ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফায়ার সার্ভিসের সুপারিশ বাস্তবায়ন না করলে ব্যবস্থা ॥ এলজিআরডি মন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ৩১ মার্চ ২০১৯

ফায়ার সার্ভিসের সুপারিশ বাস্তবায়ন না করলে ব্যবস্থা ॥ এলজিআরডি মন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অগ্নিনির্বাপণ ও আগুন লাগা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের দেয়া সকল প্রকার সুপারিশ এখন থেকে বাস্তবায়ন করা হবে। সুপারিশ বাস্তবায়নে কেউ গাফিলতি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। ডিএনসিসি মার্কেটের আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে নীতিমালা সাপেক্ষে সহায়তার আশ্বাস দেন মন্ত্রী। শনিবার দুপুরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত গুলশান ১ নম্বর ডিএনসিসি কাঁচাবাজার পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার সচিব, অতিরিক্ত সচিব (নগর উন্নয়ন) মাহবুব হোসেন, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, সচিব রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়াসহ উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, এই দুর্ঘটনার জন্য আমি প্রথমেই সমবেদনা জানাই যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রতি। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা এক সময় খুব গরিব ছিলাম। দেশটার অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বেশিরভাগ অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। দীর্ঘদিনের এসব অবকাঠামো সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসার ব্যাপারে এখন নমনীয়তা দেখানোর কোন সুযোগ নেই। এখানে মার্কেট হওয়ার জন্য যেসব ব্যবস্থাপনা থাকার দরকার তার মধ্যে যথেষ্ট গাফিলতি আছে। এর আগে মার্কেটটি ভেঙ্গে নতুন মার্কেট করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন আইনী জটিলতা সৃষ্টি করে কাজটিকে মন্থর করে দেয়া হয়েছে। আমার মনে হয়, এই ক্ষতির পরে সবার বোধোদয় হবে ও সরকারকে সহযোগিতা করবে মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণের কোন ব্যবস্থা ছিল না কেন সাংবাদিকদের উত্তরে তিনি বলেন, এটা অস্থায়ী মার্কেট। এটাকে পূর্ণাঙ্গ মার্কেটে রূপান্তরের জন্য সিটি কর্পোরেশন আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে। অস্থায়ী মার্কেটে ব্যবসায়ীরা নিশ্চয়ই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রেখেছে। হয়ত সেটা পর্যাপ্ত ছিল না। আগুনের ঝুঁকির কারণে এই মার্কেটের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস যেসব সুপারিশ করেছিল তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এখন থেকে কেউ তা বাস্তবায়ন না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে বহুতল ভবন নির্মাণের কথা আমরা শুনেছি। এই উদ্যোগ কতদূর জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সেটার জন্য সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করা আছে। টেন্ডার করা হয়েছে। আইনগত জটিলতা সৃষ্টি করে, যদি কোর্টে কোন বিচারাধীন বিষয় থাকে সেখানে সরকার কোর্টের বাইরে যেতে পারে না। এই বিষয়টি দেশবাসী ভাল করে জানেন। যাদের এই বিষয়ে সহযোগিতা করার সুযোগ আছে তারা যদি সহযোগিতা করে আমি বিশ্বাস করি সরকার যথাযথ ভূমিকা পালন করবে। এ সময় ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা জানেন একটির পর একটি ঘটনা ঘটছে। আগে কী ঘটেছে ওটা না, এখন কী করব সেটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। এখন সময় এসেছে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার। এখানে প্রায় ২শ’ ৯১টি দোকান আছে। ফায়ার এক্সিট, ফায়ার হাইড্রেন্ট, ফায়ার আইল এগুলোর ব্যবস্থা করলে দোকানের সংখ্যা কমে যাবে। এখন দোকান মালিকদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কারা দোকান রাখবেন কারা রাখবেন না। আমরা চাই সুন্দর একটা প্ল্যান করে কিছু করার জন্য। মেয়র বলেন, আপনারা জানেন কাওরানবাজার মার্কেটটিও অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে। আমরা শীঘ্রই জানাব কোন কোন মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ। যেসব মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলো দোকান মালিক, মার্কেট ব্যবসায়ী সবার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। আমাকে মার্কেটগুলোর পরিবর্তন আনতেই হবে। মেয়র বলেন, আগুন লাগার কারণ তদন্ত করে জানানো হবে। উল্লেখ্য, শনিবার ভোর ৫টা ৪৮ মিনিটে ডিএনসিসি মার্কেটের কাঁচাবাজারের পূর্ব পাশে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
×