ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

নির্বাচনী ইশতেহারের বেশির ভাগই প্রতিফলিত হয়েছে

প্রকাশিত: ১০:০৫, ১৪ জুন ২০১৯

  নির্বাচনী ইশতেহারের বেশির ভাগই প্রতিফলিত হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিভিন্ন সংগঠন ও অর্থনীতিবিদরা বাজেটকে সাধুবাদ জানিয়ে নানামুখী বিশ্লেষণ করছেন। প্রস্তাবিত বাজেটকে একটি ধারাবাহিক বাজেট বলে জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)। এদিকে, নতুন বাজেটে শতভাগ খুশি না হতে পারলেও ‘অন্তত ৭০ ভাগ’ খুশি হওয়ার কথা জানিয়েছে তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সমিতি বিজিএমইএ। এ বাজেটকে জনকল্যাণমুখী বাজেট হিসেবেও উল্লেখ করেছেন বিজিএমএই নেতারা। বাজেটকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান। প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের প্রশংসা করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান জনকণ্ঠকে বলেছেন, ২০১৮ সালের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যা ছিল তার বেশির ভাগই এই বাজেটে প্রতিফলন ঘটেছে। তরুণ প্রজন্মকে কাজে লাগানোর বিষয়টি। আমার গ্রাম, আমার শহর অর্থাৎ শহুরে সুবিধার বিষয়টি এসেছে। বৈষম্য কমানোর বিষয়টি এসেছে। তবে ব্যাংকিং খাতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা দরকার। যদিও কমিশন করার কথা বলা হয়েছে এটিও একটি ভাল উদ্যোগ। পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আরও বলেন, বড় বাজেট বাস্তবায়ন দরকার শুরু থেকেই। শুরু থেকে না করলে শেষের দিকে ঘাটতি থাকে। এছাড়াও এর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তদারকির বিষয়টিও জোরালো থাকতে হবে বলে মনে করেন তিনি। সর্বোপরি বাজেট প্রস্তাবনার প্রশংসা করে এটি সঠিক পথেই আছে বলেও মন্তব্য করেন। এদিকে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার পর ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এ ধরনের বড় বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা বৃদ্ধি, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য। এ সময় দূরদর্শী নেতৃত্বে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে যেতে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। এদিকে, মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং মানব সম্পদ উন্নয়নে যুগপোযুগী বাজেট ঘোষণা করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ডিসিসিআই। ডিসিসিআইয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরকে আদায় করতে হবে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বিগত অর্থবছরের তুলনায় এত বড় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা চ্যালেঞ্জিং। নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। ঘাটতি বাজেট পূরণে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অর্থায়ন করা হবে, যা সহনশীল বলে মনে করছে ডিসিসিআই। তবে এ জন্য বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবাহ যেন কমে না যায় সেদিকেও সরকারের খেয়াল রাখতে হবে। আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) আকার ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এডিপি ব্যয় বৃদ্ধি দেশের অবকাঠামা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে প্রতিটি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও গুণগত মান নিশ্চিত করা, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ দরকার। প্রস্তাবিত বাজেটে ‘ইনসলভেনসি এ্যান্ড ব্যাংক্যাপসি ল’ শিরোনামে একটি আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে এবং এ ধরনের উদ্যোগকে ঢাকা চেম্বার স্বাগত জানাচ্ছে । ব্যাংকিং খাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাংকিং কমিশন গঠন, মার্জার ও এ্যাকুইজিশনের উদ্যোগকে স্বাগত জানায় সংগঠনটি। ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজেটে নিয়ে আসার প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই। এ প্রস্তাব বাস্তবায়নে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করে। নতুন মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ বাস্তবায়ন একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। ডিসিসিআই আশা প্রকাশ করে জানায়, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে এই আইন সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তবে এই আইনের আওতায় ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট না পাওয়া গেলে অতিরিক্ত ভ্যাটের বোঝা ভোক্তাকে বহন করতে হবে। আর তা হলে ভোক্তা পর্যায়ে ভ্যাটের কারণে পণ্যের দাম বেড়ে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেতে পারে। যদি মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়, সে ক্ষেত্রে জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ব্যক্তি শ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ লাখ টাকা করা যেতে পারে। ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি ও ভ্যাট রিটার্ন পদ্ধতি সহজীকরণ করা প্রয়োজন। ভ্যাটের আইন সহজীকরণ ও হয়রানি যেন না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ডিসিসিআই মনে করে, বেসরকারী বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে ৬৪টি জেলায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস বাস্তবায়ন এবং এখানে বেসরকারী খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরী। পাশাপাশি শেয়ার মার্কেটে লক ইন পিরিয়ড বা এক্সিট পিরিয়ড ৩ বছরের পরিবর্তে ১ বছর করার প্রস্তাব প্রশংসনীয় এবং শেয়ার মার্কেটে সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরী। নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য স্টার্ট আপ ফান্ড গঠন করার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে ডিসিসিআই যোগ্য ও সম্ভাবনায় এবং সৃষ্টিশীল উদ্যোক্তাদের এ ফান্ড প্রদান করা নিশ্চিত করার কথা বলেন। জাতীয় বাজেটে (২০১৯-২০) নতুন করে ৮০ লাখ করদাতা বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে। বর্তমানে করদাতার সংখ্যা ২০ লাখ। নতুন ৮০ লাখ যোগ হলে করদাতার সংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটি। ট্যাক্স নেট বাড়ানোর এ উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ডিসিসিআই মনে করে উপজেলা পর্যায়ে করযোগ্য ব্যক্তিকে ট্যাক্স নেটের আওতায় আনতে না পারলে ১ কোটি করদাতার সংখ্যা বাড়ানো সম্ভবপর নাও হতে পারে। বিদ্যমান করদাতাদের ওপর করবোঝা না বাড়িয়ে ট্যাক্স নেট বাড়ানোর এখনই উপযুক্ত সময়। এদিকে, বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, এ বাজেট নিঃসন্দেহে জনকল্যাণমুখী বাজেট। শিল্পের দিক থেকে যদি বলেন, তাহলে বলব শতভাগ খুশি না হলেও শতকরা ৭০ ভাগ খুশি আমরা। ঘোষিত প্রণোদনাতে খুশি হতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ক্যাশ ইনসেনটিভ আসলে অন্তত ছোট্ট একটি ফিগার। পোশাক খাত এমন একটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, যেখানে এই ইনসেনটিভ আমরা যৎসামান্য মনে করি। অন্ততপক্ষে আরও তিন পারসেন্টও যদি আমাদের দিতেন, তাহলে লাভ হতো। রুবানা জানান, বিজিএমইএ আটটি পণ্যে ‘সেফটি ইকুইপমেন্ট’ চাইলেও তার পাঁচটিতেও পাওয়া নিয়েও হতাশ তিনি। আমরা এক্সাম্পশন চেয়েছিলাম। ওয়াসায়, পানি বিদ্যুতে শতভাগ এক্সাম্পশন এসেছে, সেজন্য কৃতজ্ঞ। আটটি পণ্যে সেফটি ইকুইপমেন্ট চেয়েছিলাম, দেয়া হয়েছে পাঁচটিতে। মনে করি, বাকিগুলোতে দিলে ভাল হতো আমাদের জন্য। যোগাযোগ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোকে স্বাগত জানিয়ে রুবানা বলেন, শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য উৎসাহ দেবে। ইনফ্রাস্ট্রাকচার কমিউনিকেশনের জন্য খুব দরকার। আগে কমিউনিকেশন বাজেট ছিল ৫৩ হাজার ৮১০ কোটি টাকা, সেখানে এবার ৬১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা। আমরা মনে করি, এটিও আমাদের জন্য ভাল দিক। বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরী। ভ্যাট ও কাস্টমস আইনে সাংঘর্ষিক জায়গা যত দ্রুত সম্ভব দূর করার প্রতিশ্রুতি আসায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে বিজিএমইএ। আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে স্ক্যানার ব্যবহারের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে রুবানা বলেন, আমাদের পোশাক খাতে স্ব”ছতা আসুক, আমরা সে নিশ্চয়তা চাই। আমরা মনে করি, অনেক রকম দুর্নাম থেকে আমাদের অব্যাহতি দেবে। ব্যাংক ঋণে সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনতে সরকারের ঘোষণা দ্রুত কার্যকরের আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোকে স্বাগত জানান বিজিএমইএ সভাপতি। নানা বিষয়ে উদ্ভাবনকে উৎসাহ দিতে ‘ইনোভেশন ইন্ডাস্ট্রি স্কিম’ রাখার প্রস্তাবও করেন তিনি। পোশাক শ্রমিকদের যেন সামাজিক সুরক্ষা খাতের অধীনে আনা হয় সে দাবি করে রুবানা হক আরও বলেন, বাজেটের আগে আমরা এটি প্রস্তাব করেছিলাম কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে যে খাতগুলো উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে পোশাক শ্রমিক নেই। কিন্তু বরাদ্দের পরিমাণ যেহেতু ৭৪ হাজার ৩শ’ ৬৭ কোটি টাকা সেহেতু পোশাক শ্রমিকদেরও এর আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি। এদিকে, বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সিপিডি কার্যালয়ে বাজেট পরবর্তী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অর্থমন্ত্রী নিঃসন্দেহে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবতার নিরিখে করার চেষ্টা করছেন। তবে এতে সামগ্রিকভাবে বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়নি। উনি উচ্চাকাক্সক্ষার কথা বলেছেন, সেটা পরিপূরণের জন্য যে সুনির্দিষ্ট প্রকল্প-প্রস্তাবনা থাকে, বিশেষ করে নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে, তা অসম্পূর্ণ থেকে গেছে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে কতকগুলো সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি ছিল। আমাদের ধারণা ছিল সেই প্রতিশ্রুতিগুলোকে উল্লেখ করে, সেগুলোর জন্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া হলো, সে রকম একটা ব্যবস্থা আমরা লক্ষ্য করব। দুঃখজনকভাবে আমরা এই মুহূর্তে তা পেলাম না। যে সব পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে, যেমন তিন কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ২০৩০ সালের মধ্যে। কিন্তু এটা কোন খাতে, কিভাবে সৃষ্টি হবে এবং এটা ব্যক্তি খাতে হবে, না সরকারী খাতে হবে, এটা কি গ্রামে হবে, নাকি শহরে হবে এ ধরনের কোন মূল্যায়নভিত্তিক বা কোন সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাভিত্তিক কৌশলপত্র আমরা সেভাবে লক্ষ্য করিনি। তিনি আরও বলেন, যে সব প্রতিশ্রুতি আছে, সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে কোন সময়ের ভেতরে বাস্তবায়ন হবে, তা বলা নেই। বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)-এর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) প্রতিক্রিয়ায় বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের জন্য ১০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের ব্যবস্থা রাখা, প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষার জন্য কোন প্রতিষ্ঠান ১০% প্রতিবন্ধী শ্রমিক নিয়োগ প্রদান করতে ৫ শতাংশ কর রেয়াতের প্রস্তাব করা, দক্ষতা উন্নয়নের জন্য জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল গঠন করায় অর্থমন্ত্রীকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি যা বিসিআই-এর বাজেট প্রস্তাবের প্রতিফলন। ২০১৯-২০২০ অর্থবছর থেকে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ বাস্তবায়িত হতে চলেছে। মূসক মুক্ত টার্নওভারের সীমা ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। টার্নওভার করের উর্ধসীমা ৮০ লাখ টাকা হতে বাড়িয়ে ৩ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে, বিপুল সংখ্যক আইটেম মূসকের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। এজন্য আমরা সরকারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তবে মূসক ব্যবস্থায় ভোক্তা ও দেশের ৮৫% ক্ষুদ্র মাঝারি পণ্য ও সেবা খাতে নিয়োজিত ব্যবসায়ীদের স্বার্থ ও সামর্থ্য অনুয়ায়ী একটি ভোক্তা ও ব্যবসবান্ধব মূসক ব্যব¯’া বলবত করার জন্য টার্নওভারের উর্ধসীমা ৫ কোটি নির্ধারণ করে করের হার প্রস্তাবিত ৪% হতে ৩%-এ নামিয়ে আনা, পণ্য ও সেবা খাতে উপকরণ রেয়াত গ্রহণ করা না গেলে শিল্প ক্ষেত্রে ৫% ভ্যাট ধার্য করার প্রস্তাবগুলো পুনরায় বিবেচনার অনুরোধ জানায়। এদিকে, তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা বাজেট প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, সিগারেটে করহার এবং স্তরসংখ্যা অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব, লাভবান হবে তামাক কোম্পানি। সংগঠনটি জানায়, প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্নস্তরে সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে শলাকা প্রতি মাত্র ২০ পয়সা বা ৫.৭ শতাংশ। অথচ এ সময়ে জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১১.৩২ শতাংশ। সিগারেট ধূমপায়ীর প্রায় ৭২ শতাংশই নিম্নস্তরের সিগারেটের ভোক্তা। প্রস্তাবিত বাজেট কার্যকর হলে এই স্তরের সিগারেটের প্রকৃতমূল্য হ্রাস পাবে এবং ব্যবহার বাড়বে। অপরদিকে, বাজেট প্রস্তাবনায় মূল্যস্তরভেদে সিগারেট কোম্পানিগুলোকে ৩১ শতাংশ পর্যন্ত আয় বৃদ্ধির সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। বিড়ির শলাকা প্রতি ৬ পয়সা দাম বৃদ্ধি এর ব্যবহার কমাতে কোন ভূমিকাই পালন করবে না। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু এবং অসুস্থতার বোঝা মাথায় নিয়ে তামাক কোম্পানিগুলোকে লাভবান করার এই বাজেট প্রস্তাবনা চরম হতাশাজনক এবং একইসঙ্গে জনস্বাস্থ্যবিরোধী। সংখ্যাগরিষ্ঠ তামাক ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠীকে জর্দা-গুল ব্যবহারের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষার ক্ষেত্রে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর এই প্রয়াস নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে জানান। প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে একটি শক্তিশালী তামাক শুল্কনীতি গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করলেও উক্ত নির্দেশনার কোন প্রতিফলন প্রস্তাবিত বাজেটে নেই, যা সার্বিকভাবে তামাকবিরোধীদের জন্য হতাশাজনক বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে।
×