ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে

প্রকাশিত: ১১:০২, ৮ আগস্ট ২০১৯

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৪২৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ঢাকার বাইরেও একদিনে আক্রান্তের সংখ্যাও হাজার ছাড়িয়েছে। এদিকে ডেঙ্গু আতঙ্ক নিয়ে রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। এ অবস্থায় যারা ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন অথবা আক্রান্ত হয়ে এখন সুস্থ, এমন লোকদের ঢাকা ছেড়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক প্রফেসর ডাঃ উত্তম বড়ুয়া বলেন, ঈদে মানুষ ঘরমুখো। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত যারা এখন সুস্থ হয়েছেন বা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন তাদের ঈদে বাড়ি ফেরা ঠিক হবে না। কারণ যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের দরকার। শুধু তাই নয় তাদের মাধ্যমে ডেঙ্গুও ছড়াতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন সাধারণত এডিস মশা কামড়ানোর তিন থেকে চারদিন পর জ্বর হয়। যারা ঢাকা থেকে বাড়ি যাচ্ছেন, তারা আক্রান্ত কি না, তা না জেনেই যাচ্ছেন। গ্রামে গিয়ে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। পাশাপাশি তিনি হাল্কা জ্বর হলেও অবহেলা না করে, রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গু কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার পরামর্শ দেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ঘরে ফেরা মানুষের মাধ্যমে ডেঙ্গু যেমন সারাদেশে ব্যাপক হারে ছড়াতে পারে। তেমনি যারা বাসাবাড়ি ছেড়ে যাচ্ছেন, বাসায় না থাকায় এই সময়টাতে ঢাকার বাসায় ডেঙ্গুর বংশবিস্তার ঘটতে পারে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মেহেরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ঢাকা থেকে বাইরে যাওয়ার আগে দুটো দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। একটি স্বাস্থ্যগত দিক অন্যটি ফেলে যাওয়া বাড়িঘর ও জিনিসপত্র। তিনি বলেন, যদি কারও জ্বর থাকে তাহলে ঢাকার বাইরে তার ভ্রমণ করা ঠিক হবে না। এমন হতে পারে ডেঙ্গু মশা হয়ত কামড় দিয়েছে, কিন্তু ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার সময় জ্বর আসেনি। কিন্তু দেখা গেল বাড়িতে যাওয়ার পরে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত হলে তাকে অবশ্যই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে ডেঙ্গু জ্বর কি-না। ডেঙ্গু হলে তাকে অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হবে। মশারির মধ্যে থাকতে হবে। সেখানে যদি কোন এডিস মশা থাকে তাহলে তাকে কামড় দিয়ে যাতে অন্যজনকে কামড়াতে না পারে। ওই মশা যদি অন্যকে কামড়ায় তাহলে তারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারেন। যারা ঈদ করতে যাবেন তাদের এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এদিকে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরও ২ হাজার ৪২৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে ১ হাজার ১৪৪। বিশেষজ্ঞরা বলছেন রাজধানীর বাইরেও আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তারা বলেন এর একটি বড় কারণ হলো ঈদ সামনে রেখে অনেকেই এখন বাড়ি ফিরছেন। এ কারণেই ঢাকার বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্থানীয় খবরে বলা হয়েছে ঢাকার বাইরে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশ ঢাকা থেকে এলাকায় গিয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ তথ্যে আরও বলা হয়েছে সারাদেশে বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৩৪০। যদিও এর মধ্যে ২৩ হাজার ৬১০ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭০৭। ঢাকার ৪০ সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তিরোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩৮৯। দেশের অন্যান্য বিভাগের মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ১১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বুধবারও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ নিয়ে ঢামেক হাসপাতালে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে মারা যাওয়ার সংখ্যা ১৮। বুধবার মৃত রোগীর নাম আওলাদ হোসেন (৩২)। বাড়ি মুন্সীগঞ্জ। বাবার নাম তোফাজ্জল হোসেন। মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে আওলাদকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে তিনি মারা যান। তার মামা আক্তার হোসেন বলেন, তিন-চার দিন ধরে আওলাদ জ্বরে ভুগছিল। মঙ্গলবার শরীর বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে ডেঙ্গজ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন ঢাকার সরকারী তিতুমীর কলেজের এক ছাত্র। ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মেহেদী হাসান নামে অর্থনীতির স্নাতকোত্তরের এই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। ডেঙ্গু নিয়ে সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভর্তি হন মেহেদী। তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ৩টা ৩৮ মিনিটে তিনি মারা যান। কুমিল্লার মুরাদনগরের ছেলে কলেজের পাশের শহীদ আক্কাসুর রহমান আঁখি ছাত্রাবাসের ২০১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তার বন্ধু তিতুমীর কলেজের আরেক ছাত্র ওয়াহিদ জানান, প্রচ- জ্বর হলে সপ্তাহ খানেক আগে মেহেদীকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সোমবার তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তার ডেঙ্গু হয়েছে। প্লাটিলেট কমে ১৭ হাজারের নিচে চলে এসেছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। নিজস্ব সংবাদদাতা ফরিদপুর থেকে জানান, মেডিক্যাল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালে বুধবার আব্দুল জলিল সরদার (৫০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি পেশায় একজন কৃষক। নগরকান্দা উপজেলার মুকুল সরদারের ছেলে। বুধবার সকাল নয়টা ১৩ মিনিটে তিনি জ্বর নিয়ে ফরিদপুর মেডিক্যালে ভর্তি হন, পৌনে দশটার দিকে মারা যান। মৃত্যু সনদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে ডেঙ্গু জ্বরে (‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোম’) তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বক্তব্য সংশোধন করে জানায়, ডেঙ্গু নয় কিডনিজনিত জটিলতায় মারা গেছেন আব্দুল জলিল সরদার। সারাদেশে উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী বাগেরহাট ॥ আরও ১১ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে বুধবার বিকেল পর্যন্ত বাগেরহাটে সরকারী হিসেবে ৩৫ ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান মিলেছে। এদের ১১ জন বর্তমানে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল এবং বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে বলে সিভিল সার্জন ডাঃ জিকেএম শামসুজ্জামান জানান। ক্রমশ ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধিতে জনমনে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডাঃ জিকেএম শামসুজ্জামান জনকণ্ঠকে জানান, বাগেরহাটে ৩৫ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের অধিকাংশই ঢাকা থেকে আসা। প্রতিটি হাসপাতালে একটি সেল বা ডেঙ্গু কর্ণার চালু করা হয়েছে। সরকারী হাসপাতালগুলোয় বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা সবাই একযোগে কাজ করছেন। রংপুর ॥ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক সেনা কর্মকর্তা ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২৪ ঘণ্টায় ২৮ নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৮০। ঢাকা থেকে ঈদে বাড়ি ফেরা এই লোকেরা এই রোগ বহন করে আনছে বলে ডাক্তারদের অভিমত। রমেক হাসপাতালের মুখপাত্র মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ আসাদুজ্জামান জানান, বুধবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ৮০ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ৬৫ পুরুষ, ১১ মহিলা ও চারটি শিশু। নতুন ভর্তি ২৮ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা ও পুলিশের দুই কর্মকর্তা রয়েছেন। নীলফামারী ॥ ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বুধবার আরও শনাক্ত হয়েছে ১০ জন। এ নিয়ে গত ১৪ দিনে (২৫ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট) শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫০। সিভিল সার্জন রনজিৎ বর্মণ বলেন, বুধবার পর্যন্ত জেলায় ৫০ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। তারা সবাই ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এলাকায় এসেছে। তাদের মধ্যে কেউ হাসপাতালে, কেউ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে, কেউ সুস্থ হয়েছে, আবার অনেকে জেলার বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। খাগড়াছড়ি ॥ প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে ৯ দিনে সদর হাসপাতালে ৩৭ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হলো। হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে বাড়তি রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তাররা। হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তের কিট সঙ্কটের কারণে রোগী ও স্বজনরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। যার সুযোগ নিচ্ছে বেসরকারী ক্লিনিক মালিকরা। লক্ষ্মীপুর ॥ দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে লক্ষ্মীপুরে। আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এ জেলায়। প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে আসছে রোগীরা। গত ১২ দিনে বুধবার দুপুর বারোটা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ৮৬ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২৮ ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে অন্যদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ এবং কয়েকজনকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছে লক্ষ্মীপুরের মানুষ। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে আলাদা পুরুষ/মহিলাদের ডেঙ্গু কর্ণার খোলা হয়েছে। সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ আনোয়ার হোসেন জানান, আক্রান্ত রোগীরা বেশিরভাগই ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে আসা। আক্রান্ত রোগীকে মশারির ভেতরে রাখার পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক। বরিশাল ॥ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শেবাচিম হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৯ রোগী ভর্তি হয়েছেন। একইভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন ২৬ রোগী। বুধবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ২৩৬ ডেঙ্গু রোগী চিরয়েছেন। এরমধ্যে পুরুষ ১৩৮, নারী ৭৪ ও শিশু ২৪। মঙ্গলবার যার সংখ্যা ছিল ১৯৩ জন। ভোলা ॥ প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ১১ জন। এ নিয়ে ভোলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৯ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় না গেলেও ভোলায় ৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। এদিকে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে যাওয়ায় ভোলা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীরা সিট পাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে তারা ফ্লোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। এতে করে তারা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে। তবে রোগীরা হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু রোগের সব ধরনের ওষুধ পাচ্ছে। এদিকে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়া ডাক্তার ও নার্সরা হিমশিম খাচ্ছে। অপরদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব ধরনের চিকিৎসার কথা বললেও ভোলায় হাসপাতালে এখনও পূর্ণাঙ্গ ডেঙ্গু পরীক্ষার আইজি আইজিএম কিট নেই। রাজশাহী ॥ রাজশাহী নগরীর অন্তত ১৪ স্থানে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি মিলেছে। এরমধ্যে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবন ও ছাত্রীনিবাসের সামনেই মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। এছাড়া নগরের বিভিন্ন এলাকার বাড়ির ফুলের টব, পরিত্যক্ত প্লাস্টিক পাত্রে ও দোকানের ব্যাটারির সেল ও টায়ারে এবং রাস্তার ধারে পাইপে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মিলেছে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য নিজে উদ্যোগে কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে গত পাঁচদিন ধরে মাঠপর্যায় থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক স্বাস্থ্যর কার্যালয় থেকে গঠিত কীটতত্ত্ববিদদের তিন সদস্যের একটি কমিটি গত পাঁচদিন ধরে রাজশাহীতে এডিস মশার উপস্থিতি নিয়ে মাঠে কাজ করেছেন। তারা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আশপাশেসহ নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এসব নমুনা থেকে তারা এডিস মশার লার্ভার ব্যাপক উপস্থিতি পেয়েছেন। এদিকে, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ সাইফুল ফেরদৌস বলেন, বুধবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালে ৩৩ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। একই সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৫। বর্তমানে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮৮। ফরিদপুর ॥ ডেঙ্গু জ্বরের পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৫ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে বুধবার পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৮৮ রোগী। বুধবার চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৩৬। ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৬৫। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক রোগী ভর্তি হয়েছেন ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪৮ জন।
×