ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদ সামনে রেখে পুলিশের বিশেষ অভিযান

প্রকাশিত: ১০:২৫, ৩ আগস্ট ২০১৯

 ঈদ সামনে রেখে  পুলিশের বিশেষ অভিযান

শংকর কুমার দে ॥ পবিত্র ঈদ-উল-আযহা (কোরবানির ঈদ) সামনে রেখে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, চামড়া পাচার, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, জাল নোটের ব্যবসা, প্রতারক চক্র মারাত্মক সক্রিয়। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এই ধরনের অপরাধ কঠোরহস্তে দমনের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কোরবানির ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ঈদকেন্দ্রিক অপরাধী চক্রের তৎপরতা বেড়ে চলেছে। ঈদের সময় সব ধরনের অপরাধমূলক তৎপরতা বন্ধে পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, র‌্যাব ও আনসার, প্রতিটি ইউনিটকে মাঠে নামানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভি ক্যামেরা ও চেক পোস্ট স্থাপন, টহল টিম গঠন করে মহাসড়ক টহল জোরদার শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সূত্র জানায়, প্রতিবছরই ঈদের আগে ছিনতাই, ডাকাতি, মলম পার্টি, জাল নোট ব্যবসার দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। বেড়ে যায় পথে-ঘাটে চাঁদাবাজি। অবর্ণনীয় দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে ঈদকেন্দ্রিক অপরাধমূলক তৎপরতা প্রতিরোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পুলিশ সদর দফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশ পেয়ে ইতোমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা শুরু করেছে। নির্বিঘ্নে, নিরাপদে, নিশ্চিন্তে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উদযাপন নিশ্চিত করার জন্য বাস টার্মিনাল, নৌবন্দর, ফেরিঘাট ও রেলস্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র‌্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ইউনিফর্মের পাশাপাশি সাদা পোশাকে মোতায়েন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানী ঢাকার ১৯টি এলাকা থেকে অজ্ঞান পার্টির ৪০ সদস্যকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গত ৩১ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযানে তাদেরকে আটক করা হয়। আটক ৪০ জনের মধ্যে ডিবি-দক্ষিণ ১৯ জন, ডিবি-পশ্চিম ৭ জন ও সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগ ১৪ জনকে আটক করেছে। আটক করার সময় অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের কাছ হতে চেতনানাশক ট্যাবলেট, ট্যাবলেট মিশ্রিত খেজুর, হালুয়া ও জুস উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। ডিএমপি আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা জানিয়েছে- কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মার্কেট, শপিং মল, পশুর হাট, বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট ও রেলস্টেশন এলাকায় টার্গেট করে ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্য তৈরি করে। পরে অপর সদস্যদের টার্গেট করা ব্যক্তি ও তাদের সদস্যকে খাদ্যদ্রব্য (ট্যাবলেট মিশ্রিত) গ্রহণের আমন্ত্রণ জানায়। টার্গেট করা ব্যক্তি রাজি হলে ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য তাকে খাওয়ায় এবং নিজেদের সদস্যরা সাধারণ খাবার গ্রহণ করে। খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের পর টার্গেট ব্যক্তি অচেতন হলে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে তারা দ্রুত সটকে পড়ে। এ ক্ষেত্রে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা খাদ্যদ্রব্য হিসেবে চা, কফি, জুস, ডাবের পানি, পান, ক্রিমজাতীয় বিস্কিট ব্যবহার করে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে সটকে পড়ে। পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে এই ধরনের অপরাধী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে পুলিশের দাবি। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, গত ৩১ জুলাই রাত থেকে রাজধানী ঢাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা শুরু হয়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় অজ্ঞান ও মলম পার্টি, জাল টাকা তৈরি চক্রের সদস্য, প্রতারক, চাঁদাবাজ ধরা পড়েছে। ঈদ পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে বলে ডিবি পুলিশ কর্মকর্তার দাবি।
×