রাবিতে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষককে অব্যাহতি

রাবি সংবাদদাতা ॥ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অভিযুক্ত শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকেলে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বুধবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরী। এর আগেও সান্ধ্য কোর্সের কয়েক ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর অভিযুক্ত শিক্ষককে ওই ব্যাচের কার্যক্রম থেকে সরিয়ে নেয়া হয় বলে আইইআর সূত্রে জানা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুম ইন্টারন্যাশনাল ডরমেটরি থাকাকালীন ‘নারী ঘটিত’ কারণে জড়িয়েছিলেন অভিযুক্ত বিষ্ণুকুমার অধিকারী। সেসময় ডরমেটরির অন্য ফেলোদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে সেখান থেকে বের করে দেন ডরমেটরির তৎকালীন ওয়ার্ডেন। জানা গেছে, গত ২৫ জুন আইইআর পরিচালক বরাবর ৪র্থ বর্ষের এক ছাত্রী যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দেন। একই দিন ২য় বর্ষের আরেক ছাত্রী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে একই অভিযোগ আনেন। পরে ২৭ জুন এই ব্যাপারে লিখিত দেন। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৫ জুন অভিযুক্ত শিক্ষককে ২য় ও ৪র্থ বর্ষের সকল শিক্ষাকার্যক্রম থেকে তাকে সাময়িক অব্যহতি দেয়া হয়। এদিন পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। পরে গত ২৮ জুন অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে অভিযোগকারী ছাত্রীদের চাপ দেয়া হচ্ছে এই মর্মে নিরাপত্তা চেয়ে থানায় দুটি জিডি করা হয়। এরপর গত রবিবার অভিযুক্ত শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন করেন আইইআরসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে সোমবার আইইআরের ২য় ও ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও বিষ্ণুকুমার অধিকারীর অব্যাহতি চেয়ে আবেদনপত্র দেয়। এ সময় তারা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পছন্দের শিক্ষার্থীকে নম্বর বাড়িয়ে অপছন্দের শিক্ষার্থীদের নম্বর কমিয়ে দেয়া, চেম্বারে ডেকে হয়রানি, ফেসবুকে বিভিন্ন ব্যাচের গ্রুপের কথোপকথনের স্ক্রিসশট নিয়ে হয়রানির অভিযোগও খতিয়ে দেখতে অনুরোধ জানান। এছাড়াও এদিন আইইআরের তিন শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের একটি কোর্সের খাতা পুনর্মূল্যায়নেরও লিখিত আবেদন জানান। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষ্ণুকুমার অধিকারী বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ২য় ও ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়ার মিটিংয়েও আমাকে রাখা হয়নি।