ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘বিয়াল্লিশের বিপ্লব’ যাত্রাপালার দ্বিতীয় মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯

‘বিয়াল্লিশের বিপ্লব’ যাত্রাপালার দ্বিতীয় মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের এক অনন্য অধ্যায় ১৯৪২ সালের আগস্ট আন্দোলন। ইতিহাসের পাতায় বিয়াল্লিশের বিপ্লব হিসেবে পরিচিত এই সংগ্রাম। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সেই অধ্যায়কে নিয়ে নির্মিত হয়েছে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় নাটক বিভাগের যাত্রাপালা ‘বিয়াল্লিশের বিপ্লব’। প্রসাদকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য রচিত যাত্রাপালাটির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রখ্যাত যাত্রাশিল্পী ও নির্দেশক ভিক্টর দানিয়েল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে যাত্রাপালাটির দ্বিতীয় মঞ্চায়ন হয়। যাত্রাপালার নির্দেশক ভিক্টর দানিয়েল জানান, ১৯৪২ সাল বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষের রক্তক্ষরা স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের এক রক্তাক্ত অধ্যায়। অগ্নিযুগের অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে বাংলার মৃত্যুপাগল যৌবন সেদিন যেভাবে দাবানলের মতো জ্বলে উঠেছিল, জীবনপণ করে নির্ভীক সৈনিকের মতো আমৃত্যু যুদ্ধ করেছিল ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্যে, তাদেরই কিছু কাল্পনিক চরিত্রের সমাবেশ এ যাত্রায় চিত্রিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ যাত্রার চরিত্রগুলোর মধ্যে যেমন জন্মভূমি মায়ের মুক্তি সংগ্রামে নিবেদিত বীরসন্তানরা রয়েছে, তেমনি রয়েছে স্বার্থের মোহে অন্ধ ইংরেজের ক্রীতদাস, রয়েছে ঘরশত্রু বিভীষণের দল। যারা অব্যাহত রেখেছে দেশমায়ের মুক্তিসংগ্রামকে ব্যর্থ করে দেয়ার কূটকৌশল। যাত্রাপালার এক পর্যায়ে সাম্রাজ্যবাদী শাসকের প্রলোভনে মত্ত জমিদার তার ¯েœহের নাতি, পুত্র, কন্যা, পুত্রবধূসহ স্বজনদের হারিয়ে উন্মাদ হয়ে যায়। ইংরেজের বিচারে এই আন্দোলনের মূল নায়ক জমিদারপুত্র মহেন্দ্র (প্রশান্ত) চৌধুরীর দ্বীপান্তর হয়। কিন্তু স্বাধীনতা পাওয়ার পর কালাপানির নির্বাসন থেকে সে আবার ফিরে আসে প্রিয় জন্মভূমির বুকে। দেশজুড়ে যাত্রাশিল্পের যখন ভগ্নদশা, তখন এ রকম একটি কাহিনী নিয়ে উদীচীর শিল্পীকর্মীরা এগিয়ে এসেছে এ শিল্পকে পুনরুদ্ধারে। দেশপ্রেম ও বৃটিশবিরোধী বক্তব্য প্রচার করে চারণকবি মুকুন্দদাস শুরু করেছিলেন ‘স্বদেশী যাত্রা’। উদীচীরও প্রথম পরিবেশনা সেই ব্রিটিশ ভারতের স্বদেশী আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে প্রসাদকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য রচিত যাত্রাপালা ‘বিয়াল্লিশের বিপ্লব’। উদীচী মুক্ত মানুষের মুক্ত সমাজ বিনির্মাণের লড়াইয়ে পথ চলছে অবিরাম। সে চলায় নিশ্চয় এটি নতুন মাত্রা যোজনা করবে। যদি আমাদের স্বাধীনতার মর্যাদা অক্ষুণœ রাখতে বর্তমানের তরুণ বন্ধুরা সমাজের অভ্যন্তরে বিরাজমান স্বার্থপর সাম্রাজ্যবাদী দেশীয় দালাল, মজুতদার, মুনাফালোভী লুটেরাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে, তবেই সার্থক হবে বিয়াল্লিশের বিপ্লব, সার্থক হবে উদীচীর এ প্রয়াস। যাত্রাপালাটির বিভিন্ন চরিত্রে রূপ দিয়েছেন বিমল মজুমদার, মারুফ রহমান, প্রবীর সরদার, রেখা রানী গুণ, অমিত রঞ্জন দে, আশরাফুন নাহার মালা, শারমিন আক্তার রিনি, বিজয় রায়, শামীম আল মামুন প্রমুখ।
×