ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কার উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছেন করুনারতে

প্রকাশিত: ১১:৪২, ২ আগস্ট ২০১৯

শ্রীলঙ্কার উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছেন করুনারতে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সফরকারী বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় এক পরীক্ষার মধ্যে ছিল স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। মাত্র বিশ্বকাপের আগেই ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হয়েছেন দিমুথ করুনারতেœ। দীর্ঘদিন যে দলটি সংগ্রাম করছিল এবারের আসরে ষষ্ঠ স্থান নিয়ে ফিরতে পেরেছে লঙ্কানরা। এরপর ঘরের মাটিতে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছে দলটি। প্রথম ওয়ানডে খেলার পর অবসরে যান সর্বশেষ লঙ্কান কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গা। পরের দুই ওয়ানডে তাকে ছাড়া খেললেও কোন প্রভাব পড়েনি দলের ওপর। এমনকি শেষ ম্যাচে অনিয়মিত চারজনকে নিয়ে খেলেও সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জিতেছে। সার্বিকভাবে তাই ভবিষ্যতটা ভালই দেখতে পাচ্ছেন করুনারতেœ। তিনি উপলব্ধি করছেন, এখন যে তরুণদের নিয়ে দলটি গড়ে উঠছে সেটিকে নিয়ে অনেক কিছুই করার আছে। গত ৫/৬ বছরে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ আর কিংবদন্তি হয়ে ওঠা খেলোয়াড়কে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। মাহেলা জয়বর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারার পর অবসরে গেছেন তিলকারতেœ দিলশান, রঙ্গনা হেরাথ। এবার দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ চলার সময়ই বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলে অবসর নেন মালিঙ্গা। কিংবদন্তিদের কাতারে সর্বশেষ খেলোয়াড় ছিলেন এ ডানহাতি পেসার। অথচ সর্বশেষ ভরসার নাম তিনিই ছিলেন। এ কারণে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) আরও কিছুদিন পর তাকে অবসর নিতে আহ্বান জানিয়েছিল। তবে সিদ্ধান্ত বদলাননি মালিঙ্গা। ডানহাতি এ পেসার পরবর্তী লঙ্কান দলের বোলিং আক্রমণটা কেমন হবে তা নিয়ে ছিল সংশয়। তাছাড়া ব্যাটিং লাইনআপে অভিজ্ঞ এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ব্যতীত ভরসা করার মতো ছিল না আর কোন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। একেবারে তরুণ একটি দল বাংলাদেশ দলকে পরের দুই ওয়ানডেতেও কোন পাত্তা পর্যন্ত দেয়নি। শেষ ম্যাচে এমনকি বেশ কয়েকজন নিয়মিত খেলোয়াড়কে ছাড়াই নেমেছিল লঙ্কানরা। তবু ১২২ রানের বড় জয় এসেছে। অনেকে মনে করছেন লঙ্কান ক্রিকেটে নতুন সূর্য জ্বলজ্বল করে উদিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভবিষ্যত কতটা ভাল হবে তা নিশ্চিত হয়নি। তবে অধিনায়ক করুনারতেœ আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘তরুণ খেলোয়াড়রা তাদের সুযোগগুলো খুব ভালভাবে কাজে লাগিয়েছে। শেষ ম্যাচে আমরা যে ৪ খেলোয়াড়কে নিয়েছি তারা দারুণ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।’ শেষ ম্যাচে অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা ১৪ বলে ৩০ রান ও ২৭ রানে ৩ উইকেট, পেসার কাসুন রাজিথা ১৭ রানে ২ উইকেট, অলরাউন্ডার ভানিদু হাসারাঙ্গা ৫ বলে অপরাজিত ১২ ও ১৬ রানে ১ উইকেট এবং শিহান জয়সুরিয়া ৭ বলে ১৩ রান করেন। যতটা সুযোগ পেয়েছেন এ চার তরুণ, পুরোটাই কাজে লাগিয়েছেন ভালভাবে। এ জন্যই করুনারতেœ বলেন, ‘যদি ভাল প্রতিযোগিতা থাকে এবং শক্তিশালী রিজার্ভ বেঞ্চ থাকে- সেক্ষেত্রে কোন একজন ইনজুরিতে পড়লে সহজেই আমরা অন্য খেলোয়াড়কে নিতে পারব। আমার মনে হয়, এভাবেই আমাদের ভাল একটা লাইনআপ গড়তে হবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বেশ কয়েকজন উদীয়মান তারকাকে খুঁজে বের করতে হবে। এখুনি সেই সময়। কিছুদিন আগেও আমাদের বড় সমস্যা ছিল যে শক্তিশালী রিজার্ভ বেঞ্চ ছিল না। কিন্তু এখন খেলোয়াড়রা প্রস্তুতি এবং তাদের সামনে কোন সুযোগ আসলে তা ধরতে প্রস্তুত হয়েই আছে।’ এ সিরিজে যারা ভাল করেছেন, তাদের বাইরেও কিছু খেলোয়াড় আছে যারা এমনকি বিশ্বকাপ স্কোয়াডেও থাকার উপযুক্ত ছিলেন। পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য খেলোয়াড় প্রস্তুত করার যে প্রক্রিয়া সেখানে আছেন তারা। তাদের বিষয়ে করুনারতেœ বলেন, ‘এই দলটির বাইরে আরও অনেকেই আছে আমাদের হাতে। তারা এই মুহূর্তে দলে সুযোগ করে নিতে পারেনি। নিরোশান ডিকভেলা ও দানুশকা গুনাথিলাকার মতো খেলোয়াড় এখন দলের বাইরে আছেন। দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে অবশ্যই প্রচুর খেলোয়াড় প্রয়োজন। কারণ এতে করে খেলোয়াড়রা নিজেকেই নিজেরা চাপ সৃষ্টি করবে ভাল পারফর্ম করার জন্য। শক্তিশালী বেঞ্চ থাকলে যারা সুযোগ পাবে তাদের দায়িত্বটা বেড়ে যায়। অনেক খেলোয়াড় এখন সুযোগটা পেতে মুখিয়ে আছে। মনে হচ্ছে একটা কিছু করার মতো দল পেয়ে গেছি আমি।’ তবে এরপরও মালিঙ্গার অবর্তমানে বোলিং নিয়ে কিছুটা ভাবনা কাজ করছেই করুনারতেœর মধ্যে। তিনি বলেন, ‘উইকেট দ্রুত তুলে নেয়ার মতো কিছু বোলার আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। কঠিন পরিস্থিতিতে যারা দারুণ করতে পারবে, তেমন কিছু ক্রিকেটারকে আমাদের বের করে আনতে হবে।’
×