ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাঁটু পানি ॥ খানাখন্দে ভরা

দুই বাস টার্মিনালেই চরম যাত্রী দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ১ আগস্ট ২০১৯

দুই বাস টার্মিনালেই চরম যাত্রী দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য নগরীর দুই প্রবেশদ্বারের দুটি বাস টার্মিনালে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের অধীন তিন একর জায়গায় একেকটি টার্মিনালে বছরের সব সময়ই হাঁটু সমান পানি কিংবা কর্দমাযুক্ত থাকে। সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের এ টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের জন্য নেই কোন সুযোগ-সুবিধা। আসন্ন ঈদ উল আজহা উপলক্ষে যাত্রী চাপ বিবেচনায়ও কোন পদক্ষেপ নেই টার্মিনালগুলোতে। জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান যাত্রী সেবা বিবেচনায় মালিক সমিতির কল্যাণ ফান্ড থেকে ঈদ উল আজহায় যাতায়াতকারী যাত্রীদের সেবা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দিয়েছেন। সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান জানান, গত ঈদ উল ফিতরের আগে রূপাতলী বাস টার্মিনালের যাত্রী দুর্ভোগ লাঘবে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ব্যক্তিগতভাবে সংস্কার করিয়ে দিয়েছেন। নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সিটি কর্পোরেশনের টেন্ডার কার্যক্রমের মাধ্যমে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও নিচু জায়গা ভরাটের কাজ হয়েছে। সরজমিনে রূপাতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি রুটের ১০টি মালিক সমিতির অধীনে এক হাজারের বেশি বাস ও মিনিবাস চলাচল করছে। এ বিপুলসংখ্যক বাসে স্বাভাবিক সময়েই দুই লাখেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করলেও নেই কোন টয়লেটের ব্যবস্থা। পাবলিক টয়লেটের নামে বিসিসি থেকে ইজারা নেয়া রূপাতলী বাস টার্মিনালের উত্তর-পশ্চিম পার্শ্বে হাঁটুসমান পানি পেরিয়ে অস্বাস্থ্যকর পাবলিক টয়লেট। টাকা দিয়েও ওই টয়লেটের সামনে গিয়ে আর ভেতরে প্রবেশ করতে চায় না সাধারণ যাত্রীরা। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ গিয়ে বমি করতে করতে বের হলেও সিটি কর্পোরেশন কিংবা মালিক সমিতির নজর নেই সেদিকে। টার্মিনালের সর্বত্র নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করলেও তা দেখার কেউ নেই। এ টার্মিনাল দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রীরা জানান, কাউন্টারে টিকেট কেটে দীর্ঘক্ষণ বৃদ্ধ, নারী, শিশুদের দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া বসার কোন উপায় নেই এ টার্মিনালে। এখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর বাসের হেলপারসহ বখাটের নানান অশ্লীল ভাষ্য শুনতে হয় অসহায় যাত্রীদের। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে সেখান থেকে মারধরের শিকার ছাড়া কেউ বেরোতে পারে না। নগরীর অপর প্রবেশদ্বার নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে হাঁটু সমান পানি না থাকলেও পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা। সারাদেশের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের এ টার্মিনালে ২৪ ঘণ্টাই যাত্রী পরিবহন করলেও নেই কোন বিশ্রামাগার। টার্মিনালের নিজস্ব কোন টয়লেট না থাকলেও সিটি কর্পোরেশনের ইজারাকৃত একটি পাবলিক টয়লেট ও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা বাকি দুটি পাবলিক টয়লেটও যাত্রীবান্ধব নয়। এ রুটে যাতায়াতকারী যাত্রীরা জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম, বেনাপোল, যশোর, সিলেট, কক্সবাজার, রাজশাহী, খুলনাসহ দেশের সর্বত্র যাতায়াতের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু যাত্রার শুরুতে তাদের নানান ভোগান্তির শিকার হতে হয় এ টার্মিনালে। সর্বত্র নোংরা পরিবেশসহ রাতে যাত্রীদের আতঙ্ক নিয়ে টার্মিনালে অবস্থান করতে হয়। বখাটেদের উৎপাতসহ অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও কারোর নজর নেই। যাত্রীরা জানান, দিনে দিনে এসব রুটে ভাড়া বৃদ্ধি পেলেও তাদের দুর্ভোগ কমছে না। বিশ্রামাগার না থাকায় যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
×