ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সোনামসজিদ স্থল বন্দরে কমছে পণ্য আমদানি

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯

  সোনামসজিদ স্থল বন্দরে  কমছে পণ্য আমদানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পণ্য খালাসে জটিলতা, কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে আংশিক শুল্ক ছাড় না দেয়াসহ নানা কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্দরে কমে গেছে আমদানি কার্যক্রম, এমনটাই বলছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। পণ্য আমদানি রফতানিকারক ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা জানান, অন্যান্য বন্দরের মতো এখানেও সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে বন্দরের কর্মতৎপরতা বাড়বে। যদিও বন্দর কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ঘাটতির নানা ব্যাখ্যা দেন। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোনামসজিদ স্থল বন্দর। বছর দু’য়েক আগেও গড়ে প্রতিদিন পাঁচশতাধিক গাড়ি ভারত থেকে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এই বন্দরে আসত। এরপর পানামায় পণ্য খালাসের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যেত আপেল কমলাসহ আমদানিকৃত বিভিন্ন ফল। ব্যাপক আমদানি ছিল মরিচ, ভুট্টা, আদা, জিরাসহ বিভিন্ন কাঁচামালেরও। কিন্তু বর্তমানে এই বন্দরে আমদানি হচ্ছে শুধু কমলা, পেঁয়াজ ও পাথর। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্যান্য বন্দরে কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে আংশিক শুল্ক ছাড় দেয়া হলেও এখানে তা মানা হয় না। এছাড়া বন্দরে পণ্য খালাসে জটিলতা, জায়গা স্বল্পতা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অনেক আমদানিকারক। ব্যবসায়ীরা বলেন, পানামাতে পেঁয়াজ আর পাথর রেখে জায়গা ভরে থাকায় মাল নামানোর স্থান সঙ্কুলান হয় না। পচনশীল পণ্য রাখতে আলাদা ইয়ার্ডের দাবি জানান তারা। বিক্রয় অযোগ্য পচে যাওয়া যেসব পণ্য থাকে সেগুলোর ট্যাক্স না নেয়ারও দাবি তাদের। ২০১৮ অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বরে লক্ষ্যমাত্রার চিত্র : জুলাইয়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ২০ কোটি, আগস্টে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ কোটি, আদায় হয়েছে ১১ কোটি, সেপ্টেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ কোটি, আদায় হয়েছে ১২ কোটি, অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪ কোটি, আদায় হয়েছে ১৩ কোটি, নবেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ কোটি আর আদায় হয়েছে সাড়ে ১৮ কোটি এবং ডিসেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। এতে সরকার শুধু রাজস্ব হারাচ্ছে না, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে এই অঞ্চল। তাই অন্যান্য বন্দরের মতো এখানেও সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান পণ্য আমদানি রফতানিকারক ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা। অন্যান্য বন্দরগুলোর মতো এখানেও একইভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা গেলে এখান থেকে দ্বিগুণ রাজস্ব দেয়া সম্ভব বলে মনে করেন সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন অর রশিদ। তবে রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থ হওয়ার নানা কারণ ব্যাখা দিয়ে সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন এই শুল্ক কর্মকর্তা সন্তোষ সরেন। তিনি বলেন, পাথরে ট্যাক্সের পরিমাণ খুবই নগণ্য। যদি ট্যাক্সএবল আইটেম বা অধিক শুল্ক হার যুক্ত পণ্য আমদানি করা হয় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাবে। কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দু’শো ট্রাক পণ্য আমদানি হচ্ছে এই বন্দরে। গত ছয় মাসে বন্দরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রায় ১৪৩ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে।
×