ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

তিন সংসদ সদস্যকে সংবর্ধনা বাফুফের

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯

তিন সংসদ সদস্যকে সংবর্ধনা বাফুফের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এবং চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের মহাসচিব ও বাফুফের নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য সামশুল হক চৌধুরীকে বাফুফের পক্ষ থেকে সভাপতি কাজী মোঃ সালাহউদ্দিন মঙ্গলবার বাফুফে ভবনের কনফারেন্স রুমে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা দেন। পরবর্তীতে অন্যান্য ক্লাব/প্রতিষ্ঠান (মোহামেডান, চট্টগ্রাম আবাহনী, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, ফরাশগঞ্জ, রহমতগঞ্জ, নোফেল স্পোর্টিং, ঢাকা সিটি ফুটবল ক্লাব, কে স্পোর্টস, টিএ্যান্ডটি ক্লাব, উত্তর বারিধারা ক্লাব, অগ্রণী ব্যাংক লি. এসসি, স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ, রেফারিজ কমিটি, ওয়ারী ক্লাব ও বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাব) ওই সংসদ সদস্যদের ফুল দিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করেন। উল্লেখ্য, মুর্শেদী এবারই প্রথম এমপি হলেন। নাবিল দুবার এবং সামশুল এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এমপি হয়েছেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আজ একটি সুন্দর দিন বাফুফের জন্য। কেননা বাফুফের এক্সিকিউটিভ কমিটির তিন সদস্য সংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। এটা আমাদের জন্য খুশির খবর। বিশেষ করে আজ আমার চেয়ে খুশি বোধ হয় আর কেউ হতে পারেনি। কারণ এরা তিনজনই হচ্ছেন ফুটবলের লোক। তিনজনই দক্ষ সংগঠক, কেউ ছিলেন দুর্দান্ত খেলোয়াড়ও। বাফুফের পক্ষ থেকে আমি তাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি। সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘আমি যতই ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ হই না কেন, আমার মূল পরিচয় ও শেকড় কিন্তু ফুটবলেই। ফুটবল না খেললে বাকি দুটোরই কোনটিই হয়তো হতে পারতাম না। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশটাকে স্বাধীন না করলে কোনটাই হতে পারতাম না। আমাদের ফুটবল এখন সঠিক পথেই হাঁটছে। সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে দেশের ফুটবল আরও এগোবে।’ সামশুল বলেন, ‘আমি ফুটবলার ছিলাম না। তবে সংগঠক হিসেবে ফুটবলের সঙ্গেই আছি। এমপি হয়েছি বলে ফুটবল ছেড়ে দেব, এমনটা ভাবার কারণ নেই। আমি সবাইকে বলে দিয়েছি, যেদিন আমার মৃত্যু হবে, সেদিন যেন ফুটবল স্টেডিয়ামপাড়ায় আমার জানাজা হয়। ঢাকায় ফুটবলের জনপ্রিয়তা না থাকলেও ঢাকার বাইরে কিন্তু এই খেলাটি অসম্ভব জনপ্রিয়। আমি আশা করি নতুন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ফুটবলের দিকে সুনজর দেবেন। আমাদের নারী ফুটবল অনেক এগিয়ে গেছে। পুরুষ ফুটবলও ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশেই ফুটবলকে ছড়িয়ে দিতে হবে। শুধু ঢাকা মহানগরীতে খেলা চালালে আর বাফুফে ভবনে বসে থাকলে হবে না। জেলা ফুটবলকে উপজেলা পর্যায়ে নিতে না পারলে ফুটবলের উন্নতি হবে না। এদিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। আগে ফুটবলই ছিল দেশের এক নম্বর খেলা। এখন তার স্থান নিয়েছে ক্রিকেট। সেটা কিভাবে? ক্রিকেটের লোকজনই ষড়যন্ত্র করে আজ ফুটবলকে ধ্বংস করে দেয়ার চেষ্টা করছে। এটাকে রুখতে হবে। ফুটবলকে রক্ষা করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ নাবিল বলেন, ‘আজ সংসদ সদস্য হিসেবে আমাকে সংবর্ধিত করা হয়েছে। এই রুমে বসে আছি সহ-সভাপতি হিসেবে, আবাহনীর একজন কর্মকর্তা হিসেবে। এখানে আমার পরিচয় সংসদ সদস্য নয়। বিল্ডিংয়ের বাইরে যখন যাচ্ছি, তখন অন্য দায়িত্ব এসে যাচ্ছে। সংসদ সদস্য হওয়ার কারণে বাড়তি দায়িত্ব থাকে সার্বিক ক্রীড়াঙ্গনের জন্য; সেটা ফুটবল, হকি, এ্যাথলেটিক্স কিংবা ক্রিকেট হোক না কেন। যেহেতু আমি ব্যক্তিগতভাবে ফুটবলের সংগঠক, ক্লাব লেভেলে আমি সবকিছুর সঙ্গে জড়িত, আমার সবসময় চেষ্টা থাকবে যেন বাংলাদেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে পারি সামনের দিকে। জাতীয় টিমস কমিটির প্রধান হিসেবেও আছি। গত ছয় বছর ফল ভাল মন্দ মিলিয়ে, তবে শেষ এক বছর আমার মতে আমাদের ফল ধীরে ধীরে উর্ধগতির দিকে যাচ্ছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের ফুটবলের জন্য ভাল কিছু সামনে আছে। আমাদের ফেডারেশনের দায়িত্ব এখন বাংলাদেশের ফুটবলকে যে পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে, তা সামনের দিকে আরও এগিয়ে নেয়া। ফুটবল বা যেকোন খেলাতে সুদিন-দুর্দিন থাকে, যেকোন খেলাতেই চড়াই-উতরাই থাকে, জীবনেও থাকে যেমন। সবকিছু মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হয়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের ফুটবল এখন যেভাবে আছে, সামনে আরও এগিয়ে যাবে। আশা করি আমার সহকর্মীসহ সবাই একযোগে কাজ করব। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব জায়গায় উন্নয়ন হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমাদের ফুটবলেরও আরও উন্নতি হবে।’
×