ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেঙ্গল শিল্পালয়ে গিয়াসউদ্দিনের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ১০:১৪, ৬ এপ্রিল ২০১৯

 বেঙ্গল শিল্পালয়ে গিয়াসউদ্দিনের  চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্প চর্চা ও উপস্থাপনের তাগিদে ২০০০ সালে যাত্রা শুরু হয় বেঙ্গল শিল্পালয়ের। ‘বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টস’ নামের প্রদর্শনালয়টিতে দীর্ঘ ১৬ বছরে দেশের খ্যাতনামা প্রায় সব শিল্পীর একক কিংবা যৌথ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। সংস্কারের জন্য ২০১৬ সালে বন্ধ হয়ে যায় এটি। চলেছে এটিকে নতুন আঙ্গিকে বিন্যাসের কাজ। এবার নব আঙ্গিকে সেজেছে প্রদর্শনালয়টি। মাঝে তিন বছর বিরতির পর শুক্রবার নবযাত্রা শুরু করল সেই বেঙ্গল শিল্পালয়। বৃক্ষ-লতায় আচ্ছাদিত নান্দনিক ভবনটির একতলা ও দোতলায় যুক্ত হয়েছে গ্যালারি। পটুয়া কামরুল হাসান ও সুবীর চৌধুরীর নামাঙ্কিত প্রদর্শনালয় দুটি গড়ে উঠেছে নান্দনিক নক্সায়। আর সুন্দরের প্রতিচ্ছবিময় নতুন গ্যালারির সেই নবযাত্রার সঙ্গী হলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী কাজী গিয়াসউদ্দিন। এই শিল্পীর আঁকা নানা ছবি এখন ঝুলছে গ্যালারি দেয়ালে কিংবা প্রদর্শনালয়ে রাখা কাঁচের বক্সে। সেসব চিত্রকর্ম নিয়ে শুরু হলো দেড় মাসব্যাপী শিরোনাম ‘দ্য ওয়ার্ক অব ক্রিয়েশন’। চৈতালী বিকেলে সম্মানিত অতিথি হিসেবে একই সঙ্গে বেঙ্গল শিল্পালয় এবং প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ এবং ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইযুমি। বক্তব্য রাখেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আবুল খায়ের। অনুভূতি ব্যক্ত করেন কাজী গিয়াসউদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, শিল্পী মনিরুল ইসলাম ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, চিত্রশিল্পের বিকাশে বেঙ্গল শিল্পালয়ের ভূমিকা আছে। চিত্রকলাকে সবার কাছে পৌঁছে দেয়া ও দর্শকরুচীর উন্নয়নে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন যে ভূমিকা রেখেছে সেটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কাজী গিয়াসউদ্দিনের চিত্রকর্ম প্রসঙ্গে বলেন, অসাধারণ সূক্ষ্মতা, রঙের সঙ্গত ব্যবহারের মাধ্যমে নিজস্বতা তৈরি করেছেন। তার আঁকা অনেক ছবিকে দূর থেকে অনেকটা গুহাচিত্রের মতো মনে হবে। কাছে এলে সূক্ষ্ম কাজের সামগ্রিকতা উপলব্ধি করা যায়। তাই একজন উপযুক্ত শিল্পীর কাজ দিয়েই গ্যালারির নবযাত্রা শুরু হলো। কাজী গিয়াসউদ্দিন ঢাকা ও টোকিওতে তার সৃজন নিয়ে ব্যাপৃত থাকেন। এ দুটি শহর হয়ে ওঠে তার সৃষ্টির ক্ষেত্র। শিল্পী হিসেবে গিয়াসউদ্দিন স্বতন্ত্র। প্রকৃতির অন্তর্নিহিত স্পন্দন ও সৌন্দর্য তার চিত্রতলে এক সূক্ষ্ম-নিপুণ-সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়ায় স্থিতি পায়। রং ও প্রকরণ অবিভাজ্য। নিসর্গের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য উপলব্ধি এ জন্য অপরিহার্য। এসব কিছু নিয়ে তার এই একক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গ্যালারি ঘুরে দেখা যায়, গোটা গ্যালারি নির্মিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মান অনুসারে। ইউরোপ-আমেরিকায় গ্যালারিগুলোয় যেমন দিনের আলো ও সূর্যালোক প্রবেশের সুযোগ থাকে, বেঙ্গল গ্যালারিতেও রয়েছে সেই সুযোগ-সুবিধা। এ ছাড়া শিল্পকর্ম সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য রয়েছে নানা উপকরণ। প্রদর্শনী চলবে আগামী ১৮ মে পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।
×