ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

...তবু শান্তি, তবু আনন্দ তবু অনন্ত জাগে-স্বাগত ২০১৯

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১ জানুয়ারি ২০১৯

...তবু শান্তি, তবু আনন্দ তবু অনন্ত জাগে-স্বাগত ২০১৯

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ অনাদিকাল থেকে সৌরজগতের নিখুঁত নিয়মে প্রতিদিন সূর্য উঠে, আজও উঠেছে। শীতের কুয়াশা সরিয়ে উঁকি দিয়েছে উজ্জ্বল রোদ। আশা জাগানিয়া সূর্যকিরণ দ্যুতি ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রত্যেকের প্রাণে। অশুভ শক্তির মিথ্যা বোধ, প্রজন্মের নষ্ট হয়ে যাওয়া মুখগুলোর ‘আস্ফালন’ আর সহিংস রাজনীতির অশুচি কাটিয়ে অস্তাচলে গেল যে সূর্যটি, আজ পূর্ব দিগন্তে শাশ্বত সেই সূর্যেরই উদয়ন ঘটেছে নতুন সৌন্দর্যের আবাহন ঘটিয়ে। ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলে নবোদয় ঘটেছে এক নতুন প্রজন্মের; যে প্রজন্মের কাছে মায়ের মতো পবিত্র তার দেশ, সূর্যের মতো সত্য তার মুক্তিযুদ্ধ আর উন্নয়নের জ্যোতির মতোই দ্যুতি ছড়ানো তার ভবিষ্যত। তাই একাত্তরের মতোই নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির অবিস্মরণীয় ভূমিধস বিজয়, আর বিজয়ের মাসে স্বাধীনতাবিরোধী অশুভ শক্তিকে শোচনীয় কায়দায় পরাজিত করেই বিদায় নিল ঘটনাবহুল ২০১৮ সাল। সরব ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে মহাজোটের মহাবিজয়ের উৎসবকে ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় করে রেখে বিদায় নিয়েছে ঘটনাবহুল ’১৮ সাল। বিদায়ী বছরের অবিস্মরণীয় ঘটনা হচ্ছে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন। আওয়ামী লীগের এবারের সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের স্লোগানের প্রতি অবিস্মরণীয় রায় দিয়েছে দেশের জনগণ। তরুণ প্রজন্মের গণজোয়ার ও দীপ্ত শপথের ব্যালট বিপ্লবে উড়ে গেছে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র। দেশের কোথাও কোন আসনে একাত্তরের গণহত্যাকারী ঘাতক চক্রের পতাকাবাহী সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতের কাউকে জিততে দেয়নি দেশের মানুষ। বরং জামায়াতকে বাজেয়াপ্ত করে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে বুঝিয়ে দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে তাদের ষড়যন্ত্রের দিন শেষ। তমসা কেটে পূর্ব দিগন্তে আবহমান সূর্যের নতুন যাত্রা শুরু হলো। ‘সময় আর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না’ এই সত্যকে বির্মূত করে নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয়। স্বপ্ন আর দিনবদলের অপরিমেয় প্রত্যাশার আলোয় উদ্ভাসিত শুভ নববর্ষ। মহাকালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেল ২০১৮। শুরু হলো ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ। সুপ্রভাত বাংলাদেশ, স্বাগত ২০১৯। হ্যাপি নিউইয়ার ’১৯। অভিবাদন নতুন সৌরবর্ষ। সেই একই সূর্য, একইভাবে উঠছে পূর্বাকাশ আলো করে। কিন্তু তার উদয় ভিন্নতর। আজকের দিনটিও আলাদা। কারণ একটি নতুন বর্ষপরিক্রমা শুরু হলো আজ মঙ্গলবার থেকে। সোনালি স্বপ্নের হাতছানি নিয়ে উদিত হলো নতুন বছরের নতুন সূর্য। ভরা পৌষে কুয়াশার হিমেল চাদর ছিন্ন করে উদ্ভাসিত হলো সোনালি আলোর সকাল। কালপরিক্রমায় দ্বারোদঘাটন হলো প্রকৃতির নতুন নিয়মে নতুন বছর ২০১৯। চেতনায় জাগ্রত আবহমান সেই মাঙ্গলিক বোধ; অতীতের জীর্ণতা অতিক্রান্ত দিনমাসপঞ্জির হিসাব থাক বিস্মৃতির কালগর্ভে, প্রত্যাশায় বুক বাধি নতুন দিনের সূর্যোলোকে। উদ্ভাসন হোক সজীব-সবুজ-নতুনতর সেই দিনের, যা মুছে দেবে অপ্রাপ্তির বেদনা, জাগাবে নতুন প্রত্যয়ে নতুন সম্ভাবনার পথে এগোনোর প্রেরণা। গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা অনুযায়ী ইংরেজী নববর্ষের প্রথম দিন আজ। আজ ২০১৯ সালের প্রথম দিন। আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে/ তবু শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের এ কথার মতোই দুঃখ, কষ্ট সবকিছু কাটিয়ে নতুন জীবনের দিকে যাত্রার প্রেরণা নেবে মানুষ। নতুন বছরটি যেন প্রতিটি মানুষের মন থেকে সকল গ্লানি, অনিশ্চয়তা, হিংসা, লোভ ও পাপ দূর করে। রাজনৈতিক হানাহানি কিংবা জঙ্গী-সন্ত্রাসমুক্ত হয়ে আমাদের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত প্রিয় স্বদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে পারে। গত বছরের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব খুঁজতে খুঁজতে নতুন বছরকে সামনে রেখে আবর্তিত হবে নতুন নতুন স্বপ্নের। বাংলাদেশে ইংরেজী নববর্ষ পালনের ধরন বাংলা নববর্ষ পালনের মতো ব্যাপক না হলেও এ উৎসবের আন্তর্জাতিকতার ছোঁয়া থেকে বাংলাদেশের মানুষও বিচ্ছিন্ন নয়। বিশ্বের বয়স আরও এক বছর বাড়ল। এক বছরের ‘আনন্দ-বেদনা, আশা-নৈরাশ্য আর সাফল্য-ব্যর্থতার পটভূমির ওপর আমাদের ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই প্রিয় বাংলাদেশ নতুন বছরে পর্বতদৃঢ় একতায় সর্ব বিপর্যয়-দুঃসময় জয় করবে অজেয়-অমিত শক্তি নিয়ে’- এ সঙ্কল্পের সোনালি দিন আজ। আলোড়ন আর তোলপাড় করা ঘটনাবহুল ’১৮-এর অনেক ঘটনার রেশ নিয়েই মানুষ এগিয়ে যাবে। ভাগ্যাকাশে আনন্দ-বেদনা-প্রত্যাশা আর দুর্যোগের ঘনঘটা নিয়েই বাঙালীর বছর ফুরোল, সূচনা হলো আরও একটি বর্ষযাত্রা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিম-লে বহু ঘটনার সাক্ষী হয়ে মহাকালের অতল গর্ভে সোমবার সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে চলে গেছে বিগত বছর ’১৮। আবহমান সূর্য একটি পুরনো বছরকে কালস্রোতের উর্মিমালায় বিলীন করে আবার শুরু করল যাত্রা। স্বপ্ন আর দিনবদলের অপরিমেয় প্রত্যাশার রক্তিম আলোয় উদ্ভাসিত ইংরেজী নতুন বছর শুরু হলো। লাখো প্রত্যাশার ঝাঁপি খুলে এবং সরকারের কাছে মানুষের অনেক প্রত্যাশায় আজ ভোরে কুয়াশায় ঢাকা পূর্বাকাশে উদয় হয়েছে নতুন বছরের লালসূর্য। জাতির অনেক আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ হবার বছর এটি। শুরু হলো অগ্রগমনের বছর। তাই নতুন বছরকে স্বাগতম সুখ-সমৃদ্ধি, উন্নয়ন-অগ্রগতি আর জঙ্গী-সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতামুক্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশায়। খ্রিস্টীয় নববর্ষের প্রথম দিন আজ। প্রাচীন সূর্য সোমবার যে দিবসকে কালস্রোতে বিলীন করে পশ্চিমে অস্ত গেল, তা আজ ফেলে আসা দিন। থার্টিফার্স্টে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ পরমানন্দে ২০১৯ সালকে বরণ করেছে। আজ নতুন দিনের নতুন সূর্যালোকে স্নান করে সিক্ত হবে জাতিবর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। সব কালিমা ধুয়ে-মুছে নতুন কেতন ওড়াতে ওড়াতে এগিয়ে যাবে সময়, সভ্যতা, হিংসা-বিদ্বেষ-হানাহানিমুক্ত হবে রাজনীতি, অর্থনীতি আর সংস্কৃতি। অনাবিল স্বপ্ন আর অফুরন্ত প্রাণোন্মাদনা নিয়ে নতুন সূর্যের আলোয় অগ্রসর হবে মানুষ। বিগত সময়ের সব ভুল শুধরে নেবার সময় এসেছে আজ। স্মৃতির অতলে হারিয়ে যাবার পথে ২০১৮ সালটি নতুন করে মিথ্যার কুহেলিকা ভেদ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঠিক ধারায় এবং পুনর্জাগরণের দ্বারোদ্ঘাটন রচনা করে দিয়ে গেছে। সমগ্র জাতি জঙ্গীবাদী ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে এক মহাসড়কে। সূচিত হয়েছে তার যূথবদ্ধ যাত্রা। বাংলার প্রতিটি প্রান্তরে আজ অভীন্ন আওয়াজ ‘স্বাধীন বাংলায়, স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গী-সন্ত্রাসী আর রাজাকারদের ঠাঁই নাই।’ এ প্রচ- শপথ পূরণের প্রত্যাশা নিয়েই যাত্রা শুরু হলো নতুন একটি বছরের। গতরাত ১২টার পর পরই সারাবিশ্বে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়েছে নানা আনুষ্ঠানিকতায়। বর্ষবরণের আনন্দোৎসব করেছে সর্বস্তরের মানুষ। হিসাবের খাতায় ব্যর্থতার গ্লানি মুছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নতুন বছরে শান্তিকামী মানুষের প্রার্থনা ছিল- আর কোন সহিংসতা নয়, কোন হত্যা-খুন কিংবা হানাহানির রাজনীতি নয়। ২০১৯ হবে শান্তির বীজ বপনের সাল। অস্ত্র বা হানাহানির মহড়া হবে না, থেমে যাবে সব যুদ্ধ-সন্ত্রাস। সবার প্রত্যাশা অনুযায়ী ভূমিধস বিজয় নিয়ে টানা হ্যাটট্রিকে ক্ষমতায় আসতে যাওয়া আওয়ামী লীগের সরকার নতুন বছরেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত একটি সুখী ও সমৃদ্ধিশালী উন্নত বাংলাদেশ উপহার দেবে জাতিকে। তবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য এবার নতুন বছরটি এসেছে ভিন্ন আবহে। সর্বত্র স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি, জঙ্গী ও তাদের দোসরদের পরাজয়ের খবর। দেশের জনগণ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-নাশকতানির্ভর রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপি-জামায়াত জোটকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ প্রত্যাখ্যান অতীতের নির্বাচনগুলো থেকেও ভয়াবহ। তিন শ’ আসনের মধ্যে মাত্র সাতটি আসন পেয়েছে বিএনপি-জামায়াত জোটের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ভোল পাল্টে জামায়াত প্রায় ২৫ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়লেও প্রতিটি আসনে জামানত বাজেয়াফত করে বাঙালী তাদের প্রতি আবারও ঘৃণা ও ধিক্কার জানিয়েছে। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং উন্নয়ন-প্রগতির প্রতীক নৌকাকে মহাবিজয়ী করে পুনরায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ রায় দিয়েছে। সর্বত্রই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়জয়কার। দেশের মানুষ যে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-নাশকতার রাজনীতি পছন্দ করে না বরং উন্নয়ন-অগ্রগতির পক্ষেই রয়েছে; তা আবারও ব্যালটের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জানান দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত জোটকে। ৩০০শ’ আসনের মধ্যে ২৮৮ আসনেই বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। ভূমিধস বিজয় নিয়েই দেশের ইতিহাসে রেকর্ডসংখ্যক চতুর্থবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। তাই দেশের মানুষ সম্পূর্ণ স্বস্তি, শান্তি ও মহাবিজয়ের আনন্দ নিয়েই নতুন বছরকে বরণ করে নিচ্ছে। আর জনগণের অকুণ্ঠ ভালবাসায় ¯œাত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চতুর্থবারের ক্ষমতার শুরুতেই চলমান উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কের যাত্রাকে আরও ত্বরাম্বিত ও বেগবান করার শপথ নিয়েই দেশ সেবার কাজে মনোযোগী হবে বছরের শুরু থেকেই। বিদায়ী বছরেও রাজনীতিতে চালকের আসনে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাত্র তিন মাস আগেও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ছিল শঙ্কা, অনিশ্চয়তা। ঠিক তখনই কোন ধরনের চাপ ছাড়াই সব দলের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে এই প্রথম রেকর্ডসংখ্যক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সফল হন বঙ্গবন্ধুর এই কন্যা। এটি বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসকে তার আপন কক্ষপথে ফিরিয়ে আনল। সব ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বেড়াজাল ছিন্ন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের দক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনায় আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে পুনরায় পরাজিত করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিজয়ের কেতন ওড়াতেও সক্ষম হয়েছেন তিনি। দুর্নীতি-সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের দেশের কালো তকমা মুছে ফেলে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জঙ্গীবিরোধী ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি শুধু দেশই নয়, সারাবিশ্বও প্রশংসায় পঞ্চমুখ। শুধু মানবতার কারণে প্রায় সাত লক্ষাধিক অসহায়-বিপন্ন মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় এবং তাদের বাসস্থান ও মুখে অন্ন তুলে দিয়ে সারাবিশ্বেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মানবতার মা’ হিসেবে আন্তর্জাতিক উপাধি পেয়েছেন। তবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, জঙ্গীবাদ দমন, সংঘাত-সহিংস রাজনীতির বদলে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত, বেকারত্ব দূরীকরণ, বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতাবিরোধী অন্ধকারের শক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিরোধ, অর্থনীতির আরও গতিসঞ্চার, সংসদকে কার্যকর করে নতুন বছরে একটি শান্তিময়-সমৃদ্ধিশালী দেশ উপহার দিতে ২০১৯ সাল সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েই সামনে এসেছে। দলের মধ্যে সৃষ্ট অনৈক্য, বিভেদ ও দ্বন্দ্ব দ্রুত মিটিয়ে দলের সকল সাংগঠনিক শক্তিকে ইস্পাতকঠিন ঐক্যের বাধনে বাধাও নতুন বছরে বর্তমান সরকারের আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিদায়ী বছর দেশের অনেক ইতিহাসই পাল্টে দিয়েছে। ’৭৫ পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির এমন পুনর্জাগরণ এবং সত্যকে যে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা যায় না, তাও প্রতিষ্ঠিত করে দিয়ে গেছে বিদায়ী এ বছরটি। আর তাই শত প্রতিকূলতা ও সহিংসতা মোকাবেলা করে দেশের মানুষ সাহসের ওপর ভর করে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার মিছিলে শামিল হয়েছে, ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি-জামায়াতের গণতন্ত্রবিরোধী সহিংস রাজনীতিকে। আর এখন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত সত্য ইতিহাস যাতে আগামী প্রজন্ম যুগ যুগ ধরে লালন-পালন করতে পারে, নতুন বছরে সেই পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। বিপুল প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ নিয়েই আজ থেকে যাত্রা শুরু করল আরও একটি নতুন বছর। নতুন খ্রিস্টাব্দের সূচনামুহূর্ত নিয়ে উচ্ছ্বাস-উল্লাস বাঙালী সংস্কৃতির নিজস্ব কোন অঙ্গ না হলেও পাশ্চাত্য প্রভাবে শহরাঞ্চলে এর ব্যাপ্তি ঘটেই চলেছে; বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর যারা অংশ তারা জীবিকার কঠোর সংগ্রামে, সমস্যার ভারে এতই ক্লিষ্ট-বিড়ম্বিত যে, এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথা ঘামানোর কোন অবকাশ নেই তাদের জীবনে। তারপরও কালপরিক্রমায় নববর্ষ আসে। নতুন আশায়, স্বপ্নে উদ্দীপিত হয় মানুষ। বছরটি সাফল্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে, মুছে যাবে ব্যর্থতার গ্লানি, এ রকম প্রত্যাশায় মানুষ উজ্জীবিত হয়। বৈশ্বিক পটভূমিতে খ্রিস্টীয় নববর্ষের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য উপেক্ষা করার মতো নয় মোটেও। সবার প্রত্যাশা, নতুন বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার একটি সুখী ও সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ উপহার দেবে জাতিকে। ইংরেজী নববর্ষের শুভলগ্নে দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গোধূলিবেলায় রক্তিম সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্য দিয়ে হারিয়ে গেছে ঘটনাবহুল ’১৮। উদিত হয়েছে নতুন বছরের নতুন সূর্য। প্রত্যাশা কেবল মানুষের নিরাপত্তা, শান্তি, স্বস্তি, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণ, শক্তহাতে জঙ্গী-সন্ত্রাসী দমন এবং এবং সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির দেশ গড়ার। চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসার অপেক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের কাছে এ প্রত্যাশা রেখেই আজ মঙ্গলবার থেকে যাত্রা শুরু হলো নতুন বছরের। স্বাগত ২০১৯!
×