ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোহলি-ধোনির ফিফটিতে স্বস্তি ভারতের

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ২৮ জুন ২০১৯

 কোহলি-ধোনির ফিফটিতে স্বস্তি ভারতের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্ষীণ একটা আশা বেঁচে আছে। সে জন্য বাকি সবগুলো ম্যাচ জিততে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। সে জন্যই হয়তো বৃহস্পতিবার ম্যানচেস্টারের ওল্ডট্র্যাফোর্ডে দুর্দান্ত বোলিং করলেন উইন্ডিজ পেসাররা। বিশেষ করে অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার ও কেমার রোচ দীর্ঘদিন পর জ্বলে উঠলেন। তাই আগে ব্যাট করতে নেমে বেশ বিপদেই পড়েছিল হট ফেবারিট ভারত। ১৪০ রানেই হারিয়েছিল ৪ উইকেট। তবে অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও মহেন্দ্র সিং ধোনির জোড়া ফিফটিতে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৬৮ রান তোলে ভারতীয় দল। বর্তমান অধিনায়ক কোহলি ৭২ ও সাবেক অধিনায়ক ধোনি ৫৬ রান করে স্বস্তি দিয়েছেন দলকে। এ ম্যাচে তিন ফরমেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছে কোহলি। তালিকায় মাত্র ১২তম হলেও সবচেয়ে দ্রুত তিনি এই অর্জনের মালিক হয়েছেন। হোল্ডার ২টি ও রোচ ৩টি উইকেট নেন ক্যারিবীয়দের হয়ে। মাত্র ৫ ম্যাচ খেলে ৯ পয়েন্ট নিয়ে অনেকটাই ভারমুক্ত হয়ে বৃহস্পতিবার উইন্ডিজের মুখোমুখি হয় ভারত। সেমিফাইনাল নিশ্চিতের জন্য বাকি ৪ ম্যাচে মাত্র দুটি জয়ই যথেষ্ট কোহলিদের। তবে দ্রুত শেষ চার নিশ্চিত করার একটি চাপ আছেই তাদের ওপর। কিন্তু ক্ষীণ আশাটা বেঁচে রাখতে উইন্ডিজের জয় ছাড়া গত্যন্তর নেই। তাই বৃহস্পতিবার কিছু পরিবর্তন ছিল তাদের। এভিন লুইসের ইনজুরিতে দলে সুযোগ পাওয়া সুনীল এ্যামব্রিস জায়গা করে নেন। আর ফ্যাবিয়ান এ্যালেনকে দলে ভেড়ায় ক্যারিবীয়রা। টস জিতে আগে ব্যাটিং নেয়াটা বেশি সুখকর হয়নি অপরিবর্তিত দল নিয়ে নামা ভারতের। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে দলীয় ২৯ রানেই সাজঘরে ফেরেন রোহিত শর্মা (১৮)। রোচের এ প্রথম আঘাতে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন বাকি বোলাররাও। তবে দ্বিতীয় উইকেটে লোকেশ রাহুল ও কোহলি ৬৯ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ওঠে। যদিও প্রথম পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে মাত্র ৪৭ রান উঠেছিল। ক্যারিবীয়দের ব্রেক থ্রু এনে দেন অধিনায়ক হোল্ডার, ৬৪ বলে ৬ চারে ৪৮ করা রাহুলকে বোল্ড করে দেন তিনি। এরপর রোচের জোড়া আঘাতে দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন বিজয় শঙ্কর (১৪) ও কেদার যাদব (৭)। টানা দুই উইকেট হারানোর পর কোহলির সঙ্গে ধোনি যোগ দিয়ে সাবধানে এগিয়ে যেতে থাকেন। ধোনি ব্যক্তিগত ৮ রানে উইকেটরক্ষক শাই হোপের ভুলে প্রাণ ফিরে পান, নিশ্চিত স্টাম্পিং দুইবারের চেষ্টায়ও ধরতে পারেননি তিনি। এরপর আর ভুল করেননি ধোনি। আর অর্ধশতক হাঁকিয়ে বেশিদূর যেতে পারেননি কোহলি। তিনি ৮২ বলে ৮ চারে ৭২ রান করার পর হোল্ডারের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। এরপর কিছুটা বিপদেই পড়ে যায় ভারত। কারণ ততক্ষণে ৩৯ ওভার চলছিল এবং শীর্ষ ৫ ব্যাটসম্যান সাজঘরে চলে গেছেন। কোহলি অবশ্য আরও দু’টি অর্জনের মালিক হয়েছেন। প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে টানা চারটি ফিফটি করার পথে ক্রিকেট ইতিহাসের ১২তম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন ফরমেটের ক্রিকেট (ওয়ানডে, টেস্ট ও টি২০) ২০ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, গত বিশ্বকাপে ১০ হাজার রান পেরিয়েছিলেন কোহলি। এক্ষেত্রে কোহলি সবাইকে ছাড়িয়ে প্রথম স্থানে। মাত্র ৩৭৬ ম্যাচ খেলেই এখন তার রান ২০ হাজার পেরিয়ে ২০,০৩৫! এর আগে দ্রুততম ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স। তিনি ৪২০ ম্যাচে ২০ হাজার রান পেরিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছিলেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার ৪৩০ ম্যাচে করে রাখা রেকর্ডটিকে। শচীন টেন্ডুলকর ৬৬৪ ম্যাচে সর্বাধিক ৩৪ হাজার ৩৫৭ রান করেছেন। এ তালিকায় আরেকজন ভারতীয় রাহুল দ্রাবিড়ের আছে ৫০৯ ম্যাচে ২৪ হাজার ২০৮ রান। সেই কোহলি সাজঘরে র্ফিরলেও ধোনি একাই লড়েছেন। শেষ ১০ ওভারে তার ব্যাটিংয়েই ভারত তোলে আরও ২ উইকেট হারিয়ে ৮২ রান। ধোনি ৬১ বলে ৩ চার, ২ ছয়ে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তাকে দারুণ সঙ্গ দেয়া হারদিক পান্ডিয়া ৩৮ বলে ৫ চারে ৪৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ষষ্ঠ উইকেটে তারা ৬০ বলে ৭০ রান যোগ করেন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৬৮ রানের লড়াকু পুঁজি পায় ভারত। হোল্ডার ৩৩ রানে ও রোচ ৩৬ রানে ৩টি করে উইকেট নেন।
×