ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৭ দিনে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়

কর মেলায় সকল রেকর্ড ভঙ্গ

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২০ নভেম্বর ২০১৮

 কর মেলায় সকল রেকর্ড ভঙ্গ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এ যাবতকালের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে আয়কর মেলা থেকে সাতদিনে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এছাড়া এবার মেলায় সারাদেশে রির্টান দাখিল করেছে ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৫৭৩ জন। ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন নতুন ইটিআইএন নিয়েছে। এছাড়া সেবা নিয়েছেন ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ২৬৬ জন নাগরিক। আয়কর মেলায় কর আদায়র প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৬ শতাংশ। এর আগে গত করবর্ষে আয়কর মেলা থেকে ২ হাজার ২শ’ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল। আর মেলার শেষ দিনে সারাদেশে ২ হাজার ৪৬৮ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়। এ বছর করদাতাদের অভূতপূর্ব সাড়া এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী করসেবা প্রদানের মাধ্যমে শেষ হল সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা-২০১৮। আয়কর মেলার শেষদিন ঢাকার বেইলী রোডস্থ অফিসার্স ক্লাবসহ সারাদেশে ৪৫টি স্পটে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলার শেষদিনও ছিল করদাতা-সেবাগ্রহিতাদের উপচেপড়া ভিড়। মেলার শেষদিন করদাতা থাকা পর্যন্ত মেলায় সেবা দেয়া হয়। তবে আয়কর মেলা শেষ হলেও ২২ থেকে ৩০ নবেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত সকল কর অফিসে মেলার পরিবেশে মেলার মতই সকল কর সেবা প্রদান করা হবে এবং করদাতারা রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার শেষ দিনে মেলা প্রাঙ্গণে এখন করদাতাদের উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দিচ্ছেন করদাতারা। নতুন নিবন্ধন নেয়ার (ই-টিআইএন) স্টলগুলোতেও ভিড় রয়েছে। মেলা থেকে কর সংক্রান্ত সেবা নিতে শেষ সময়ের মতো ছুটে আসেন সেবা গ্রহীতারা। কেন্দ্রীয়ভাবে বসা রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবের খোলা প্রাঙ্গণে সোমবার দিনভর ছিল এমন চিত্র। সন্ধ্যা পাঁচটায় পর্দা নামার কথা থাকলেও মেলা প্রাঙ্গণে যতক্ষণ করদাতারা থাকবে ততক্ষণই সেবা দেয়া সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর কর্তৃপক্ষ। মেলায় এবার বাড়তি সংযোজন হিসেবে ছিল অডিও-ভিজ্যুয়াল পদ্ধতিতে কর শিক্ষণ। এর মাধ্যমে করদাতারা আধুনিক পদ্ধতিতে কর সংক্রান্ত সব ধরনের সেবা জানতে পারছেন। এছাড়া সাতদিনে সাতটি স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় শিক্ষণ ফোরামে। অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের কর বিষয়ে নানা তথ্য জানানো হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আর বিজয়ী ১০ শিক্ষার্থীকে প্রতিদিনই পুরস্কৃত করা হয়। মেলায় নতুন কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নেয়াসহ করসংক্রান্ত সব ধরনের সেবা মিলছে। মুক্তিযোদ্ধা, প্রবীণ ও নারীদের জন্য আলাদা বুথসহ বাড়তি সুবিধা হিসেবে যাতায়াতের জন্য আছে শাটল বাসের ব্যবস্থা। বাসগুলো চলছে রাজধানীর টিএসসি, রামপুরা, বেইলি রোড, মতিঝিল, মিরপুর ও উত্তরা রোডে। এবারের মেলায় বয়স্ক নাগরিকদের চেয়ে তরুণদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সমান তালে কর দিচ্ছেন। তাদের অনেকেই স্বপরিবারে এসেছেন। উত্তম সিংহ নামে এক তরুণ বলেন, প্রথমবারের মতো কর দিয়ে বেশ ভাল লাগছে। মাত্র দুই মিনিটে রিটার্ন জমা দিয়েছি। এখানে সব কিছুই গোছালো। মেলায় দেখা মেলে মামার কোলে ফুটফুটে এক শিশু, পাশেই দাঁড়ানো আরেক শিশু। মামার সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা ৫ বছরের শিশু রামির বলেন, মা ও মামার সঙ্গে মেলায় এসেছি। মা বলেছেন এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে। মা আসলে আমরা চিপস কিনব। আরিফ নামের একজন এসেছেন রিটার্ন জমা দিতে। তিনি বলেন, মেলায় যে পরিবেশ পাওয়া যায়, কর অফিসগুলোতে সে রকম আচরণ পাওয়া যায় না। এখানে কর দেয়া সহজ। এই নিয়ে নবমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় করমেলা।
×