মূর্ছনা। তার পর একে একে তানজীনা তমা গেয়ে শোনান ‘কার মিলন চাও বিরহী’, ‘রাখ রাখরে জীবনে’, ‘ভালবেসে সখি’, ‘ যে কেবল পালিয়ে বেড়ায়’ ‘অধরা মাধুরী ধরেছি’, ‘দূরে কোথায় দূরে দূরে’, ‘সজনি সজনি রাধিকা’, ‘প্রাণ চায় চক্ষু না চায়’ ‘দুই হাতে কালের মন্দিরা’। অনন্য কণ্ঠের জাদুতে শ্রোতাদের মুগ্ধ রাখেন শিল্পী তানজীনা তমা। তানজীনা তমা শোনান একটি রবীন্দ্রসঙ্গীত। তার সঙ্গে আবৃত্তি করেন শোভনসুন্দর বসু। গান ও কবিতার মাঝে গোটা আয়োজন ছিল মনোজ্ঞ ও প্রাণবন্ত। শৈল্পিক উচ্চারণে শিল্পী শোভনসুন্দন বসু শোনান বাংলাদেশ ও ভারতের ১০ জন খ্যতিমান শিল্পীর ১০ কবিতার ভিন্নমাত্রিক আবৃত্তি। বাদ্যযন্ত্রের মিশেলে শাণিত উচ্চারণে তার আবৃত্তি ছিল অন্যরকম। শোভনের ফিউশনধর্মী আবৃত্তি ও তমার ক্লাসিকধারা গানের শিল্পীত আলোয় মুগ্ধ হয় দর্শকশ্রোতারা। অনুষ্ঠানে শোভনসুন্দর আবৃত্তি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শোনান এক গাঁয়ে’ ও ‘হৃদয় আমার নাচেরে’, অচিন্ত কুমার সেনগুপ্তর ‘পুব-পশ্চিম’, রতনতনু ঘাঁটির ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ সত্যেন্দ্রনাথ দত্তর ‘দুরের পাল্লা’, নির্মলেন্দু গুণের ‘অলৌকিক’, কবীর সুমনের ‘জাতিস্মর’ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘একদিন ছুটি পেলে’।
×