ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার চার অলরাউন্ডারে ভীত নয় কুমিল্লা

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 ঢাকার চার অলরাউন্ডারে  ভীত নয় কুমিল্লা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অধিনায়ক হিসেবে এই প্রথম কোন ফাইনালে ইমরুল কায়েস। ২০১৫ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সদস্য হিসেবে তিনি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ শিরোপা জিতেছিলেন। এবার সেই দলটিকেই নেতৃত্ব দেবেন ফাইনালে। তার লড়াই ঢাকা ডায়নামাইটস অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যিনি ২০১৬ সালে দলকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন। এই ফাইনালে দুই দেশী কোচেরও লড়াই হতে যাচ্ছে। ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন এবং কুমিল্লার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। ফলে ফাইনাল ভেন্যু মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট, পরিবেশ, পরিস্থিতি এবং দলের সব ক্রিকেটারের শক্তিমত্তা সবটাই জানা উভয় দলের অধিনায়ক ও কোচের। ঢাকার মূলশক্তি চার অলরাউন্ডার- সাকিব, সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেল ও কাইরন পোলার্ড। তাদের নৈপুণ্যেই ম্যাচগুলো জিতেছে ঢাকা। তবে এদের নিয়ে শঙ্কিত নয় কুমিল্লা। অধিনায়ক ইমরুল দাবি করেছেন, লীগপর্বে ওই চার অলরাউন্ডার খেললেও ঢাকাকে হারিয়েছেন তারা। তাই এবার ফাইনালে সব শক্তি উজাড় করে আরেকবার জিততে চান। আর দলের কোচ সালাউদ্দিন জানিয়েছেন তার দলেও তিন অলরাউন্ডার- থিসারা পেরেরা, শহীদ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন আছে যাদের দিয়ে দারুণ কিছু করা সম্ভব। তবে ঢাকা অধিনায়ক সাকিব আবারও জানিয়েছেন দলের চার অলরাউন্ডার ফাইনালে জ্বলে উঠে নিজেদের পক্ষে ফলাফল নিয়ে আসবেন। ২০১৬ সালে প্রথমবার অধিনায়ক হিসেবে বিপিএলে শিরোপা জিতেছিলেন সাকিব। তবে পরের বছরই তা হারিয়েছেন। এবার হারিয়ে ফেলা শিরোপা পুনরুদ্ধারের সুযোগ তার সামনে। সাকিব ফাইনাল নিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের চার অলরাউন্ডার আছেন। তারা ভালও করছেন। আশাকরি ফাইনালেও তারা দারুণ কিছু করবেন। আমরা এখন ফাইনালে এবং আমি চাই সবাই ম্যাচটি উপভোগ করবে। হয়তো কিছু ছোটখাটো ইনজুরি সমস্যা আছে দীর্ঘদিন ধরে টুর্নামেন্টে খেলে। কিন্তু সবাই ফাইনাল খেলতে চায়।’ তবে ঢাকার এই অলরাউন্ডারদের নিয়ে কোন চিন্তাই করছেন না কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বিপক্ষে দুইটি ম্যাচ খেলেছি। আর এই দুই ম্যাচে কিন্তু চারটি অলরাউন্ডারই খেলিয়েছিল তারা। আমাদের কাছে এই দুই ম্যাচেই হেরেছে তারা। সুতরাং আমরা অতিরিক্ত কোন পরিকল্পনা বা চিন্তা করছি না। মাঠে গেলে পরিস্থিতি কি হয়, সেই পরিস্থিতিই বলে দেয় যে মানুষ কিভাবে ফেস করতে হবে বা মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের দলে অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছে। শহীদ আফ্রিদি আছে সে জানে, অনেক ক্রিকেট খেলেছে টি২০ ফরমেটে। আমরা আমাদের শক্তি অনুযায়ী ঠিকমতো প্রয়োগ করতে পারি ইনশাআল্লাহ একটি ফলাফল আসার সম্ভাবনা আছে।’ এ বিষয়টি নিয়ে দলের কোচ সালাউদ্দিনও তেমন চিন্তিত নন। তিনি বলেন, ‘অলরাউন্ডার যখন দলে বেশি থাকবে তখন শক্তিও অনেক বেশি থাকবে। কারণ আপনি অলরাউন্ডারদের বেশি ব্যবহার করতে পারবেন। বিকল্প অনেক বেশি হয়ে যাবে। সাইফউদ্দিন, আফ্রিদি, পেরেরা তিনজন অলরাউন্ডার আছে কুমিল্লাতে। আপনারা জানেন যে সাইফউদ্দিন শুরু থেকেই ভাল পারফর্ম করছে। আমার কাছে মনে হয় অলরাউন্ডারদের পারফর্মেন্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ ফাইনালের আগেরদিন ঢাকা কোন অনুশীলন করেনি আগেরদিন কোয়ালিফায়ার খেলার কারণে। তবে কুমিল্লা দু’দিন পূর্ণ বিশ্রাম নিয়ে অনুশীলন করেছে বৃহস্পতিবার। এ বিষয়ে ইমরুল বলেন, ‘একদিন অনুশীলন করে সবকিছু পরিবর্তন করা যায় না। আমার কাছে মনে হয় ফাইনাল ম্যাচ কালকে (আজ), সবাই অনেক উত্তেজিত থাকবে। তবে আমরা যতটুকু মাঠে উপভোগ করতে পারব সেটা ঠিকমতো করতে পারলে আমার মনে হয় সাফল্যের সুযোগটি বেশি থাকবে।’ অধিনায়ক হিসেবে এই প্রথম কোন আসরের ফাইনালে নামছেন ইমরুল। সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা নিয়ে আসলে এখানে বলা তো ঠিক না। সেটা নিজেদের মধ্যে রাখাই ভাল। আমার কাছে মনে হয়, শুধু আমি না, উত্তেজনা সকলেরই আছে। শুধু আমি বললে ভুল হবে, কারণ প্রতিটি খেলোয়াড়ই চায় যে বিপিএলের ফাইনালে খেলতে এবং চ্যাম্পিয়ন হতে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতিটি আমি একবার পেয়েছি। কারণ কুমিল্লায় আমি খেলেছি এর আগে এবং তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।’ এবার ফাইনালে হতে যাচ্ছে দুই দেশীয় কোচ সুজন আর সালাউদ্দিনের লড়াই। শেষ পর্যন্ত ফাইনালে কে শিষ্যদের হাতে ট্রফিটি দেখতে পাবেন তা জানা যাবে আজই। এ বিষয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘সুজন ভাই অনেক বড় মাপের কোচ। তার অনেক গুণ আছে। সে অনেক কিছু দেখতে পারে আমি হয়তো সে তুলনায়...! আমি নিজেকে কখনও তুলনা করি না এই জায়গাটায়। আমার মনে হয় এই জিনিসটা না বললেই আমার জন্য ভাল। দেশী কোচদের জন্য অনেক লাভ হবে আমি আশাকরি। আমরা ভাল করলে আমাদের দেশী কোচদের অনেক লাভ। আমি সবসময় চাই আমাদের কোচরা যেন ভাল জায়গায় কাজ করে এবং শিখতে পারে।’ ঢাকার হয়ে ফর্মের তুঙ্গে থাকা পেসার রুবেল হোসেনও আশাবাদী এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে। তিনি বলেন, ‘কুমিল্লা দলটাও খুব শক্ত দল। ওদের ব্যাটিং লাইনও খুব বড়। আমার কাছে মনে হয় যে, এই ম্যাচটা খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে। যারা মাঠে তাদের সেরাটা দিতে পারবে তারাই ম্যাচ জিতবে। আমরা পরপর পাঁচটা ম্যাচ হেরেছিলাম। আমরা মানসিকভাবে একটু বিমর্ষ ছিলাম সবাই। ইনশাআল্লাহ খুব ভালভাবে কামব্যাক করতে পারছি। তো পরের ম্যাচটা আমরা সবাই যদি ভাল খেলতে পারি তাহলে ভাল একটা ফল আসবে।’
×