ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

শান্তি আলোচনা শুরু

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

শান্তি আলোচনা শুরু

জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার সুইডেনে শুরু হয়েছে ইয়েমেন শান্তি সম্মেলন। এতে চার বছরের গৃহযুদ্ধ অবসানের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে। আলোচনায় যোগ দিতে মঙ্গলবারই ইয়েমেনের সরকার ও ইরান সমর্থিত সশন্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি বিদ্রোহীরা সেখানে পৌঁছেছে। বিবিসি ও গার্ডিয়ান। ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী দখলে নেয় । পরে সৌদির রাজধানী রিয়াদে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন হাদি। হুতিদের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ২০১৫ সালের মার্চে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ অভিযান শুরু করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি জোটের অভিযানে এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। দেশটিতে ব্যাপক খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। অনাহারক্লিষ্ট শিশুদের কঙ্কালসার ছবি প্রায়ই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। ইয়েমেনী সরকার ও হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে কাজ করবে জাতিসংঘের বিশেষ দল। ২০১৬ সালে তাদের মধ্যে প্রথম আলোচনাটি হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। জাতিসংঘ আশা করছে, এই আলোচনায় এমন একটি কাঠামো বেরিয়ে আসবে যেখানে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সমাধান খোঁজা সহজ হবে। আশা করা হচ্ছে, আলোচনা থেকে বন্দরনগরী হুদায়দায় কয়েকমাস ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধ হবে। এক সপ্তাহ ধরে এই আলোচনা চলবে। এর আগে হুতিদের সঙ্গে বন্দী বিনিময় চুক্তিতে রাজি হয় দেশটির সরকার। বিদ্রোহীদের বন্দী বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের আল মুরতাজা জানান, জাতিসংঘের ইয়েমেনী দূত মার্টিন গ্রিফিন আমাদের জানিয়েছেন, সৌদি জোট ও ইয়েমেন সরকার বন্দী বিনিময়ে রাজি হয়েছেন। তিনি বলেন, ইয়েমেনের মানবেতর পরিস্থিতি মোকাবিলায় এটাই হবে প্রথম ধাপ। তিনি আশা করেন কোন সমস্যা ছাড়াই এই চুক্তি বাস্তবায়িত হবে। ২০১৪ সাল থেকে হুতিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইয়েমেনের রাজধানী সানায় সফর করছেন গ্রিফিন। তিনি জাতিসংঘের শান্তি প্রস্তাব বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এর আগে সোমবার ৫০ হুতি বিদ্রোহীর চিকিৎসার জন্য ওমান যাওয়ার অনুমতি দেয় আরব জোট। ধারণা করা হচ্ছে, দুই পক্ষের আলোচনায় ইয়েমেনে মানবেতর পরিস্থিতির অবসান ঘটবে। ইয়েমেনে মানবিক সহায়তার জন্য ৪শ’ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থার মানবাধিকার ও জরুরী ত্রাণ বিষয়ক সমন্বয়ক মার্ক লোকক বলেন, ইয়েমেন ভয়াবহ দুর্যোগের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ইয়েমেনের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। তবে এখনও দেরি হয়ে যায়নি। তিনি বলেন, আমি ইয়েমেন সফরের সময় সানার বাইরে বাস করা পরিবারের সঙ্গে কথা বলি। তারা জানান, কতটা দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। শনিবার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে সফরে যান লোকক। সেখানে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের সঙ্গে দেখা করেন। আলোচনা করেন হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে।
×