ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাবা মুক্তিযোদ্ধা নন, তবুও কোটায় চাকরি পেলেন দুই ছেলেমেয়ে

প্রকাশিত: ০৭:৫৭, ২৮ জুন ২০১৯

বাবা মুক্তিযোদ্ধা নন, তবুও কোটায় চাকরি পেলেন দুই ছেলেমেয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ২৭ জুন ॥ সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ীয়া গ্রামের মৃত ছায়তুল্লাহ’র ছেলে সেকান্দার আলী মুক্তিযোদ্ধা নন। তারপরেও তার মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদপত্র ব্যবহার করে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে তার দুই ছেলেমেয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করছেন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভুয়া সনদ ব্যবহার করে সরকারী নিয়োগ বিধি লঙ্ঘন করে ছেলে মেয়েকে সরকারী চাকরি নিশ্চিত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে সেকেন্দার আলীর বিরুদ্ধে। তবে কেন এবং কিভাবে এমন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি সেকেন্দার আলী। এ ব্যাপারে জাল সনদ ব্যবহার করে কেউ সরকারী চাকরি করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ আছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরকে অবগত করা হলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এরশাদ উদ্দিন আহমেদ সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার একেএম আনোয়ার হোসেনকে তদন্তভার প্রদান করেছেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এরশাদ উদ্দিন আহমেদ জানান, তদন্ত প্রতিবেদন ১০ দিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। জানা যায়, ২০০৮ সালে সেকেন্দার আলীর ছেলে সাখাওয়াত হোসেন মিন্টু তার বাবার নামীয় মুক্তিযোদ্ধার জাল সনদপত্র দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ করেন। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। অন্যদিকে একই কায়দায় সেকেন্দারের অপর মেয়ে শাহনাজ পারভীন ২০১০ সালে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলার ধরাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। সেকেন্দার আলী মুক্তিযোদ্ধা নন বলে এই প্রতিবেদককে জানান তিনি। এদিকে সেকেন্দার আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও তার মুক্তিযোদ্ধার জাল সনদপত্র ব্যবহার করে তার ছেলে মেয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারী চাকরি করছেন বলে ক্ষিপ্ত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। তারা বলছেন, যারা মুক্তিযোদ্ধা নন, তাদের পরিবারের কেউ এই মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নিতে পারেন না। আর জাল সনদ ব্যবহার করে এই সুবিধা নিলে সেটা প্রতারণারই নামান্তর। তাদের পরিবর্তে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা সরকারী চাকরিতে নিয়োগ পেলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিফলন ঘটত। সেকেন্দার আলী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন স্বীকার করে বলেন, তিনি কখনও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নন বরং মেধার ভিত্তিতে তার দুই ছেলে মেয়ের চাকরি হয়েছে। নাটোর জেলার সাবেক কমান্ডার আব্দুর রউফ জানান, তার জানামতে, সেকেন্দার আলী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। সেকেন্দার আলী মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও কিভাবে তার দুই ছেলে মেয়ের সরকারী চাকরি হলো সেটি তার বোধগম্য নয়।
×