ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাগরিক কমিটির সভায় উদ্বেগ

জলাবদ্ধতা ॥ সাতক্ষীরায় বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ৩১ আগস্ট ২০১৯

 জলাবদ্ধতা ॥ সাতক্ষীরায় বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ জেলায় নতুন নতুন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ ডেঙ্গু রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে সাতক্ষীরায় শুক্রবার পর্যন্ত মোট ৪৩৭ ডেঙ্গু রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত ভর্তি রয়েছে ৭১ জন। মারা গেছে ২ জন। দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও সাতক্ষীরায় ডেঙ্গু আক্রান্ত নতুন নতুন রোগী চিহ্নিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জেলা নাগরিক কমিটি। নাগরিক কমিটির অভিযোগ, জেলাজুড়ে জলাবদ্ধতার কারণে এডিস মশা জন্ম নিচ্ছে ও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে । শুক্রবার নাগরিক কমিটির বিশেষ সভায় এডিস মশার উৎসস্থল জলাবদ্ধতা চিহ্নিত করে দ্রুত জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য সাতক্ষীরা শহরসহ জেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে সকল বাধা অপসারণ দাবি করা হয়েছে। এই দাবিতে ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মোঃ আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে শুক্রবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শহিদ স ম আলাউদ্দিন মিলনায়তনে কমিটির বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। নাগরিক কমিটির সভায় বলা হয়, সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সাতক্ষীরায় বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ জলাবদ্ধতা। বাসাবাড়ির আনাচে-কানাচে, খেলার মাঠ, শহরের বিভিন্ন বাড়ির পাশে থাকা পতিত জমি, ড্রেন-নর্দমাসহ ফসলের ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। রোদে শুকানো ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। সভায় আরও বলা হয়, ডেঙ্গু মোকাবেলা করতেই জলাবদ্ধতার নিরসন দরকার। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও পানি নিষ্কাশন পর্যাপ্ত নয়। শহরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এদিকে জেলার নিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু রাখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জেলার সকল নদী খালের ইজারা বাতিল করা হয়েছে। খাল ও নদীর সকল নেট পাটা অপসারণে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চললেও পানি নিষ্কাশনের গতি ধীর। বেশিরভাগ নদী ও সেচ খাল দখল করে প্রভাবশালীরা মাছ চাষ করায় নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এদিকে ডেঙ্গুবিরোধী অভিযানে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে শহর ও গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে ডেঙ্গুর লার্ভা তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। গ্রামে ডেঙ্গুর লার্ভা পাওয়া গেলে এলাকার ইউপি সদস্যদের সদস্যপদ স্থগিত করার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে। শহরের প্রাণশায়রের খালের বদ্ধ কচুরিপনা অপসারণ করা হলেও জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হয়নি। সামান্য বৃষ্টিতে শহরের বেশিরভাগ পাড়া, মহল্লা ও রাস্তায় জমছে হাঁটু পানি। রোদ্রের তাপ ছাড়া এই পানি শুকাচ্ছেনা। এই জমে থাকা পানিতেই জন্ম নিচ্ছে সাধারণ মশা ও স্থান বিশেষে এডিস মশা। ফলে জেলায় নতুন নতুন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে । জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, জেলায় শনাক্ত হওয়া ৪৩৭ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ২৮৩ জন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র রেফার্ড করা হয়েছে আরও ৮৩ জনকে।
×