ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা এ মাসের শেষে

প্রকাশিত: ১১:৩৪, ৪ এপ্রিল ২০১৯

আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা এ মাসের শেষে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চৈত্রে বর্ষার আমেজ! তবে এটাকে আবহাওয়ার স্বাভাবিক আচরণ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ দেশের অনেক স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য হ্রাস পাওয়ায় রাজধানীতে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এমন অবস্থা আরও কয়েকদিন থাকতে পারে। চলতি মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। সৃষ্টি হতে পারে নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড় ও তীব্র তাপপ্রবাহ। আর ভারি বৃষ্টিপাতজনিত কারণে এপ্রিলের শেষার্ধে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী তিন দিন বজ্র বৃষ্টি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চৈত্রের বিদায় নিতে আর মাত্র ৯ দিন বাকি। এ বছর এখন পর্যন্ত খুব বেশি চৈত্রের খরা পোহাতে হয়নি দেশের মানুষকে। এ পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়ামের মধ্যেই রয়ে গেছে। যেকোন সময় দেখা দিতে পারে কালবৈশাখী ঝড়, সঙ্গে থাকতে পারে বৃষ্টি। গত বছরও এপ্রিলের ১ ও ২ তারিখে খরতাপ থাকলেও পরদিন থেকেই নেমে আসে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। গত কয়েকদিন ধরে দেশের অধিকাংশ এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এটি এই সময়ে আবহাওয়ার স্বাভাবিক আচরণ। আর ক’দিন পরই বাড়তে থাকবে তাপমাত্রা। এই মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২ নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ২ থেকে ৩দিন বজ্রসহ মাঝারি থেকে তীব্র কালবৈশাখী অথবা বজ্রঝড় ও দেশের অন্যত্র ৩ থেকে ৪ দিন হালকা থেকে মাঝারি কালবৈশাখী অথবা বজ্রঝড় হতে পারে। দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে একটি তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ এবং অন্যত্র ১ থেকে ২ মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ঢাকা বিভাগে ১৫০ মিলিমিটার, ময়মনসিংহে ১৫২, চট্টগ্রামে ১৪৩ মিমি, সিলেটে ২৯৬ মিমি, রাজশাহীতে ৮২ মিমি, রংপুরে ৯৪ মিমি, খুলনায় ৭৬ মিমি ও বরিশাল বিভাগে ১৩২ মিলিমিটার থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর আরও জানায়, আগামী মে মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। ওই মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২ নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ওই দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ২ থেকে ৩দিন বজ্রসহ মাঝারি থেকে তীব্র কালবৈশাখী অথবা বজ্রঝড় ও দেশের অন্যত্র ৩ থেকে ৪টি হালকা থেকে মাঝারি কালবৈশাখী অথবা বজ্রঝড় হতে পারে। ওই মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ১ থেকে ২ তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ এবং অন্যত্র ২ থেকে ৩ মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, গত মার্চে সারাদেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা ২.৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম এবং ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সূত্রটি আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১৯ মিলিমিটার, টাঙ্গাইলে ৬ মিমি, গোপালগঞ্জে ১৮ মিমি, নিকলিতে ৬০ মিমি, ময়মনসিংহ ২৩ মিমি, নেত্রকোনায় ২ মিমি, চট্টগ্রামে ২২ মিমি, সন্দ্বীপে ৩৮ মিমি, সীতাকু-ে ৩২ মিমি, রাঙ্গামাটিতে ৩১ মিমি, কুমিল্লায় ৬৭ মিমি, চাঁদপুরে ১৪ মিমি, মাইজদিকোর্টে ৫ মিমি, ফেনীতে ২৫ মিমি, কক্সবাজারে ৩ মিমি, কুতুবদিয়ায় ৩ মিমি, সিলেট ৭ মিমি, শ্রীমঙ্গলে ৩০ মিমি, বদলগাছীতে ২৯ মিমি, বগুড়ায় ১১ মিমি, সৈয়দপুরে ৪ মিমি, যশোরে ৫৪ মিমি ও চুয়াডাঙ্গায় ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
×