ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সেই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে কী ঘটেছিল?

প্রকাশিত: ১০:৪১, ৮ এপ্রিল ২০১৯

 সেই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে কী ঘটেছিল?

অধ্যাপক আ ব ম ফারুক ॥ গত বছর ৮ এপ্রিল রবিবারের সেই সন্ধ্যায় আমার ভাই-বোনরা তাদের পরিবারবর্গ নিয়ে আব্বার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক পারিবারিক দোয়া মাহফিলে যোগ দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আমার বাসায় আসবেন এটা আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে আমার আত্মীয়দের ফোনে খবর পেলাম কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় বন্ধ করে দেয়ার ফলে বাংলামোটর, কাকরাইল, মৎস্য ভবন, তোপখানা রোডসহ পুরো এলাকা যানজটে স্থবির হয়ে আছে। তারা এই দুঃসহ জটে দীর্ঘক্ষণ আটকা পড়ে আছে। কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়া আমাদের শিক্ষার্থীরা আকস্মিকভাবে শাহবাগ মোড় বন্ধ করাতে বিস্মিত হই, তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করি। খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারি, শাহবাগ-জাদুঘর-চারুকলা থেকে টিএসসি মোড় পর্যন্ত হাজার হাজার শিক্ষার্থী কোটা সংস্কারের দাবিতে জড়ো হয়েছে, পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। জানা গেল, এর মধ্যে প্রচুর বাইরের শিক্ষার্থীও রয়েছে। আমি বিভিন্ন স্থানে যানজটে আটকা পড়া আমার ভাই-বোনদের শাহবাগ দিয়ে না এসে নীলক্ষেত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করতে পরামর্শ দেই। দোয়া মাহফিলও বাদ মাগরিবের বদলে বাদ এশা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানাই। সন্ধ্যার পর পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। বাসায় বসে আমরা সব খবর পাচ্ছিলাম না। যতটুকু পেয়েছিলাম তাতে জানা যায়, সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল ছুড়তে ও ভাংচুর করতে থাকে, রাস্তার আইল্যান্ডের গাছগুলো উপড়ে ফেলে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় ইত্যাদি। বঙ্গবন্ধু হলের দক্ষিণে অবস্থিত আমাদের বাসার ছাদ থেকে সেই আগুনের লাল আভা কিছুটা আমরা দেখেছি, যা ২০১৩ সালে মতিঝিলে সংঘটিত শিবির-হেফাজতের আগুন সন্ত্রাসের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল। রাত নয়টার পর আমাদের কয়েকজন আত্মীয় কোনমতে বাসায় পৌঁছাতে সক্ষম হলেও অন্যরা আসতে পারেননি। সেই বিকেল থেকে যানজটে আটকে থেকে তাদের মধ্যে প্রৌঢ় কয়েকজন তাদের গাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ফিরে যান। আমাদের পারিবারিক দোয়া মাহফিলটি কার্যত দায়সারাভাবে শেষ করতে হয়। কিন্তু যারা বাসায় এসেছিলেন তারা আবার ফিরে যেতে পারছিলেন না। কারণ, থেকে থেকেই উচ্চ শোরগোলের আওয়াজ ভেসে আসছিল এবং শোনা গেল যে, গাড়ি বেরুলে ভাংচুর হতে পারে। ক্যাম্পাসে কারা যেন গুজব ছড়িয়েছে, কোথায় যেন মেয়েদের নির্যাতন করা হচ্ছে এবং গুলিতে একজন ছাত্র মারা গেছে। অনেকেই এসব গুজব বিশ্বাস করার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। রাত সাড়ে এগারোটার পর আমি প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীকে ফোন করে জানতে চাই এখন মেহমানরা গাড়ি করে বেরুতে পারবেন কিনা। আমরা মেহমানদের রাত আরেকটু গভীর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পরামর্শ দিলাম। রাত একটার পর উপাচার্যের বাসার দিকে তুমুল শোরগোল ও স্লোগান শোনা গেল। জানা গেল, আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন জায়গায় সমবেত হয়েছে। সমঝোতার চেষ্টাও চলছে। ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু কোটা আন্দোলনকারীদের কোন নির্দিষ্ট নেতা না থাকায় সমঝোতার কিছুটা অগ্রগতি হলেও অন্য গ্রুপ এসে তা মানছে না। তাছাড়া অছাত্র আন্দোলনকারীরা গুজব ছড়াচ্ছে এবং অনমনীয়তা দেখাচ্ছে বেশি। সেই সময়টাতে আমি পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হচ্ছে কি-না ও আমার মেহমানরা গাড়ি নিয়ে বের হতে পারবে কিনা জানার জন্য পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে ফোন করি। কিন্তু উপর্যুপরি ফোনের পরেও তিনি ফোন ধরছিলেন না। মাঝে মাঝেই উপাচার্য ভবনের সামনে থেকে আরও শোরগোলের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল। অন্য জায়গায়ও হট্টগোল হচ্ছিল, তবে উপাচার্য ভবনের সামনে ছিল বেশি। একেবারে মাঠের যে পরিস্থিতি তা কেমন জানার জন্য আমি আমার কোটা আন্দোলনকারী কয়েকজন ছাত্রকে ফোন করি। তাদেরও না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সকে ফোন করি। সে যা বললো তার সারাংশ হচ্ছে, তাদের কাছে খবর এসেছে উপাচার্যের বাড়ির দেয়াল টপকে কারা নাকি একটু আগে ভেতরে ঢুকেছে এবং ওখানে বাড়ির সামনে ও ভেতরে হট্টগোল হচ্ছে। সেখানে দুটো গাড়িতে কারা নাকি আগুন লাগিয়েছে। প্রক্টর স্যার সম্ভবত ফোন ধরার মতো অবস্থায় নেই। কারণ, উপাচার্যের বাসভবনের আঙ্গিনায় রক্ষিত প্রক্টরের গাড়িটিও নাকি পুড়ছে। আমরা এখন কর্মীদের নিয়ে সেখানে যাচ্ছি। এরপর সেই রাতে আর কাউকে ফোন করিনি। মেহমানরাও বাইরে যাওয়ার আশা বাদ দিয়ে আমার বাসাতেই কোন মতে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু তখন আমরা কেউ কল্পনাও করতে পারিনি সেই সময় উপাচার্যের বাড়িতে কী মারাত্মক ঘটনা ঘটছিল। সোমবার সকালে মেহমানরা চলে যাওয়ার পর আমাদের ভবনে খবর এলো, গতরাতে উপাচার্যের বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর হয়েছে এবং আগুনও লাগানো হয়েছে। আমি দু’জন সহকর্মীসহ সেখানে গিয়ে যা দেখলাম তা অবিশ্বাস্য। আঙ্গিনায় ঢুকতেই দেখি কাঠের সব আসবাবপত্র ভবনের সামনের চত্বরে এনে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে, সেগুলো পুড়ে শেষ। লে. জে. এরশাদের আমলে আমি একসময় শিক্ষকদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সিন্ডিকেট সদস্য ছিলাম। তখন এই বাসভবনে সিন্ডিকেট সভা হতো। একটি হলরুমের প্রায় সমান লম্বা একটি কী কাঠের যেন কালো টেবিলটি ১৯২১ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় জন্মের আগে থেকেই এই ভবনে ছিল। এটি কখনও বার্নিশ বা মেরামত করা লাগত না, কিন্তু সব সময়ই ভীষণ মজবুত আর চকচকে ছিল। মুখোশধারীরা সেটি নাকি কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে খ- খ- করে চেয়ার সোফাসহ অন্যান্য শতবর্ষ পুরনো আসবাবের সঙ্গে বাইরে এনে স্তূপাকার করে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগায়। স্টিলের আলমিরা ও ফাইল কেবিনেটগুলো দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে আছে। ভেতরের কাগজপত্র ও ফাইলগুলো নিয়ে পোড়ানো হয়েছে। জানালা, আলমিরা ও টেবিলের উপরের কাঁচগুলো বিচূর্ণ, নিচতলার অফিসের কম্পিউটার ভাঙ্গা ও বিকৃত অবয়বে মাটিতে পড়ে আছে, সিসি ক্যামেরার কম্পিউটারটির অবস্থাও তথৈবচ, কোনটিরই হার্ড ডিস্ক নেই। প্রায় শত বছরের পুরনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের প্রতীক হিসেবে থাকা বিভিন্ন ছবি-মেডেল-শিল্ড ভাঙ্গা ও পোড়ানো হয়েছে। সমস্ত মেঝে কাঁচের টুকরায় আবৃত। কোন এক সংস্থার উপহার দেয়া এলইডি টেলিভিশন খন্ড খন্ড হয়ে মাটিতে পড়ে আছে। সভায় ব্যবহৃত গ্লাস-কাপ-পিরিচগুলো সব ভাঙ্গা। পুরো ভবনটির অফিস, বৈঠকখানা, শয়নকক্ষ, রান্নাঘর এমনকি শৌচাগারগুলোর টাইলস পর্যন্ত ভাঙ্গা। সেখানকার বেসিন ট্যাপ বদনাগুলোও পিটিয়ে ভাঙ্গা হয়েছে। ফ্যানগুলোও আস্ত নেই। দোতলায় পুরনো মোটা সিন্দুকটি সম্ভবত খুব ভারি শাবল দিয়ে বিশেষ কৌশলে ভাঙ্গা হয়েছে। বাসভবনটির যেখানে যেখানে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ফ্রেমে বাঁধানো ছবি ছিল, যেন কী এক প্রচন্ড আক্রোশে ফ্রেমগুলোকে পিটিয়ে গুঁড়া করে ছবিগুলোকে ছিঁড়ে ও দুমড়ে মাটিতে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। একটিতে জুতার দাগ দেখে মনে হয়, সম্ভবত সেগুলো পদদলিতও হয়েছিল। বাসভবনের লনে বাগানের বেশ কিছু গাছ কর্তিত। ফুলসমেত ফুলের টবগুলো ভাঙ্গা। ভবনের পেছনে ভস্মীভূত গাড়ি। দেখে মনে হয় যেন বাসভবনের পুরো এলাকাজুড়ে গতরাতে সন্ত্রাসের এটি টর্নেডো বয়ে গেছে। কিন্তু এত সময় তারা পেল কোথায়? জানা গেল, সম্পূর্ণ ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে তারা সময় নিয়েছে বড় জোর আধা ঘণ্টা। আর এখানে তা-ব চালানোর আগে তারা সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ্যের বাসভবনেও নাকি হামলা চালায়। এই তিনটি ভবনের প্রত্যক্ষদর্শী কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, রাত একটার দিকে একদল যুবক, যাদের মধ্যে জনা তিরিশেকের মুখোশ পরা ছিল, প্রথমে ফুলার রোডে কোষাধ্যক্ষ্যের বাসভবনের গেটে হামলা চালিয়ে গেট ভাঙ্গার চেষ্টা করে। কিন্তু লোহার বড় শক্ত গেটটি তারা ভাঙতে পারেনি। সেই গেটের গায়ে ভারি ধাতব কিছু দিয়ে আঘাতের কিছু চিহ্ন আমরাও দেখেছি। এরপর তারা পাশে থাকা সহ-উপাচার্যের বাসভবনের গেটে আক্রমণ করে গেট খুলে উপাচার্যের নাম ধরে গালাগাল করতে করতে ভবনে প্রবেশ করে। তারা হয়তো জানত, সহ-উপাচার্য সম্প্রতি উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এবং এটি সহ-উপাচার্যের বাসা। কিন্তু তারা হয়তো এটি জানত না, তিনি বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই উপাচার্য ভবনে চলে গেছেন এবং এখন এই ভবনে কেউ থাকে না। কিন্তু খালি ভবনটিতেই তারা আক্রমণ চালায় এবং ওপর ও নিচতলায় ব্যাপক ভাংচুর করে- যা উপাচার্য ভবনে হামলারই অনুরূপ। সেখানেও তারা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিগুলোকে দেয়াল থেকে নামিয়ে পিটিয়ে ভাঙ্গে ও পদদলিত করে। সহ-উপাচার্য ভবনের লাগোয়া টাওয়ার ভবনের শিক্ষকবৃন্দও এই পুরো দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন। তারা নাকি প্রতি ঘরে ঘরে গিয়ে উপাচার্যের খোঁজ করতে থাকে। হঠাৎ তারা তান্ডব থামিয়ে দ্রুত স্থান পরিত্যাগ করে এবং উর্ধশ্বাসে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে ছুটতে থাকে। এ ঘটনা থেকে মনে হয় যারা আক্রমণকারী তারা বহিরাগত বলে উপাচার্যের অবস্থান সম্পর্কে জানত না এবং পরে তারা কোথাও থেকে পরবর্তী নির্দেশ পেয়ে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে রওনা হয়। উপাচার্য ভবনের প্রত্যক্ষদর্শী কর্মচারীদের বক্তব্য অনুযায়ী তারা প্রথমে উপাচার্য ভবনের প্রধান ফটক খোলার বা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। পরে তারা মত পরিবর্তন করে বা কারও কাছ থেকে পরামর্শ পেয়ে ফটকের দুটি পিলার পূর্বের কাঁটাতার লাগানো দেয়াল বেয়ে ভেতরে ঢুকে। ওখানে ভেতরের দিকে নামা কিছুটা সহজ ছিল। তারা জামার পিঠের নিচে প্যান্টের বেল্টে গুঁজে নিয়ে এসেছিল প্রায় দুই ফুট লম্বা স্টিলের রড, কারও হাতে ছিল লোহার ভারি হাতুড়ি, কারও হাতে শাবল। তারা প্রথমেই গেট খুলে দেয় ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাগুলো ধ্বংস করে। বাইরে দীর্ঘক্ষণ ধরে জটলাকারী শিক্ষার্থীরা বাসভবনের আঙ্গিনার ভেতরে প্রবেশ করে স্লোগান দিতে থাকে। কিন্তু রড-হাতুড়ি-শাবলধারীরা আঙ্গিনায় না থেকে দৌড়ে ভবনের ভেতরে চলে যায়। তারা সিসি ক্যামেরার কম্পিউটার খুঁজতে থাকে। সেটিকে প্রথমে ভাঙ্গে এবং হার্ড ডিস্ক খুলে ব্যাগে ভরে নেয়। তারপর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে টেবিলের পুরো গ্লাস ভাঙ্গে। এরপর তারা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে পুরো ভবনে একযোগে হামলা চালায় এবং সবকিছু ধ্বংস করতে থাকে। তারা বাল্বগুলোও ভেঙ্গে ফেলে। ফলে পুরো ভবন নাকি অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যেই তারা হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল। কর্মচারীরা বলেছে, এদের কারও কারও গায়ের টি শার্টে ‘ঢাকা কলেজ’ লেখা ছিল। মনে হয়েছে এরা সব প্রশিক্ষিত এবং প্রতিটি কাজ পরিকল্পনামাফিক করছে। হামলার ত্রিশ-চল্লিশ মিনিটে এরা নিজেরা কথাও বেশি বলছিল না। তবে মাঝে মাঝে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছিল যা শুনে কর্মচারীরা বিভ্রান্তিতে পড়ে গিয়েছিল। বিভ্রান্তি সত্ত্বেও তারা উপাচার্য, তার স্ত্রী ও পুত্র-কন্যার জীবন নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত ছিল এবং এদের রক্ষায় সর্বাত্মক সচেষ্ট ছিল। উপাচার্য বারান্দায় ছিলেন এবং অন্ধকার ছিল বলে হামলাকারীরা তাকে দেখতে পায়নি। তাছাড়া সেই গভীর রাতে কর্মরত সাংবাদিকরা, বিশেষ করে টিভি ক্যামেরাম্যানরা উপাচার্যকে তাদের পেছনে রেখে ফ্লাশ লাইট দিয়ে হামলার দৃশ্য ধারণ করছিলেন বলে হামলাকারীরা সম্ভবত চিহ্নিত হওয়ার ভয়ে ক্যামেরার সামনে আসতে চায়নি। আমার ধারণা, সেদিন মুখোশধারী হাতুড়ি-রড-শাবলওয়ালারা উপাচার্য বাসভবনে আরও সেনসেশন তৈরি করার জন্য আরও মারাত্মক কোন ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিল। তবে এই মুখোশওয়ালারা শুধু যে ধ্বংসকেই পছন্দ করে তা কিন্তু নয়। মনে হয় তারা বেশ বৈষয়িকও। কারণ, উপাচার্য ভবনের কর্মচারীরা বলেছে, রাত দুটার দিকে ছাত্রলীগ ওদেরকে ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেয়ার আগেই ওরা প্রায় সবাই চলে যায়। যাওয়ার সময় কর্মচারীদের কাছে ডেকে তাদের পকেট হাতড়ে মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা যা ছিল সব কেড়ে নিয়ে যায়। সকালে কথা বলার সময় তাদের কারও কাছেই আমরা কোন মোবাইল ফোন দেখতে পাইনি। লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান,ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগ [email protected]
×