ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবিতে স্মারক বক্তৃতা

‘বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীন ছিলেন একে অপরের পরিপূরক’

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৯ নভেম্বর ২০১৮

‘বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীন ছিলেন একে অপরের পরিপূরক’

বিশ^বিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের আন্দোলন সংগ্রাম বিবেচনা করলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পরে আসে তার ছায়াসঙ্গী তাজউদ্দীন আহমদের কথা। তারা ছিলেন একে অপরের পরিপূরক। তাজউদ্দীন আহমদের মতো সহিষ্ণু ও আবেগ নিয়ন্ত্রিত এমন নেতা নেই। বঙ্গবন্ধু জাতির জনক, কিন্তু তার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। বর্তমান তাকে উপেক্ষা করতে পারে কিন্তু ভবিষ্যতের পক্ষে তাকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘তাজউদ্দীন আহমদ : এক তরুণের রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন এসব কথা বলেন। তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়্যারম্যান অধ্যাপক কামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে ও সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ‘তাজউদ্দীন আহমদ : এক তরুণের রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন তাজউদ্দীন আহমদের বড় মেয়ে শারমিন আহমদ। এ সময় বিএসএস সম্মান শ্রেণীতে সর্বোচ্চ ফল করায় শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের আফতাব নামে এক শিক্ষার্থীকে শান্তি স্বর্ণপদক ও নওশীন আকন্দ নামে এক শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়। এছাড়াও এক তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি রচনা প্রতিযোগিতায় পাঁচ বিজয়ীকে পুরস্কার দেয়া হয়। স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন তাজউদ্দীন আহমদের দেশপ্রেম ও ভাবনা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও নেতৃত্বের যোগ্যতা, তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ ইতিহাসের গতিপথকে সচেতনভাবে অনুসরণ করে ইতিহাসের সঙ্গে গেছেন। যিনি ইতিহাসের সঙ্গে যান তাকে কখনও বর্জন করা যায় না। আমরা তাকে বর্জনের চেষ্টা করতে পারি কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস লেখা যাবে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার প্রায় পঞ্চাশ বছর পর দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় তার সম্পর্কে আমাদের জানার পরিধি অনেক কম। অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস লিখতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই তাজউদ্দীন আহমদের নাম সামনে আসে। কেননা তার জন্মই হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাজনীতি করার জন্য। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, আর যে ব্যক্তিটি তাঁর প্রজ্ঞা, মেধা ও বুদ্ধি দিয়ে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিলেন তিনি হলেন তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি আজীবন তাঁর আদর্শে অটল ছিলেন। নীতির সঙ্গে কখনও আপোষ করেনি। তিনি সবসময় সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ভেবেছেন, নিজেও সাধারণ জীবন-যাপন করেছেন। ইতিহাসের এই মহানায়ক মৃত্যুর শেষদিন পর্যন্ত ছিলেন আপোষহীন রাজনীতির অনুরক্ত। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবন দর্শন থেকে শিক্ষালাভ করতে হবে। তাজউদ্দীন আহমদের জীবন দর্শনের প্রভাব শিক্ষার্থীদের জীবনে প্রতিফলিত হবে বলে উপাচার্য আশা প্রকাশ করেন। সিমিন হোসেন রিমি বলেন, পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা অসুন্দরকে সুন্দর করে তোলেন।
×