জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট থেকে ॥ ফেলানী বেগম। ভিক্ষা করে চলে তার জীবন-জীবিকা। ৩ শতক জমি থাকলেও থাকার বসতঘর ছিল না। তাই সারাদিন ভিক্ষা করে রাতে অন্যের বাড়িতে ঝুপড়ি ঘরে ঘুমাতে হতো। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ কর্মসূচীর আওতায় ‘জমি আছে, ঘর নাই’ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর পেয়ে দারুণ খুশি ফেলানী বেগম। তার বাড়ি লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডে। ঘর পেয়ে ভিক্ষুক ফেলানী বেগম জানান, এখন শান্তিতে ঘুমাতে পারি। প্রধানমন্ত্রীকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। দোয়া করি আল্লাহ যেন তার দীর্ঘায়ু দেয়। বাবার মতো মেয়েও দয়ালু হয়েছে। আমাদের মতো সহায়-সম্বলহীন পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে। ঘর পেতে কাউকে কোন টাকা পয়সা ঘুষ দিতে হয়নি। হঠাৎ একদিন সরকারী অফিসের অফিসার এসে জানান, রংপুরিয়া ভাষায় বলেন, মোর নামে নাকি প্রধানমন্ত্রী ঘর বরাদ্দ দিছে বাহে। হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ-২ কর্মসূচীর আওতায় ‘জমি আছে, ঘর নাই’ প্রকল্পের অধীনে উপজেলার নদী ভাঙ্গনের শিকার, দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত, বয়োবৃদ্ধ কর্মহীন পরিবার ও অসহায় পরিবারগুলোকে এ কর্মসূচীর আওতায় আনা হয়েছে। এতে প্রথম পর্যায়ে হাতীবান্ধা উপজেলার ১২ ইউনিয়নে ৯শ’ ৭৬ পরিবারের মাঝে একটি করে আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এতে এই প্রকল্পে খরচ হয় ৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে এক লাখ টাকা। ঘর পেয়ে খুশি দরিদ্র সব গৃহহীন পরিবারগুলো।
হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের আব্দুস ছামাদ জানান, নদী হামার সব ভাঙ্গি নিয়ে গেইছে। ১৫ বছর থাকি পোয়ালের (খড়) চালাত আছনোং, এ্যালা ঘর পায়া হামার ভাল হইছে। আইতত (রাতে) শান্তিতে নিন্দ (ঘুম) পারবের পাং। কথা হয় ওই এলাকার ছকিনা বেগম, পার্শ্ববর্তী গ্রামের আজিয়া বেগমসহ অনেকের সঙ্গে। তারাও ঘর পেয়ে অনেক অনেক খুশি। গৃহহীন পরিবারগুলো জানায়, এই সরকারের আমলে অনেক কিছু সাহায্য পাইছি। এবার টাকা পয়সা ছাড়া ঘর পাইছি বাহে।
আল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দীর্ঘজীবী করুক। হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহম্মেদ জানান, তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের কারণে এ উপজেলায় হাজার হাজার পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ওইসব দুস্থ, নদী ভাঙ্গা ও অসহায় পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘরের ব্যবস্থা করেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: