ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু কাপ গলফ ওপেন শুরু আজ, বৃষ্টির কারণে খেলা বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা

শিরোপা জিততে চান সিদ্দিকুর

প্রকাশিত: ১২:১০, ৩ এপ্রিল ২০১৯

শিরোপা জিততে চান সিদ্দিকুর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে, ন্যাশনাল ব্যাংক লিঃ’র পৃষ্ঠপোষকতায় এবং এশিয়ান ট্যুরের সহযোগিতায় আজ বুধবার থেকে ঢাকা সেনানিবাসের কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে আন্তর্জাতিক পেশাদার গলফ টুর্নামেন্ট ‘বঙ্গবন্ধু কাপ গলফ ওপেন’ শুরু হচ্ছে। চলবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। এশিয়ান ট্যুর বর্তমান গলফ বিশ্বে গলফের তৃতীয় বৃহত্তম ট্যুর। আন্তর্জাতিক এই টুর্নামেন্টে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের, বিশেষ করে এশিয়ার খ্যাতিমান পেশাদার গলফাররা অংশ নিয়ে থাকেন। নিঃসন্দেহে এই আয়োজন ক্রীড়াবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এই আসরে ২২ দেশের সেরা ১৪৬ পেশাদার গলফার অংশ নেবেন। টুর্নামেন্টের প্রাইজমানি সাড়ে তিন লাখ ডলার। এই টুর্নামেন্টের আয়োজক হওয়ার সুবাদে বাংলাদেশের ৪০ উদীয়মান পেশাদার গলফার এবং ৬ এ্যামেচার গলফার সরাসরি মূলপর্বের খেলায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের প্রথম পেশাদার ও তারকা গলফার সিদ্দিকুর রহমান। ৩৫ বছর বয়সী সিদ্দিকুর এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জিততে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। যদিও টুর্নামেন্ট শুরুর আগেরদিন বৃষ্টির কারণে অন্য গলফারদের প্রস্তুতিতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। তবে বুদ্ধিমান সিদ্দিকুর বৃষ্টি শুরুর আগেই অনেকটা সময় অনুশীলন সেরে নেন। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত যে বাংলাদেশে এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো এশিয়ান ট্যুর হতে যাচ্ছে। এই আসরে কে যে শিরোপা জিতবেন সেটা আসরে জোর দিয়ে বলা মুশকিল। কেননা সবাই মোটামুটি একইমানের খেলোয়াড়। ধারাবাহিকভাবে পুরো আসরে যিনি ভাল খেলবেন তিনিই চ্যাম্পিয়ন হবেন।’ নিজের ব্যাপারে সিদ্দিকুরের ভাস্য, ‘আমার প্রস্তুতি বেশ ভাল। সপ্তাহ দুয়েক আগে মালয়েশিয়াতে গিয়ে একটি টুর্নামেন্ট খেলে আসলাম। রেজাল্ট মন্দ ছিল না। এখন খেলব নিজের মাটিতে। আশাকরি ট্রফিটা আমার হাতেই উঠবে। আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই।’ কুর্মিটোলায় এর আগে যে চারটি এশিয়ান ট্যুর হয়েছিল, তাতে জেতেনি বাংলাদেশের কোন গলফার। এবার যদি সিদ্দিকুর জিততে পারেন তাহলে ইতিহাসই রচিত হবে বাংলাদেশের গলফের। সিদ্দিকুর এ পর্যন্ত যে দুটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছেন তার প্রতিটিই বিদেশের মাটিতে। একটি ব্রুনাইয়ে (২০১০ সালে ব্রুনাই ওপেন) এবং অন্যটি ভারতে (২০১৩ সালে হিরো ইন্ডিয়ান ওপেন)। গলফার হিসেবে সিদ্দিকের উত্থান অনেকটা রূপকথার মতো। এক সময় ‘বলবয়’ থেকে ‘ক্যাডি’ পদে পদোন্নতি হয় তার। তখন তিনি খেলোয়াড়দের সঙ্গে থেকে তাদের সরঞ্জাম বহন করার কাজ করার সুযোগ লাভ করেন। এভাবেই গলফের প্রতি তৈরি হয় দুনির্বার আকর্ষণ। লোহার দোকানে গিয়ে লোহার রড দিয়ে গলফ ক্লাবের মতো একটা কিছু তৈরি করে নেন। পড়ালেখার পাশাপাশি ক্যাডির দায়িত্ব পালন করেও সিদ্দিক তখন এই আনকোরা ক্লাব দিয়ে চর্চা করতেন। এরপর ২০০০ সালের দিকে বাংলাদেশের গলফ ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের উদ্যোগে দেশে প্রতিযোগিতামূলক গলফে বলবয়-ক্যাডি হয়ে আসা সুবিধাবঞ্চিত গলফারদের প্রতিভা দেখানোর সুযোগ হয়। সেই সুযোগে কোচের অধীনে শুরু হয় সিদ্দিকুর রহমানের অনুশীলনও। সবাইকে অবাক করে জিতে নেন একে একে ১২টি অপেশাদার গলফ টুর্নামেন্টের শিরোপা। সেই থেকে সাফল্যের অভিমুখে পথচলা শুরু সিদ্দিকুরের।
×