ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয় কবিতা উৎসবের পর্দা উঠছে আজ

প্রকাশিত: ১১:০৯, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয় কবিতা উৎসবের পর্দা উঠছে আজ

মনোয়ার হোসেন ॥ আজ দিনভর কথা হবে কবিতার। সকাল থেকে রাত কাটবে সময় কবিতায়। দেশ-বিদেশের কবিরা কবিতার ভাষায় কথা বলবেন। শিল্পিত উচ্চারণের সে ভাষায় থাকবে মানবিক সম্প্রীতির আলিঙ্গন আর সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী স্পষ্ট উচ্চারণ। স্বপ্নীল সোনার বাংলার প্রত্যাশায় স্বদেশের কবিরা ছড়াবেন বিজয়ের বারতা। কাব্যবীজের স্ফুরণে স্পন্দিত হবে উৎসব আঙিনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে স্বদেশের কবিদের সঙ্গে সমবেত হবেন দশ দেশের কবির। সবার সম্মিলনে হাল্কা ঠা-ার দিনে যেন জ্বলে উঠবে জাতীয় কবিতা উৎসব। একুশের গানে ভালবাসা পাবেন মাতৃভাষার তরে প্রাণ সঁপে দেয়া শহীদেরা। স্মরিত হবেন শিল্পাচার্য জয়নুল থেকে জাতীয় কবি নজরুল। আজ শুক্রবার সকালে ঢাবির হাকিম চত্বরে শুরু হবে দুদিনের ৩৩তম জাতীয় কবিতা উৎসব। জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে ‘বাঙালির জয় কবিতার জয়’ স্লোগানে এবারের উৎসব উদ্বোধন করবেন গীতিময় কবিতার কবি আসাদ চৌধুরী। বেলা দশটা থেকে শুরু হবে কার্যক্রম। শুরুতেই কবিরা পদব্রজে এগিয়ে যাবেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসানের সমাধি প্রাঙ্গণে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বায়ান্নর ভাষা শহীদদের প্রতি নিবেদন করবেন সশ্রদ্ধ ভালবাসা। এরপর হাকিম চত্বরে ফিরে সবাই মিলে গাইবেনÑ আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি...। সুরে সুরে তাল মিলিয়ে উত্তোলিত হবে জাতীয় পতাকা। এরপর বিগত বছর থেকে শুরু করে সম্প্রতি প্রয়াত শিল্পী-সাহিত্যিকদের স্মরণে পঠিত হবে শোকপ্রস্তাব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন পরিষদ সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ। রুবী রহমানের উৎসব ঘোষণাপত্র পাঠের পর আহ্বায়কের ভাষণ দেবেন রবিউল হুসাইন। সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য দেবেন তারিক সুজাত। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল সাড়ে এগারোটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত চলবে মুক্ত আলোচনা ও কবিতাপাঠ। সেই সূত্রে উৎসবের প্রথম দিনের প্রথম অধিবেশনেই শিল্পিত আড্ডায় মেতে উঠবেন স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ভারত, যুক্তরাজ্য, ইরাক, কঙ্গো, স্পেন, উরুগুয়ে, চীন, মালয়েশিয়া, নেপাল ও তুরস্কের আমন্ত্রিত লেখক ও কবিরা। এরপর শুরু হবে নিবন্ধনের মাধ্যমে কবিতাপাঠের প্রথম পর্ব। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা উৎসবে সমাগত নবীন-প্রবীণ কবিরা মেলে ধরবেন স্বরচিত কবিতাসম্ভার। এ পর্বে সভাপতিত্ব করবেন সদ্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারজয়ী কবি কাজী রোজী। এ পর্বে অন্য ভাষার কবিতা নিয়ে মঞ্চে আসবেন কবিরা। পাঠ করবেন চাকমা, মনিপুরী, পাংখোয়া কিংবা রাখাইন ভাষার কবিতা। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করা কবিদের অংশগ্রহণে উৎসবের এ অধিবেশনের সভাপতিত্ব করবেন দিলারা হাফিজ। শুধু আমন্ত্রিত কবিদের নিয়ে কবিতাপাঠের তৃতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করবেন জাতিসত্তার কবিখ্যাত মুহম্মদ নুরুল হুদা। প্রথম দিনের কবিতাপাঠের চতুর্থ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন মহাদেব সাহা। রাত আটটায় শুরু হওয়া আবৃত্তিপর্বের মাধ্যমে শেষ হবে প্রথম দিনের আয়োজন। কবিতাপ্রেমীদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় হয়ে ধরা দেবে আবৃত্তিশিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য পর্বটি। দেশের খ্যাতনামা বাচিকশিল্পীদের কণ্ঠে উঠে আসবে দেশ-বিদেশের বরেণ্য কবিদের কবিতা। সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী, নন্দিত অভিনেতা ও আবৃত্তিশিল্পী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে হবে প্রথম দিনের সমাপনী অধিবেশন। [জঞঋ নড়ড়শসধৎশ ংঃধৎঃ: }থএড়ইধপশ[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ বহফ: }থএড়ইধপশ দ্বিতীয় দিনের সকালটা শুরু হবে সেমিনারের মাধ্যমে। কাব্যনাটক বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সাজেদুল আউয়াল। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন নূহ-উল-আলম লেনিন। বেলা সাড়ে বারোটায় হবে উৎসবের দ্বিতীয় সেমিনার। বাঙালীর জয় বাংলা কবিতার জয় বিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ করবেন কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাপতিত্ব করবেন বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর। নিবন্ধিত কবিদের অংশগ্রহণে কবিতাপাঠের পঞ্চম পর্বটি হবে বেলা আড়াইটায়। এ পর্বে সভাপতিত্ব করবেন কবি নাসির আহমেদ। নিবন্ধিত কবিদের কবিতাপাঠের ষষ্ঠ পর্বে সভাপতিত্ব করবেন আনোয়ারা সৈয়দ হক। ছড়াকার আসলাম সানীর সভাপতিত্বে আমন্ত্রিত ছড়াকারদের নিয়ে ছড়াপাঠের সপ্তম পর্বটি হবে বিকেল সাড়ে চারটায়। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ’১৮ সালের ঘোষণাকৃত জাতীয় কবিতা পুরস্কারটি তুলে দেয়া হবে কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর হাতে। সন্ধ্যায় শিহাব সরকারের সভাপতিত্বে কবিতাপাঠের অষ্টম পর্বে অংশ নেবেন আমন্ত্রিত অতিথি কবিরা। আমন্ত্রিত কবিদের অংশগ্রহণে কবিতাপাঠের নবম পর্বে সভাপতিত্ব করবেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। সমাপনী দিনের শেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে কবিতার গান। সুরের পথ ধরে কবিতা থেকে নির্মিত হয়েছে অনেক গান। সেসব গান শোনাবেন দেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পীরা। এ পর্বে সভাপতিত্ব করবেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। বিদেশী কবিদের মধ্যে ভারত থেকে অংশ নেবেন জ্যোতির্ময় দত্ত, মিনাক্ষী দত্ত, রাতুল দেব বর্মণ, বীথি চট্টোপাধ্যায় ও শিবান্তি ঘোষ। তাদের সঙ্গে থাকবেন যুক্তরাজ্যের ক্লেয়ার বুকার, তুরস্কের তারিক গুনারসেল, ইরাকের ড. আলী আল সালাহ, কঙ্গোর কামা কামান্ডা, স্পেনের জুলিও পাভানেত্তি, উরুগুয়ের আনাবেল ভিলার, চীনের ড. তানজিয়ান কাই, মালয়েশিয়ার মালিম ঘোজালি ও নেপালের পুষ্প খানাল।
×