ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মনিরামপুরে টেকা নদীর বাঁধে ফাটল

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ২৬ এপ্রিল ২০১৯

মনিরামপুরে টেকা নদীর বাঁধে ফাটল

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মনিরামপুরে টেকা নদীর তলদেশ পলিতে ভরাট হওয়ায় জোয়ারের উপচে পড়া পানির চাপে গ্রাম রক্ষা বাঁধে ফাটল ধরেছে। যে কোন সময় বাঁধটি ধসে বিল কাদারিয়া পাড়ের অন্তত ১০ গ্রাম, বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর ফলে চরম মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন ওই এলাকায় গেলে গ্রাম রক্ষা বাঁধের এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। ঘের ব্যবসায়ী ও গ্রামবাসীরা মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধের ওপর বালুর বস্তা চাপা দিয়ে রেখেছে। তারপরও বাঁধের ফাটল রোধ করা যাচ্ছে না। ফাটল দিয়ে পানি বের হতেই আছে। এভাবে চলতে থাকলে যে কোন সময় তা ধসে সব কিছু ভাসিয়ে নিতে পারে বলে গ্রামবাসী আশঙ্কা করছে। জোয়ারের চাপে বাঁধটির উপর দিয়ে পানি উপচে পড়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলার টেকেরঘাট ব্রিজ হতে রাজবংশি পাড়ার পাশ দিয়ে টেকা নদীর গ্রাম রক্ষা বাঁধটির কারণে পাঁচাকড়ি, নেহালপুর, গোবরডাঙ্গা, লখাইডাঙ্গা, ডাঙ্গামহিষদিয়া, দহর মশিয়াহাটিসহ অন্তত ১০টি গ্রাম রক্ষা পেয়ে আসছে। বাঁধের পাশেই রয়েছে রাজবংশি পাড়া। এ সময় উপস্থিত ওই পাড়ারই ইউপি সদস্য সুধান্য বিশ্বাস বলেন, চরম অনিশ্চিয়তা আর আতঙ্কের মধ্যে পাড়ার সব বয়সের নারী-পুরুষের নির্ঘুম রাত কাটছে। ঘের ব্যবসায়ী ইসলাম বলেন, এভাবে নোনা পানি বিলে ঢুকলে সাদা মাছ মরে যাবে। এর ফলে তারমতো শত শত ঘের ব্যবসায়ী পথে বসবে। মহিতোষ বিশ্বাস নামের স্থানীয় এক কৃষক বলেন, বিলে এখন ধানকাটা চলছে। এরমধ্যে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে হাজার হাজার একর ধান নষ্ট হয়ে যাবে। একই সঙ্গে একবার বিলে নোনা পানি ঢুকলে আর ফসল ফলানো যাবে না। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুস সা’দত বলেন, নদীর তলদেশ পলিতে ভরাট হওয়ায় জোয়ারের চাপে পানি বাঁধটি উপচে পড়ার উপক্রম হয়েছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিৎ বাওয়ালি বলেন, টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) চালু না হলে ভবদহ পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকা দুর্বিসহ হয়ে উঠবে। দুই/এক বছরের মধ্যে ভবদহ স্লুইচ গেটের উত্তরের বিস্তীর্ণ বিশাল অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। যশোর পাউবো’র (পানি উন্নয়ন বোর্ড) নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বাঁধটি বিপজ্জনক অবস্থায় আছে জানিয়ে বলেন, এর জন্য দায়ী ঘের ব্যবসায়ীরা।
×