নির্বাচনে এবার আওয়ামী লীগের ব্যয় কম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোট ব্যয় হয়েছে এক কোটি পাঁচ লাখ ৭ হাজার টাকা। গত দুই নির্বাচনের তুলনায় এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যয় অনেক কম হয়েছে। ব্যয় কমলেও নির্বাচনী আয় হয়েছে দশগুণেরও বেশি। নির্বাচন কমিশনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার কাছে রবিবার দলের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাডভোকেট এবিএম রিয়াজুল কবির কাউছার, আনোয়ার হোসেন, গোলাম রাব্বানি চিনু, সেলিম মাহমুদ, দীপক দত্ত প্রমুখ। সিইসি ছাড়াও এ সময় নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়ে এসে এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে আইনী বাধ্যবাধকতা মেনে যথাসময়ে ব্যয়ের বিবরণী জমা দেয়া হয়েছে। এবারও কমিশনে ব্যয়ের হিসাব দাখিল করা হয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সালে নির্বাচনী ব্যয় কিছুটা বেড়েছিল। এবার কমেছে। এবার নির্বাচনী ব্যয় কম হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এবারে আমাদের একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য, তা হলো অন্যান্য বছর দলের অনেক প্রার্থীকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। এবারে আর সেটি করা হয়নি। সেদিক থেকে আমাদের ব্যয় কম। আবার এবারে আমরা আয় পেয়েছি বেশি, অনেকেই অনুদান দিয়েছেন। তিনি জানান, দলের প্রার্থীরা আইনের বিধান মতে এরই মধ্যে স্ব স্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেছেন। কত টাকা ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি এখন নির্বাচন কমিশনের সম্পত্তি। এটা পাবলিক ডকুমেন্ট, তাদের কাছ থেকে পেয়ে যাবেন। ইসির ওয়েব সাইটেই পেয়ে যাবেন।’ তবে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য জানান, তারা ১ কোটি ৫ লাখ ৭ হাজার টাকার ব্যয়ের হিসাব দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসি সূত্র জানায়, একাদশ সংসদে অংশ নেয়া বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই নির্বাচন কমিশনে এখনও তাদের ব্যয় রিটার্ন জমা দেয়নি। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচন থেকে ব্যয় রিটার্ন জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা চালু হয়। ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৬০ দলীয় প্রার্থী দিয়েছিল। এতে দলীয়ভাবে সাড়ে চার কোটি টাকা নির্বাচনী ব্যয়ের সুযোগ ছিল। এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনে প্রায় ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং নবম সংসদ নির্বাচনে ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৪ টাকা নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দেখিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এবার তা কমে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। ব্যয় কমলেও নির্বাচনী আয় দশগুণেরও বেশি হয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ৩ হাজার ৬২৮টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছিল। আওয়ামী লীগের প্রতিটি ফরমের দাম ছিল ৩০ হাজার টাকা।